তারেক রহমান এখন আর বাংলাদেশের নাগরিক নন: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

0
424

খবর৭১: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের বাংলাদেশী পাসপোর্ট প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, ‘তারেক রহমান এখন আর বাংলাদেশের নাগরিক নন। ২০১৪ সালের ২ জুন তারেক রহমান, তার স্ত্রী জোবাইদা রহমান এবং তাদের মেয়ে; তিনজনেরই পাসপোর্ট যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সমর্পণ করেছেন। সেখান থেকে ওই পাসপোর্ট লন্ডনে বাংলাদেশের দূতাবাসে পাঠানো হয়েছে। পাসপোর্টগুলো এখন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে সেখানে রক্ষিত আছে। আমাদের কাছে তথ্য প্রমাণ আছে।’

সোমবার (২৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় গুলশানে নিজ বাসায় শাহরিয়ার আলম সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির কেউ চাইলে আমরা তারেক রহমানের সেই পাসপোর্ট দেখাতে পারি। তিনি দেশে ফিরতে চান না বলেই এই পাসপোর্ট সারেন্ডার করেছেন। তিনি এখন আর বাংলাদেশের নাগরিক নন। দ্বৈত নাগরিকত্ব পেতে হলে তাকে পুনরায় বাংলাদেশী পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আইনি নোটিশ পাঠানোর মধ্য দিয়ে তারেক রহমান প্রমাণ করেছেন যে বাংলাদেশের আদালত ও বিচার ব্যবস্থার প্রতি তার আস্থা আছে। আইন অনুযায়ী তারেক রহমান এখন বাংলাদেশের নাগরিক নন, যেহেতু তিনি পাসপোর্ট রিনিউ এর জন্য আবেদন না করে ব্রিটিশ হোম অফিসে জমা দিয়েছেন। এখন দ্বৈত নাগরিকত্ব পেতে হলে তাকে পুনরায় বাংলাদেশি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে হবে।’

তারেক রহমানের পাঠানো আইনি নোটিশ আইনিভাবে মোকাবিলা করতে প্রস্তুত রয়েছেন জানিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৮ সালে তারেক রহমান পাসপোর্টের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেন। তখন মেয়াদ বাড়িয়ে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়। এরপর তিনি আর মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেননি। ২০১৪ সালের ২ জুন তিনি যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সপরিবারে পাসপোর্ট জমা দেন। সেখান থেকে তা বাংলাদেশের হাইকমিশনে আসে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপির কেউ দেখতে চাইলে আমরা ব্যবস্থা করব বা আইনগতভাবে কেউ চাইলে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হবে। লন্ডনে আমাদের বাংলাদেশ হাইকমিশনে গিয়ে দেখে আসবেন।’

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এখন তো তার (তারেক রহমান) কাছে বাংলাদেশের কোনও পরিচয়পত্র থাকল না। কেননা তার কাছে স্মার্ট পরিচয়পত্র নেই। ২০০৮ সালে এটি ছিল না। একমাত্র পরিচয়পত্র ছিল পাসপোর্ট। সেটিও তিনি জমা দিয়েছেন।’

এর আগে গত শনিবার লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন। তিনি পাসপোর্ট জমা দিয়েছেন।’

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির পক্ষ থেকে বিষয়টিকে ‘উড়ো ও অবান্তর’ দাবি করা হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার সকালে প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমসহ তিনজনকে আইনি নোটিশ দেন তারেক রহমানের আইনজীবী ও বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।

নোটিশ পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে বক্তব্যের প্রমাণ অথবা বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে নোটিশে। ওই নোটিশে প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য মিথ্যা, বানোয়াট বলে উল্লেখ করেন।

একইদিন বেলা সাড়ে ১১টায় নয়াপল্টনে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেন, ‘আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, তারেক রহমান বাংলাদেশী পাসপোর্ট জমা দেননি। তার কাছে পাসপোর্ট আছে। আর যদি সে পাসপোর্ট জমা দিয়েই থাকেন তবে লন্ডন দূতাবাস সেটি প্রদর্শন করুক। কারণ, লন্ডন দূতাবাস এখনও সরকারের অধীন।’

এদিকে সোমবার বিকেলে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন তারেক রহমানকে পাসপোর্ট প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শুধু তথ্য দিয়েছেন যে তারেক রহমান বাংলাদেশী পাসপোর্ট জমা দিয়ে বাংলাদেশী নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন। এখন যদি বিএনপি সেটি ভুল প্রমাণ করতে চান তাহলে তার (তারেকের) কাছে যে বাংলাদেশী পাসপোর্ট আছে সেটা প্রদর্শন করা হোক।’
খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here