খবর৭১ঃ দু‘জনকে আটকে রেখে পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। ঢাবি ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্ব অভিযোগের সত্যতা পেয়ে অভিযুক্ত দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকা থেকে আখতারুজ্জামান ও রাজিউর রহমানের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন কর্মী রিয়াজুল ইসলাম ও মো.সাইফুদ্দিন সিফাত নামের দু’জনকে আটক করে। তারা আটককৃতদের ঢাবির শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের একটি কক্ষে নিয়ে মারধর করেন। এরপর ছাত্রলীগ কর্মীরা মুঠোফোনে একজনের পরিবারের কাছে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন।
মুক্তিপণ দাবির খবর পেয়ে ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন অভিযুক্ত দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে টিএসসি–তে ডেকে আনেন। এরপর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে তারা অভিযুক্ত দুই ছাত্রলীগ কর্মী আখতারুজ্জামান ও রাজিউর রহমানকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করেন।
অভিযুক্ত দুই ছাত্রলীগ কর্মীর মধ্যে আখতারুজ্জামান ঢাবির পালি অ্যান্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগের ছাত্র ও শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের বিদায়ী কমিটির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক এবং রাজিউর রহমান সংগীত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি ছাত্রলীগের কোনো পদে না থাকলেও ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় বলে জানা গেছে।
ছাত্রলীগের কাছে আটকের শিকার হওয়া রিয়াজুল ইসলাম ও মো.সাইফুদ্দিন সিফাতের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী জেলার দশমিনা উপজেলায়।
ঘটনা সম্পর্কে রিয়াজুল ও সিফাত জানান, তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় দাঁড়িয়ে গল্প করছিলেন। হঠাৎ সাত থেকে আটজন এসে তাদের ঘিরে দাঁড়ায়। ছাত্রলীগ পরিচয় দিয়ে তাদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। এরপর সেখান থেকে তাদের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের একটি কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদেরকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ করেন তারা। এক পর্যায়ে তারা
সিফাতের মুঠোফোন থেকে সিফাতের বাবাকে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে।
ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন জানান, ‘অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে। যারা আটক করেছে, তারা আইনবিরোধী কাজ করেছে। যে ঘটনাটি ঘটেছে, যখনই আমরা সেটি জানতে পেরেছি, তখনই ব্যবস্থা নিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে জানিয়ে তাঁদের পুলিশের হাতে দিয়েছি। প্রক্টরকে আমরা বলেছি, এর বিরুদ্ধে যেন প্রশাসনিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’
এ ঘটনা প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে আমি অবহিত আছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কোনো অভিযোগ না থাকলে পুলিশ পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে।’
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুজনকে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’ এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
খবর৭১/এসঃ