ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সংশোধন চায় এইচআরডব্লিও

0
307

খবর৭১: অনলাইন অপরাধ রুখতে বাংলাদেশের প্রস্তাবিত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ (ডিএসএ) পুনর্নিরীক্ষণ ও সংশোধনের আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিও)।

২২ ফেব্রুয়ারি সংস্থাটির ওয়েবসাইটে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমান রূপে কার্যকর করার আগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি পুনর্নিরীক্ষণ ও সংশোধন করা উচিত বাংলাদেশ সরকারের।

এতে আরো বলা হয়েছে, ব্যাপকভাবে সমালোচিত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের (আইসিটি) পরিবর্তে ২০১৮ সালের ২৯ জানুয়ারি মন্ত্রিসভা নতুন আইনের অনুমোদন দিয়েছে। প্রস্তাবিত আইনটি আগের আইনের চেয়ে আরো ব্যাপক এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় বাংলাদেশের যে আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তার লঙ্ঘন।

এইচআরডব্লিওর এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, ‘মত প্রকাশের অধিকার খর্ব করার কোনো ইচ্ছা নেই বলে বাংলাদেশ সরকার যে দাবি করছে, প্রস্তাবিত আইনটি তার বিরুদ্ধে। আইনের কমপক্ষে পাঁচটি ধারায় মত প্রকাশের বিষয়টি অস্পষ্টভাবে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। আইনটি ব্যাপকভাবে সমালোচনা দমনের একটি লাইসেন্স।’

অ্যাডামস আরো বলেন, ‘মত প্রকাশের অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের যে বাধ্যবাধকতা আছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তার সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ। সংসদের উচিত বিলটি প্রত্যাখ্যান করা ও দেশের নাগরিকরা মুক্তভাবে কথা বলতে পারে, এমন আইনের প্রতি সম্মান জানানো।’

প্রসঙ্গত, এর আগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের বিতর্কিত ৫৭ ধারাসহ ৫টি ধারা বিলুপ্ত করে ও অনুরূপ বেশকিছু বিধান রেখে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। আইনের বিধানগুলো অপপ্রয়োগের প্রবল আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন দেশের আইনজীবী ও সাংবাদিক সমাজ।

আইনের ৫৭ ধারায় গত কয়েক বছরে সাংবাদিক ও প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীসহ বহু মানুষ হয়রানির শিকার হয়েছেন। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ৫৭ ধারার অপপ্রয়োগের শিকার হয়েছেন সাংবাদিকরা।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এতে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের কোনো মৌলিক পরিবর্তন আসেনি। ৫৭ ধারায় অপরাধের ধরনগুলো উল্লেখ ছিল একসঙ্গে, নতুন আইনে সেগুলো বিভিন্ন ধারায় ভাগ করে দেয়া হয়েছে মাত্র।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কয়েকটি ধারায় মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে হয়রানির আশঙ্কা প্রবল, যা স্বাধীন সাংবাদিকতাকে বাধাগ্রস্ত করবে। যেমন, আইনটির ৩২ ধারায় ডিজিটাল অপরাধের বদলে গুপ্তচরবৃত্তির সাজার বিধান রাখা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি বেআইনি প্রবেশের মাধ্যমে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থার কোনো ধরনের গোপনীয় বা অতি গোপনীয় তথ্য-উপাত্ত কম্পিউটার, ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বা অন্য কোনো ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে ধারণ, প্রেরণ বা সংরক্ষণ করেন বা সংরক্ষণে সহায়তা করেন, তাহলে কম্পিউটার বা ডিজিটাল গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধ বলে গণ্য হবে।’

এজন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অনধিক ১৪ বছরের কারাদণ্ড বা ২৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। আর এ অপরাধ একই ব্যক্তি দ্বিতীয়বার বা বারবার করলে তিনি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা এক কোটি টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
খবর৭১/জি:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here