তালার জেঠুয়া বাজার ক্ষুদ্র সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে ২০ লক্ষ টাকা তছরুপ অভিযোগে

0
350

সেলিম হায়দার : তালা উপজেলার জেঠুয়া বাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে সমবায়ীদের আমানত কৃত প্রায় ২০ লক্ষ টাকা আতœসাতের অভিযোগ উঠেছে। জেলা সমবায় কর্মকর্তার তদন্তেও বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় সেসব টাকা আদায়ে ইতোমধ্যে তারা আদালতের আশ্রয় নিয়েছেন বলে অভিযোগে প্রকাশ।
অভিযোগে জানাগেছে,সাতক্ষীরার তালা উপজেলার জেঠুয়া বাজার এলাকার কতিপয় ব্যবসায়ীরা ২০০০ সালে সেখানকার ব্যবসায়ীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে প্রতিষ্ঠা করেন,জেঠুয়া বাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিঃ। এরপর ২০০২ সালের ২৬ জানুয়ারী তারা সমবায় অফিসের নিবন্ধিত হয়। যার রেজিঃ নং-০৫/সাতঃ। ২০০৬ সালের ২২ আগষ্ট সমিতির সংশোধিত রেজিঃ নং ০৩/সাতঃ। প্রথমত সমিতির কার্যক্রম ও তৎপরতায় এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়াও ফেলে। সেসময় তাদের সদস্য সংখ্যা ছিল ১ হাজার ২৩জন। সূত্র জানায় শুরু থেকে অদ্যবধি সমিতিটি সদস্যদের মধ্যে প্রতিটি ৫০ টাকা করে ১ লক্ষ শেয়ার বিক্রি করে। শুধু মাত্র যা থেকেই তাদের মূলধন দাড়ায় ৫০ লক্ষ টাকা।
ভূক্তভোগী সমবায়ীরা জানান,কতৃপক্ষ প্রথমত সঞ্চয় গ্রহণ ও শেয়ার বিক্রি থেকে সমবায়ীদের মধ্যে ঋণদান কর্মসূচী শুরু করলেও পরবর্তীতে অর্থাভাব দেখিয়ে ঋণদান কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় তবে গ্রহণ কার্যক্রম চালু রাখে। মূলত সেই সময় থেকেই ধরা পড়তে শুরু করে তাদের তঞ্চকতামূলক কার্যক্রম।
জেলা সমবায় কর্মকর্তা মোঃ হাসান মাহমুদের এক পরিদর্শন প্রতিবেদনে দেখা যায়,শুধুমাত্র শেয়ার বিক্রি থেকে বিভিন্ন সময়ে সমিতির বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে আতœসাৎ হয়েছে ১৯ লক্ষ ৮৪ হাজার ৬ শ’ ৩২ টাকা। এর মধ্যে সমিতির ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সভাপতি শেখ আমজাদ হোসেন’র নিকট ৬ হাজার টাকা,সাবেক সভাপতি গৌরপদ দত্ত’র নিকট ১ হাজার ৬ শ’টাকা,সদস্য শফিউল আলমের নিকট ১ হাজার টাকা,শফিকুল ইসলামের নিকট ২১ হাজার ৩ শ’ ৬০ টাকা,এছাড়া বর্তমান ব্যবস্থাপনা কমিটির তত্ত্বাবধানে নিয়োগকৃত হিসাব রক্ষক রনজিৎ চৌধুরী ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৭ শ’ ৪৮ টাকা আতœসাৎ করেছেন,যার মধ্যে ১ লক্ষ টাকা আদায় হয়েছে। আদায়কারী লক্ষণ দত্ত আতœসাৎ করেন,১৪ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা আতœসাৎ করেন তম্মধ্যে আদায় হয়েছে মাত্র ৫০ হাজার টাকা। প্রতিবেদনে ঋণের আসল বাবদ ২১ লাখ ১৫ হাজার ৬৮৫ টাকা ও মুনাফা বাবদ ২৪ হাজার ৫ শ’৮৬ টাকার কোন হিসাব মিলছেনা বলে জানানো হয়।
এদিকে সমিতির ৬১৮ জন সদস্যরা সমিতিতে তাদের লগ্নিকৃত টাকা আদায়ে খন্ড খন্ডভাবে আদালতের আশ্রয় নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যে ভূক্তভোগীদের ৯ জনের পক্ষে তালার জেঠুয়া গ্রামের মৃত ইনছাপ আলী মোড়লের ছেলে মোঃ মতিয়ার মোড়ল বাদী হয়ে সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ শরিফুল ইসলাম তুহিনকে প্রধান করে সাবেক সভাপতি গৌর পদ দত্ত,আদায়কারী লক্ষণ দত্ত ও ফটিক চৌধুরীকে আসামী করে বিজ্ঞ আমলি ৩ নং আদালত সাতক্ষীরায় একটি মামলা করেছেন। আরো ১০/১৫ টি খন্ড খন্ড মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন ভূক্তভোগীরা।
এব্যাপারে সমিতির অভিযুক্ত হিসাব রক্ষক রনজিৎ কুমার চৌধুরির নিকট জানতে চাইলে তিনি তার নিকট পাওনা টাকার কথা স্বীকার করে তা খুব শীঘ্রি দিয়ে দেয়ার কথা বলেন।
সাধারন সম্পাদক বলেন,সদস্যদের টাকা যথা সময়ে ফেরৎ দিতে তারা ব্যর্থ হয়েছেন। প্রক্রিয়া চলছে পর্যায়ক্রমে সদস্যদের টাকা ফেরৎ দেয়ার।
এব্যাপারে কর্মচারী লক্ষণ দত্ত’র নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন তিনি একজন কর্মচারী হিসেবে কাজ করেন কোন প্রকার টাকা আত্ননসাতের সুযোগ নেই।
মামলার বাদী মতিয়ার মোড়ল বলেন,তিনি মামলার মাধ্যমে তাদের পাওনা টাকা বুঝে পাওয়ার পাশপাশি সমিতিটিকে টিকিয়ে রাখার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
খবর ৭১/ ই:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here