তিন জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ৫

0
672

খবর৭১
এক রাতে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তিন জেলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ময়মনসিংহ এক, ফুলবাড়ীতে এক, টেকনাফে দুই ও হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে একজন রয়েছে। রবিবার রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত বন্দুকযুদ্ধের এ সব ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও বিজিবি জানায়, নিহতদের মধ্যে রয়েছে মাদককারবারী, ডাকাত ও ধর্ষণ মামলার অভিযুক্ত আসামি। প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর-

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : রবিবার রাতে ডিবি পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। নিহত মাদক ব্যবসায়ীর নাম জনি মিয়া (২৬)। তিনি শহরের পাটগুদাম এলাকার জয়নাল আবেদীনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা রয়েছে বলে পুলিশের দাবি।

পুলিশ জানায়, সদর উপজেলার চরপুলিয়ামারী এলাকায় কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী অবস্থান করছে-এমন খবরের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশের একটি টহল দল রবিবার রাত পৌনে ১টার সেখানে অভিযান চালায়। মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি ও ইট ছোঁড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও ফাঁকা গুলি চালায়। এক পর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। গোলাগুলির সময় দুই পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে ঘটনাস্থলে মাদক ব্যবসায়ী জনিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে হেরোইন ও একটি চাকু উদ্ধার করেছে। জনির বিরুদ্ধে মাদক, ছিনতাইসহ ১১টি মামলা রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি পলাতক ছিলেন।

ফুলবাড়ীয়া (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা: ময়মনসিংহে ফুলবাড়ীয়া উপজেলার গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি জহিরুল ইসলাম (২০) ময়মনসিংহ ডিবি পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। গত ৩ আগস্ট রাত ৮ দিকে উপজেলার পলাশতলী এলাকায় ১৬ বছরের এক কিশোরীকে জহিরুল, সাইদুল ও ফারুক তিনজন মিলে গণধর্ষণ করে। এসময় ভিকটিম অজ্ঞান হয়ে গেলে তাকে ফেলে রেখে ধর্ষকরা পালিয়ে যায়। পরে এ ঘটনায় ফুলবাড়ীয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা হয় । ময়মনসিংহ ডিবির অফিসার ইনচার্জ শাহ কামাল আকন্দ জানান, ধর্ষণ মামলার আসামিদের রাত আড়াইটার দিকে গ্রেফতার অভিযান চলাকালে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। পরে পুলিশও আত্মরক্ষার্থে শর্টগানের গুলি করলে আসামিরা পালিয়ে যায়। এ সময় জহিরুল নামে একজন আসামিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জহিরুলকে মৃত ঘোষণা করেন। সে উপজেলার কৈয়ারচালা গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে। ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

টেকনাফ (কক্সবাজার) সংবাদদাতা: কক্সবাজারের টেকনাফে বিজিবির সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ রোহিঙ্গাসহ দুই মাদক পাচারকারী নিহত হয়েছেন। এ সময় বিজিবির চার সদস্য আহত হন। নিহতরা হলেন, উপজেলার হোয়াইক্যং নয়াবাজারের জলিল আহমদের ছেলেদেলোয়ার হোছেন (৩০) এবং উখিয়া উপজেলার কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্প-২ এর রোহিঙ্গা নাগরিক মৃত হায়দার শরীফের ছেলে নুরুল ইসলাম (২৭)। সোমবার ভোররাতে উপজেলার হ্নীলা মৌলভী বাজার আড়াই নং স্লুইচ গেইট পয়েন্ট এলাকায় বন্দুকযুদ্ধের এ ঘটনা ঘটে।

বিজিবি জানায়, ভোররাতে উপজেলার হ্নীলা মৌলভী বাজার আড়াই নং স্লুইচ গেইট পয়েন্ট দিয়ে মাদকের চালান অনুপ্রবেশের সংবাদ পেয়ে টেকনাফ ২বিজিবি ব্যাটালিয়নের একটি বিশেষ টহল দল ঘটনাস্থলে অবস্থান নেয়। কিছুক্ষণ পর কয়েক ব্যক্তি সশস্ত্র অবস্থায় কয়েকটি পুটলা নিয়ে এগিয়ে আসতে থাকলে বিজিবি জওয়ানরা চ্যালেঞ্জ করায় অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা বিজিবিকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে এবং কিরিচ নিয়ে হামলা করে। এতে বিজিবির ৪জন সদস্য আহত হন। বিজিবিও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলিববর্ষণ করার পর হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এসময় ঘটনাস্থল তল্লাশি করে ২টি দেশীয় তৈরী বন্দুক, ৪ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, ২০হাজার পিস ইয়াবা ও ২টি কিরিচসহ গুলিবিদ্ধ দুইজনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা সদর হাসপাতালে নেয়। আহত বিজিবি সদস্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য গুলিবিদ্ধ দুইজনকে কক্সবাজার রেফার করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যায়। খবর পেয়ে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরীর পর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে টেকনাফ ২বিজিবি ব্যাটালিয়নের উপ অধিনায়ক মেজর মো. শরীফুল ইসলাম জোমাদ্দার জানান, এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে বন্দুকযুদ্ধে সোলেমান নামে এক ডাকাত নিহত হয়েছেন। রবিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার শানখলা ইউনিয়নের ডেওয়াতলী কালিনগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত সোলেমান মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া এলাকার বাসিন্দা। এ সময় ডাকাতদের হামলায় ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নাজমুল হক।

পুলিশ জানায়, রাত ৩টার দিকে একদল ডাকাত ডেওয়াতলী কালিনগর এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে ডাকাতরা তাদের ওপর আক্রমণ চালায়। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছুড়লে সোলেমান গুরুতর আহত হয়। এ সময় তার অন্য সঙ্গীরা পালিয়ে যায়। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। উক্ত ঘটনায় আহত ৪ পুলিশ সদস্যকে চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here