ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও বিচারিক ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর

0
272

খবর ৭১ঃবিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তা ডিআইজি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা এবং প্রয়োজনে বিচারিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তদন্ত যাতে নির্ভুল হয় সেই লক্ষ্যে কাজ করছে। আমি এটুকু বলতে পারি তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা এবং যদি প্রয়োজন পড়ে বিচারিক ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে। এখানে আমরা কাউকে ছাড় দিচ্ছি না।

উল্লেখ্য, ডিআইজি মিজানুর রহমান ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ বছরের জানুয়ারিতে তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়।

দ্বিতীয় বিয়ে গোপন করতে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ত্রী মরিয়ম আক্তারকে গ্রেফতার করানোর অভিযোগ ওঠে ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে।

এছাড়া তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনেরও অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের প্রমাণ পায় পুলিশের তদন্ত কমিটি। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে প্রত্যাহার করা হয়। সর্বশেষ মিজানের বিরুদ্ধে এক সংবাদ পাঠিকা প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ তুলেছেন।

এদিকে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।

এর অংশ হিসেবে গত ৩ মে সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে ডিআইজি মিজানকে ৭ ঘণ্টা বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দুদকের পরিচালক কাজী শফিকুল আলম ও উপপরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

এরপর গত ১১ জুলাই এ পুলিশ কর্মকর্তা ও তার স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্নার সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার নোটিশ জারি করেছে দুদক।

দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে ডিআইজি মিজানের নামে স্থাবর-অস্থাবর এক কোটি ৫৩ লাখ ৭০ হাজার ৭৬৩ টাকার সম্পদ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৭৯ লাখ ৩৬ হাজার ৬৫০ টাকার স্থাবর ও ৭৪ লাখ ৩৪ হাজার ১১৩ টাকার অস্থাবর সম্পদ।

স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে পুলিশ অফিসার্স হাউজিং সোসাইটির আওতায় পাঁচ কাঠা জমি, পূর্বাচলে পাঁচ কাঠা জমি, পুলিশ অফিসার্স বহুমুখী সমবায় সমিতির আওতায় সাত কাঠা ৫০ শতাংশ জমি এবং অ্যাডভান্স পুলিশ টাউনে ফ্ল্যাট।

অন্যদিকে বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জে নিজ এলাকায় ৩২ শতাংশ জমিতে দুই হাজার ৪০০ বর্গফুটের বিলাসবহুল দ্বিতল বাড়ি রয়েছে তার। এটি নির্মাণে ৬৩ লাখ ৭০ হাজার ৬৪১ টাকা খরচ করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে ডিআইজি মিজানের নামে এসব সম্পদের মধ্যে ৪৬ লাখ ৩২ হাজার ১৯১ টাকার এবং তার স্ত্রীর নামে ৭২ লাখ ৯০ হাজার ৯৫২ টাকার অসঙ্গতিপূর্ণ স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের খোঁজ মিলেছে।

ডিআইজি মিজানের স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না আয়কর নথিতে স্থাবর ও অস্থাবর মোট ৮৫ লাখ ৪৬ হাজার ৯৩৫ টাকার সম্পদের তথ্য দিয়েছেন। অথচ আয়ের উৎস পাওয়া যায় মাত্র ১২ লাখ ৫৫ হাজার ৯৮৩ টাকা। অর্থাৎ দুদকের অনুসন্ধানে আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৭২ লাখ ৯০ হাজার ৯৫২ টাকার সম্পদ রয়েছে।

এ ছাড়া মিজানুর রহমানের ভাই মাহবুবুর রহমান স্বপনের নামে রাজধানীর বেইলি রোডে বেইলি রোজ নামের বাড়িতে ২ হাজার ৪০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট ও ভাগ্নে পুলিশের এসআই মাহামুদুল হাসানের নামে চাকরিতে প্রবেশের আগেই ঢাকার পাইওনিয়ার রোডে ২০০০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাটের সন্ধান পাওয়া যায়। দুদক মনে করছে, ডিআইজি মিজান তাদের নামে এসব সম্পদ করেছেন।
খবর ৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here