টিকিট কালোবাজারীর অভিযোগঃ আসন কমলো নীলসাগর ট্রেনের ভোগান্তিতে সৈয়দপুরের যাত্রীরা

0
678
সৈয়দপুরে প্রতারণা মামলায় সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের নেতা গ্রেফতার

মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুরঃ সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনে ঢাকাগামী আন্তঃনগর নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের আসন সংখ্যা কমিয়ে দেয়া হয়েছে। ফলে সৈয়দপুর নীলসাগর ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ সোনার হরিণ হয়ে উঠেছে। আর এই সুযোগে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারী শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

টিকিট কালোবাজারী চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠায় সাধারণ যাত্রীদের ভাগ্যে সহসা টিকিট জুটছে না। ট্রেনের বগি পরিবর্তন করায় আসন সংখ্যা কমিয়ে দেয়া হয়েছে দাবি করেছে স্টেশন কর্তৃপক্ষ। রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ ডিসেম্বর থেকে চিলাহাটি থেকে ঢাকার চলাচলকারী নীলসাগর বগি ছিল ভারতের তৈরী। এর প্রতি বগির আসন সংখ্যা ছিল ১০৫টি করে। পরে কর্তৃপক্ষ নীলসাগর ট্রেনের বগি রাজশাহী থেকে ঢাকায় চলাচলকারী বনলতা এক্সপ্রেসে স্থানান্তর করে বনলতা এক্সপ্রেসের বগি নীলসাগর এক্সপ্রেসে যুক্ত করা হয়।

ইন্দোনেশিয়ার তৈরী বনলতা ট্রেনের প্রতি বগির আসন সংখ্যা ৯২টি করে। এর ফলে সৈয়দপুরসহ নীলফামারী জেলার ৪টি রেলওয়ে স্টেশনের আসন সংখ্যার বরাদ্দ কমিয়ে দেয়া হয়। সূত্র মতে, সৈয়দপুর স্টেশনে আগে নীলসাগর ট্রেনের আসন সংখ্যা ছিল ৯২টি। বর্তমানে তা কমিয়ে ৭৬টি করা হয়েছে। এতে করে ২৫টি আসন কমে গেছে নীলসাগর ট্রেনের। এ অঞ্চলে রেলপথে ঢাকাগামী একটি মাত্র আন্তঃনগর ট্রেন নীলসাগর এক্সপ্রেস। ফলে ট্রেনের টিকিটের ব্যাপক চাহিদা থাকায় টিকিট সংগ্রহ করা সবসময় কষ্ট হত।

এখন আসন কমিয়ে দেয়ায় টিকিটে সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। সপ্তাহ ধরে কাউন্টারে ধর্না দিয়েও টিকিট মিলছে না। ফলে ঢাকাগামী যাত্রীরা টিকিট কিনতে এসে হয়রানিসহ বিপাকে পড়ছেন। এ দুর্ভোগ নিত্যদিনের চিত্র হলেও দুর্ভোগ অবসানে রেল কর্তৃপক্ষের কোন মাথাব্যথা নেই। আর এই সুযোগে টিকিট কালোবাজারীদের দৌরাত্ম বেড়ে গেছে। অভিযোগে জানা যায়, এই চক্র বুকিং অফিসের সঙ্গে আঁতাত করে আগে ভাগেই টিকিট কিনে নিচ্ছে। ফলে সাধারণ যাত্রীদের পক্ষে টিকিট সংগ্রহ করা সোনার হরিণ হয়ে উঠেছে। টিকিটের ব্যাপক চাহিদাকে পুঁজি করে দ্বিগুণ মূল্যে টিকিট বিক্রি করছে কালোবাজারীরা।

অভিযোগ রয়েছে এক শ্রেণীর অসাধু বুকিং সহকারী বাড়তি অর্থ পকেটস্থ করতে কালোবাজারীদের প্রশ্রয় দিচ্ছেন। টিকিটের কালোবাজারী বন্ধে উর্ধ্বতন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ নানা উদ্যোগ নিলেও তা কাজে আসছে না। কারণ কিছু অসাধু বকিং সহকারীরা লাভবান হতে রেলওয়ে ওই উদ্যোগ নানা কৌশলে বাধাগ্রস্থ করছে।

সৈয়দপুর শহরের নতুন বাবুপাড়া এলাকার কাশেম আলী নামের এক অভিভাবক জানান, কুয়াশার কারণে ঢাকাগামী নীলসাগর ট্রেনের টিকিটের জন্য কয়েক দিন কাউন্টার ধরনা দিয়েছি। শেষমেষ টিকিট না পেয়ে পড়ুয়া ছেলেকে কোচে পাঠাতে বাধ্য হয়েছি। একই কথা বলেন ভূক্তভোগী আরও কয়েকজন যাত্রী। তারা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, আগে আসন বেশী থাকার পরও বারবার ধর্না দিয়ে তবে টিকিট পাওয়া যেত। এখন আসন কমে যাওয়ায় ধর্না দিয়েও টিকিট পেতে ব্যর্থ হয়েছি।

তবে দ্বিগুণ মূল্য দিলে কালোবাজারে টিকিট ঠিকই মিলছে। ভূক্তভোগীরা এসব বন্ধে রেল কর্তৃপক্ষের নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানান। জানতে চাইলে, সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার শওকত আলী টিকিট কালোবাজারীর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় এমন কোন ঘটনা নেই। স্টেশনের বাইরে কিছু ঘটলে সে বিষয়ে আমাদের করার কিছু নেই। এখন স্টেশনের কাউন্টার ছাড়াও অনলাইনে টিকিট পাওয়া যায়। তবে আসন কমে যাওয়ায় চাহিদামত যাত্রীদের টিকিট দেয়া সম্ভব হয় না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here