ঢাকার পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক জাতিসংঘ, বৃটেন, কানাডা, নরওয়ে এবং জাপান

0
716

খবর ৭১: নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাজধানীসহ সারাদেশে আন্দোলন পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতি ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে জাতিসংঘ, বৃটেন ,কানাডা, নরওয়ে এবং জাপান।

বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকায় বিভিন্ন দূতাবাস নিয়মিত তাদের ফেসবুক পেইজে আপডেট তথ্য শেয়ার করছে। পাশাপাশি ভ্রমনে সতর্কতা জারি করেছে বেশ কয়েকটি দেশ। মূলত ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলার ঘটনার পর উদ্বেগের সৃষ্টি হয় গুলশানের কূটনৈতিক পাড়ায়। এর পর থেকেই সতর্কতা জারিসহ পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন কূটনীতিকরা।

ঢাকাস্থ নরওয়ে দূতাবাসের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা’ উপ-শিরোনামে প্রকাশিত অংশে বলা হয়েছে- রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ২৫ জন শিক্ষার্থী আক্রমণের শিকার হয়েছেন, তারা আহত অবস্থায় রয়েছে। হাজার হাজার শিক্ষার্থী রাস্তায় নেমেছে। তারা ট্রাফিক পয়েন্টগুলোতে যানবাহন এবং চালকের কাগজপত্র চেক করছে। দূতাবাসের ওই ফেসবুক স্ট্যাটাসে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির বিস্তারিতও তুলে ধরা হয়।

এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ঢাকাস্থ জাপান দূতাবাস তাদের নিজ দেশের নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণে প্রতিনিয়ত সতর্ক করে চলেছে। সর্বশেষ জাপানী ভাষায় জারি করা দূতাবাসের দীর্ঘ সতর্ক বার্তায় বাংলাদেশে জাপানী নাগরিকদের এই মুহুর্তে ‘অপ্রয়োজনীয়’ সফর না করতে বলা হয়েছে।

তবে যারা এরইমধ্যে ঢাকায় এসেছেন তাদের জনসমাগমের স্থান বিশেষত শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের স্থানগুলো অবশ্য এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে। নোটিশে গত ক’দিনে কোথায় কোথায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে তার বিস্তারিত খুঁটিনাটি তুলে ধরা হয়েছে।

চলমান বিক্ষোভে সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির ঢাকা অফিসের ফেসবুক পেইজে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকা ও বাংলাদেশের অন্যান্য অংশে সাম্প্রতিক প্রতিবাদ বিক্ষোভে ছেলেমেয়ে ও টিনেজারদের নিরাপত্তা নিয়ে ক্রমবর্ধমান হারে উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ। ড়ক নিরাপত্তার মতো ইস্যুসহ বৈধ অধিকারের ইস্যুতে নিজেদের কথা বলার অধিকার আছে ছাত্র ও যুবকদের। কোনো রকম সহিংসতার হুমকি ছাড়াই তাদের মতামত শুনতে হবে। গত কয়েকদিনে রাজধানীতে বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা আহত হচ্ছেন। এটা একটি গভীর উদ্বেগের বিষয়। প্রতিবাদ বিক্ষোভের ফলে অনেক স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক মিয়া সেপো বলেছেন, সহিংসতার খবরে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং সবার প্রতি শান্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। টিনেজার বা ইয়ুথরা সড়ক নিরাপত্তার দাবিতে যে উদ্বেগ প্রকাশ করছে তার বৈধতা আছে। ঢাকার মতো একটি মেগাসিটিতে এ বিষয়টির সমাধান হতে হবে। কার্যকর একটি গণপরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা উচিত যাতে শিশু, তরুণী ও নারীদের সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়। তাই শিশু ও যুবক সমাজের জন্য সড়ক নিরাপদ ও যেকোনো রকম সহিংসতা থেকে নিরাপদ করতে সব পক্ষকেই ভূমিকা নিতে হবে।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিশু ও ছাত্রদের নেতৃত্বে আন্দোলন পুরো বাংলাদেশকে ঐক্যবদ্ধ করেছে বলে জানিয়েছে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস। এক বিবৃতিতে এমনটা উল্লেখ করে হয়েছে, গুটিকয়েক ব্যক্তি যেভাবে কান্ডজ্ঞানহীনের মতো সম্পদ বিনষ্ট, যেমন বাস ভাঙচুর করেছে তা ক্ষমা করার মতো নয়। তবে নিরাপদ বাংলাদেশের জন্য যে হাজার হাজার শিক্ষার্থী শান্তিপূর্ণভাবে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চা করছে তাদের উপর বর্বর হামলা ও সহিংসতা কোন যুক্তিতেই সমর্থন করা যায় না।

শনিবার রাতে মার্শা বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলার পর এ নিয়ে রোববার পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘ দূত এবং বৃটেন ও কানাডার হাইকমিশনার। সেখানে জাতিসংঘের প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পো, বৃটিশ হাইকমিশনার অ্যালিসন ব্লেইক এবং কানাডার হাইকমিশনার বেনোয়েট প্রিফন্টেইন পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হকের সঙ্গে রোহিঙ্গা সংকটসহ সম-সাময়িক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। এ ঘটনায় তারাও যে উদ্বিগ্ন সেটি প্রকাশ করেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here