তিস্তার গতিপথ পরিবর্তনে হাজার কোটি টাকা ক্ষতির শঙ্কা

0
273

আসাদুল ইসলাম সবুজ, লালমনিরহাটঃ রংপুরের শঙ্করদহে তিস্তা নদীর গতিপথ পরিবর্তনে কাজ করা হচ্ছে। এর সাত কিলোমিটার উজানে শঙ্করদহে গতিপথ বদলে নতুন চ্যানেলে প্রবাহিত হচ্ছে তিস্তার মুল শ্রোতধারা। এর ফলে প্রায় ১২২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত তিস্তা দ্বিতীয় সড়ক সেতুসহ নদীর ডান-তীরে হাজার কোটি টাকার অবকাঠামো অর্থহীন হয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনায় তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত তিস্তা দ্বিতীয় সড়ক সেতু। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষায় রংপুর ও লালমনিরহাটসহ উত্তরের কোটি মানুষ। কিন্তু এখন হতাশা আর অনিশ্চয়তায় ঢাকা পড়েছে স্বপ্ন জাগানিয়া এই সেতুটি। এর সাত কিলোমিটার উজানে শঙ্করদহে গতিপথ বদলে নতুন চ্যানেলে প্রবাহিত হচ্ছে তিস্তার মুল শ্রোতধারা। এতে শত শত ঘর-বসতি, ফসলি জমি, স্কুল-কলেজসহ অনেক কিছুই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কিন্তু তার চেয়েও বড় ক্ষতি আর অনিশ্চয়তায় পড়েছে এই সেতুসহ ডান-তীরের শহর রক্ষা, বন্যা-নিয়ন্ত্রণ ও ভাঙন রোধে গড়া হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন অবকাঠামো। শঙ্করদহে নদী থেকে নির্বিচার বালু তোলাই এই বিপর্যয়ের কারণ।
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান মাহবুবুজ্জামান বলেন, ‘পানি চলাচল আমরা বন্ধ করতে না পারলে পুরাতন প্রাথমিক বিদ্যালয় ভেঙে যেতে পারে। আর এমনটি ঘটলে দ্বিতীয় তিস্তা সেতুটি তিস্তা নদী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ভেস্তে যাবে সরকারের সেতু নির্মানের ১২২ কোটি টাকা। তিনি আরও বলেন, রংপুর বিভাগের ভিন্ন জগত, আনন্দনগর, তাজহাট জমিদারবাড়ি, চিড়িয়াখানা, সুরভি উদ্যান, চিকলি পার্ক, ঘাঘট নদীর প্রয়াস সেনা পার্ক, পীরগঞ্জের আনন্দনগরসহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রগুলোকে পাশ কাটিয়ে দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতুতে হাজারো মানুষের পদচারণা আর হয়তো দেখা যাবে না।
জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, বাঁশের পাইলিং দিয়ে নতুন চ্যানেল বন্ধ করার চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড, এতে কিছুই লাভ হবে না। বরং ক্ষতিই বেশী হবে।
লালমনিরহাট জেলা চেস্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল হামিদ বাবু বলেন, উত্তরাঞ্চলের পিছিয়ে পড়া জেলা লালমনিরহাটের যোগাযোগ ব্যবস্থা তথা আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তিস্তা নদী উপর নবনির্মিত কাকিনা-মহিপুর সেতুটি খুলে দিয়েছে পিছিয়ে পড়া এ অঞ্চলের সম্ভাবনার নতুন দ্বার। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির সাথে সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষি, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ পুরো অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থা ও জীবনযাত্রার মানে বিশেষ ভাবে প্রভাব ফেলছে। সেখানে যদি নদীর গতিপথ পরিবর্তন করা হয় তাহলে
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী হারুন-অর-রশীদ বলেন, ‘আমরা কার্যক্রমের মধ্যেই আছি, যাতে নদী সেখানে শিফট হয়ে না যায় এবং আমরা ব্রীজটা রক্ষা করতে পারি।’ এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি এলজিইডির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী। অপর একজন নির্বাহী প্রকৌশলী জানিয়েছেন, ‘ভরা বর্ষায় ঢল নামছে, এই মহুূর্তে আমাদের চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার নেই।’
তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্প পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল আলম চৌধুরী জানান, সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া একক প্রচেষ্টায় তিস্তা নদীর প্রবাহ রোধ করা সম্ভব নয়। তাই এ ব্যাপারে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে বলে তিনি জানান।
খবর৭১/এস;

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here