ডায়াবেটিস রোগীর খাবার এবং হাইপোগ্লাইসেমিয়া

0
391

খবর৭১ঃডায়াবেটিসের খাবার মানে সব কিছু বাদ দিতে হবে তা নয়; যা-ই খান যেভাবেই খান টোটাল ক্যালোরি ঠিক রাখতে হবে।

আসলে মিষ্টি ছাড়া সবই খাওয়া যাবে তবে হিসেব করে খেতে হবে (eat everything but with moderation not elimination)। অফিসের চা-কফিতে চিনি (হালকা চিনি! বলে কিছু নাই) দেয়া হয়, কনডেন্স মিল্ক দেয়া হয়, এগুলোতে গ্লুকোজ বাড়ে তাই বাদ দিতে হবে। প্রচলিত খাদ্যদ্রব্যের মধ্যেই সিলেক্ট করে খেতে হবে।

স্বাস্থ্যকর খাবারই ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও প্রতিকারের প্রধান উপায়। তবে এটা ঠিক প্রেসার বেশি থাকলে পাতে লবণ খাওয়া যাবে না, চর্বিজাতীয় খাবার হিসেব করে খেতে হবে। কিডনির রোগী হলে এক স্টেজে পানি ও আমিষ (০.৮ গ্রাম/কেজি) হিসেব করে খেতে হয়।

শরীরে শর্করার জন্য যে ইনসুলিন নিঃসরণ হয় প্রোটিন তা আরও বাড়ায়। টোটাল ক্যালোরির ২০-৩৫% চর্বিজাতীয় খাবার হতে হবে, কোনো আপার লিমিট নেই, তবে পরিমাণ নয় গুণ (যেমন মনোআনস্যাচরেটেড ফ্যাটি এসিড-গ্লুকোজ ও লিপিড কমায়)। তবে লো গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স কার্বোহাইড্রেড ও ওমেগা৩ ফ্যাটি এসিড গ্লুকোজ কন্ট্রোলে সাহায্য করে না। সবার জন্য পাতে লবণ না খাওয়াই উত্তম।

ডায়াবেটিসের যে কোনো ওষুধেই হাইপোগ্লাইসেমিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গ্লুকোজ বেশি হলে কী হবে শুধু এটা বললেই হবে না। ওষুধ শুরু করার সময় তাই হাইপোগ্লাইসেমিয়া সম্পর্কেও রোগীকে ধারণা দিতে হবে।

হাইপোগ্লাইসেমিয়া তাৎক্ষণিক চিকিৎসা জরুরি এবং সব ডায়াবেটিস রোগীরই এটা সম্পর্কে ধারণা থাকা অত্যাবশ্যক। ডায়াবেটিসের ওষুধ না খেলে ডায়াবেটিসের রোগীর হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয় না। হাইপোগ্লাইসেমিয়া দু’রকম। ১) স্বল্পমাত্রা (সরষফ) : যেটা রোগী নিজে চিকিৎসা করতে পারে, অন্যের সাহায্য লাগে না। ২) মারাত্মক : অজ্ঞান হয়। ১০ মিনিট দেরি করলে ব্রেইন ড্যামেজ হতে পারে।

অন্যের সাহায্য ছাড়া হয় না। গ্লুকোজ ইনজেকশন দিতে হবে। ১৫ মিনিট পরপর গ্লুকোজ পরীক্ষা করতে হবে। স্বাভাবিক হলে মুখে শর্করা সমৃদ্ধ খাবার দিতে হবে। সালফোনুরিয়া ও’লং অ্যাক্টিং ইনসুলিন থেকে হলে দু’দিন অবজারভেশনে রাখতে হবে। ৮ ঘণ্টা পরপর রক্তে গ্লুকোজ পরীক্ষা করতে হবে। দুটো স্যাম্পলে গ্লুকোজ ১০ মিমোলের বেশি হলে ডায়াবেটিসের ওষুধ শুরু করতে হবে। শর্ট/র‌্যাপিড অ্যাক্টিং ইনসুলিন দিয়ে শুরু করতে হবে। অন্তত (৬+০+৪) ডোজ দিয়ে। সালোফনিলুরিয়া এক বা ততধিক ট্যাবলেট থেকে হলে ১/৪ দিয়ে শুরু করে দিতে হবে।

ডায়াবেটিস একটা মহামারি। সবাইকে তাই এ সম্পর্কে জানতে হবে। শৈশবে নিজেদের, বাপ-চাচা, দাদা-দাদির জীবন-জীবিকার দিকে ফিরে তাকালে উপলব্ধি করা কঠিন নয় কেন ডায়াবেটিসের এই মহামারি। কন্ট্রোলে থাকলে স্বাভাবিক জীবন সম্ভব। ডায়াবেটিস আপনার কন্ট্রোল নেয়ার আগে আপনি ডায়াবেটিসকে কন্ট্রোল করুন।
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here