খবর৭১: বাংলাদেশ থেকে ১৯ ক্যাটাগরিতে লোক নেবে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। আগামী তিন মাসের মধ্যে লোক পাঠানোর সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি।
তিনি বলছেন, ‘বাংলাদেশ থেকে কর্মী পাঠাতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আগামী তিন মাসের মধ্যে লোক পাঠানোর সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করবে।’
তিনি বলেন, ‘এ সময়ের মধ্যে ইউএইতে যেতে পারবেন বাংলাদেশীরা।’ এ সময় পর্যন্ত কোনো বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গে কাউকে লেনদেন না করতে পরামর্শ দেন মন্ত্রী।
সোমবার (২৩ এপ্রিল) রাজধানীর প্রবাসী কল্যাণ ভবনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
নুরুল ইসলাম বিএসসি আরও জানান, ইউএইতে শুধু সরকারিভাবে লোক যাবে। এক্ষেত্রে কোনো বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সির ভূমিকা থাকবে না।
যে ১৯টি শাখায় শ্রমিক পাঠানোর বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে সেগুলো হলো: হাউজমেড (গৃহশ্রমিক), প্রাইভেট সেইলর (ব্যক্তি মালিকানাধীন জাহাজের নাবিক), ওয়াচশ্যান অ্যান্ড সিকিউরিটি গার্ড (নিরাপত্তাকর্মী), হাউজ হোল্ড শেফার্ড (রাখাল), ফ্যামিলি চোফার (গাড়িচালক), পার্কিং ভ্যালে ওয়ার্কার্স (গাড়ি পার্কিংয়ের শ্রমিক), হাউজহোল্ড হর্স গ্লামার (ঘোড়া পালার সরিস), হাউজ ফ্যালকন কেয়ারটেকার অ্যান্ড ট্রেইনার (বাজপাখি পালক), ডমেসটিক লেবার (গৃহভৃত্য), হাউজ কিপার (গৃহ তত্ত্বাবধায়ক), প্রাইভেট কোচ, বেবি সিটার (শিশু পরিচর্যাকারী, হাউজহোল্ড ফার্মার (কৃষি শ্রমিক), গার্ডেনার (মালি), প্রাইভেট নার্স (ব্যক্তিগত সেবিকা, প্রাইভেট পিআরও (ব্যক্তিগত সহকারী), প্রাইভেট এগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ার (কৃষিবিদ), কুক (পাচক)।
পাঁচ বছর বন্ধ থাকার পর গত ১৮ এপ্রিল বাংলাদেশ ও ইউএই’র মধ্যে কর্মী পাঠানোর বিষয়ে সমঝোতা স্মারকটি সই হয়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব নমিতা হালদার বলেন, ‘আরব আমিরাতে বাংলাদেশী শ্রমিকদের মধ্যে অপরাধে জড়িয়ে এক হাজার শ্রমিক এখন বিভিন্ন কারাগারে আছে। বেশ কিছু শ্রমিকদের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের কারণেই বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারটি খুলতে দেরি হচ্ছে।’
যেসব বাংলাদেশী কারাগারে আছে তাদের ৫৬ জন খুনের মামলার আসামি এবং এদের ১৪ জন ফাঁসির আসামি বলেও জানান সচিব।
আমিরাতে শ্রমবাজার খোলার আলোচনায় সে দেশের কর্তৃপক্ষ বারবার এই বিষয়গুলো সামনে নিয়ে এসেছে বলেও জানান নমিতা হালদার।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে বাংলাদেশ থেকে আমিরাত চার লাখ ২০ হাজার কর্মী নেয়। ২০১২ সালে যায় দুই লাখ ১৫ হাজার কর্মী। কিন্তু তার পরের বছর থেকেই দেশটিতে বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানিতে ভাটা পড়ে। এর কারণ, ‘ওয়ার্ল্ড এক্সপো’র স্বাগতিক দেশ হতে চেয়েছিল তেলসমৃদ্ধ আরব আমিরাত। কিন্তু বাংলাদেশ ভোট দেয় রাশিয়ার পক্ষে। তাই বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়া বন্ধ করে দেয় ক্ষুব্ধ আমিরাত। এর পর ২০১৪ ও ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটি সফরে গিয়ে কর্মী নিতে অনুরোধ জানালে বরফ গলা শুরু হয়।
খবর৭১/এস: