খবর৭১ঃ ফেনীর সোনাগাজীতে পরীক্ষাকেন্দ্রে মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে (১৮) আগুনে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় করা মামলায় প্রধান আসামি সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার ৭ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে সোনাগাজী উপজেলা আমলি আদালতের বিচারক মো. শরাফউদ্দীন শুনানি শেষে এ রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।
একইসঙ্গে আদালত এ মামলায় গ্রেফতার মাদরাসার ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক নূরুল আফসার উদ্দিন ও ছাত্র আরিফুল ইসলামকে ৫ দিন করে রিমান্ডে পাঠিয়েছে।
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা সোনাগাজী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন এদিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিরাজউদ্দৌলার ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাকে আদালতে হাজির করেন।
হত্যাচেষ্টার এ ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার ভাগ্নি উম্মে সুলতানা পপিকে আটক করা হয়েছে। পপি অগ্নিদগ্ধ নুসরাতের সহপাঠী। এছাড়া মামলার এজহারভুক্ত আসামি সোনাগাজী পৌরসভার তুলাতলি এলাকার আবুল বাশারের ছেলে জোবায়ের আহমেদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দুজনকেই গতকাল মঙ্গলবার রাতে আটক করা হয়। এ নিয়ে হত্যাচেষ্টার এ মামলায় ৯ জনকে গ্রেফতার করা হলো।
মাদ্রাসাছাত্রী অগ্নিদগ্ধের ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যারাই জড়িত থাকুক কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খোন্দকার গোলাম ফারুক।
এদিকে বুধবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন জানিয়েছেন, নুসরাতের শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত। উন্নতিও নেই, অবনতিও নেই।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) লাইফসাপোর্টে রেখেই প্রায় ২ ঘণ্টায় নুসরাতের অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন করে চিকিৎসকরা।
উল্লেখ্য, উল্লেখ্য, নুসরাত এবার সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা থেকে আলিম (এইচএসসি সমমান) পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। তিনি সোনাগাজীর উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের মাওলানা এ কে এম মুসা মানিকের মেয়ে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তৃতীয়।
গত শনিবার (৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মাদরাসা ভবনের ছাদে দুর্বৃত্তরা নুসরাতের গায়ে আগুন দেয়। পরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফেনী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে থেকে আনা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে।
পরিবারের অভিযোগ, মাদরাসার অধ্যক্ষ এস এম সিরাজউদ্দৌলা গত ২৭ মার্চ নুসরাত জাহানের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। নুসরাত বিষয়টি বাসায় জানালে তার মা সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। ওই মামলার প্রেক্ষিতে সোনাগাজী থানা পুলিশ অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাকে গ্রেফতার করে।
এরপর মামলা প্রত্যাহারের জন্য নুসরাতকে চাপ দেয় সিরাজউদ্দৌলার লোকজন। কিন্তু নুসরাত অপারগতা প্রকাশ করেন। এ অবস্থায় আলিম পরীক্ষা শুরুর দিন থেকে ভাই নোমান নুসরাতকে পরীক্ষার হলে বসিয়ে দিয়ে আসতেন। এরইমধ্যে গেল ৬ এপ্রিল দুর্বৃত্তদের আগুনে ঝলসে যায় নুসরাতের শরীর।
খবর৭১/ইঃ