তৃতীয় দিনের মতো সড়কে শিক্ষার্থীরা

0
301

খবর৭১ঃ বাসচাপায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরী নিহত হওয়ার ঘটনায় তৃতীয় দিনের মতো নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাজধানীর প্রগতি সরণি সড়কের নর্দায় মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

এতে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) ও আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (এআইইউবি) অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।

বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় তাদের হাতে জাতীয় পতাকা ছিল।

আবরার আহমেদ চৌধুরীর মৃত্যুর জন্য দায়ী বাসচালকের মৃত্যুদণ্ড এবং সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা।

ঢাকা মহানগর পুলিশের বাড্ডা জোনের এডিসি আহমেদ হুমায়ূন সাংবাদিকদের বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। যান চলাচলে কোনো সমস্যা হয়নি। আমরা কোনো বাধা দিইনি।

মঙ্গলবার সকালে সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাসচাপায় নিহত হন বিইউপির শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরী। তিনি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। ওই দুর্ঘটনার জেরে পরের দিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

বুধবার শিক্ষার্থীদের ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলামের সঙ্গে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন কার্যালয়ে গিয়ে বৈঠকে বসেন। এতে পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াও উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে বিইউপির প্রতিনিধি ফয়সাল এনায়েত বলেন, আবরার নিহত হওয়ার ঘটনার তদন্ত করে ৩০ দিনের মধ্যে অভিযোগপত্র দেয়া, সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ফুটওভার ব্রিজ, স্পিডব্রেকার নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে এক মাসের মধ্যে তার দৃশ্যমান অগ্রগতি এবং সুপ্রভাত পরিবহনকে আর কখনও রুট পারমিট না দেয়ার দাবি করেছেন। মেয়র তাদের দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন।

তিনি বলেন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে চলমান আন্দোলন এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে দাবি না মানলে ২৮ মার্চ থেকে সারা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আরও কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি দেয়া হবে বলে হুশিয়ারি দেন তারা।

তবে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ তখন বলেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

মঙ্গলবার আবরার আহমেদ চৌধুরী নিহত হওয়ার পরপরই রাজধানীর প্রগতি সরণিতে ১০ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষোভ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন ছিল বুধবার। এদিনও একই দাবিতে উত্তাল ছিল ঢাকা। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সকাল ১০টা থেকে কমপক্ষে ৬ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।

বিভিন্ন রুটে বন্ধ থাকে যান চলাচল। চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। শেষ পর্যন্ত ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামের কাছ থেকে দাবি পূরণের আশ্বাস পেয়ে বিকালে বিক্ষোভ-অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করেন শিক্ষার্থীরা।

দ্বিতীয় দিনের মতো শিক্ষার্থীরা সকালে রাস্তায় নেমে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এদিন প্রগতি সরণি ছাড়িয়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে পুরো রাজধানীতে।

শাহবাগ, ফার্মগেট, রামপুরা, উত্তরা, রায়সাহেববাজার, ধানমণ্ডি, সায়েন্সল্যাব, এলিফ্যান্ট রোডসহ কয়েকটি স্থানে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আওয়াজ তোলেন।

রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে এ বিক্ষোভে অংশ নেন। সব মিলিয়ে নিরাপদ সড়কের দাবিতে উত্তাল ছিল রাজধানী। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে এক রকম অচল হয়ে পড়ে ঢাকা।

পরিবহন সংকটে তীব্র ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে তাদের বিপাকে পড়তে হয়। ভোগান্তিতে পড়েন বিমানবন্দরের যাত্রীরাও। গাড়ি না পেয়ে পথচারীরা দীর্ঘপথ হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছান।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here