খবর ৭১: চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় স্বল্প খরচে প্রযুক্তি স্থানান্তরের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ এবং ঝুঁকি মোকাবেলায় বিশ্বের দেশগুলোর কাছে স্বল্প ব্যয়ে প্রযুক্তি স্থানান্তরে বিশ্ব সম্প্রদায়ের একটি দায়িত্ব রয়েছে।
মঙ্গলবার বিকালে জাতিসংঘ সদর দফতরের প্লেনারি হলে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম আয়োজিত চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে টেকসই উন্নয়ন শীর্ষক এক অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন।-খবর বাসস।
বৈঠকের পর পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট এনরিক পেনা নিয়েতো, হল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট, জনসন অ্যান্ড জনসনের সিইও এবং মজিলা ফায়ার ফক্সের সিইও এই প্লেনারি সেশনে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।
বক্তারা সেশনে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের আবহের সঙ্গে খাপখাওয়াতে বিভিন্ন দেশের কর্মকাণ্ডের প্রতি বিশেষ করে শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও স্বাস্থ্য খাতের প্রতি দৃষ্টিপাত করেন।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে যে ধরনের চ্যালেঞ্জ এবং ঝুঁকির সৃষ্টি হতে পারে, সে সম্পর্কে তাদের চিন্তাভাবনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের কাছে জানতে চাওয়া হয়।
জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ভূখণ্ডের একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর দেশ। আমাদের সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জই হচ্ছে এই বৃহৎ জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা ও সুশিক্ষা নিশ্চিত করা এবং তাদের প্রযুক্তি সমৃদ্ধ করা, যাতে করে তারা পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাদের কর্মসংস্থানের নিরাপত্তা বিধান করতে পারে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকারের লক্ষ্যই হচ্ছে- বাংলাদেশকে সমগ্র বিশ্বের সঙ্গে সংযুক্ত করা, যাতে করে সবাই যোগাযোগব্যবস্থার সুফল পেতে পারে।
এ সময় উন্নয়নের গতিকে ত্বরান্বিত করতে বাংলাদেশের মতো দেশের জন্য স্বল্প ব্যয়ে এবং সহজে প্রযুক্তি হস্তান্তরের ওপর গুরুত্বারোপ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
তিনি বলেন, যেহেতু আমরা বৃহৎ প্রযুক্তি উৎপাদনকারী দেশ নই, তাই আমরা যাতে করে সহজে এবং স্বল্পমূল্যে প্রযুক্তি পেতে পারি, সে জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশকে এর জনশক্তিকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রযুক্তিগত দক্ষতায় যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে। তাই তার সরকার বিভিন্ন কারিগরি প্রশিক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যাতে করে শিল্প বিপ্লবের আমলে তাদের কর্মচ্যুত হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে পড়তে না হয়।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় শিক্ষার প্রসারে তার সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরেন, যার মধ্যে রয়েছে- বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, নানা বৃত্তি ও উপবৃত্তি প্রদান এবং নারী শিক্ষাকে উৎসাহ প্রদান।
‘এখন প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থী বাংলাদেশে বৃত্তি-উপবৃত্তি পাচ্ছে,’ বলেন তিনি।
বক্তৃতার শুরুতেই শেখ হাসিনাকে নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট প্রায় ১০ লাখের অধিক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাকে আশ্রয় প্রদানের জন্য অভিনন্দিত করেন।
এ সময় উপস্থিত সব অংশগ্রহণকারী নেতা জোরে করতালির মাধ্যমে এ অভিনন্দনকে স্বাগত জানান।
এ অনুষ্ঠানের পর নেদারল্যান্ডসের রানি ম্যাক্সিমার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন শেখ হাসিনাI ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিকসভায় শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানান রানি ম্যাক্সিমা।
খবর ৭১/ই: