ঝুঁকিপূর্ণ ট্রেনের চলাচল সৈয়দপুরে রেলপথে স্থাপনা উচ্ছেদের পর আবার দখল

0
539
ঝুঁকিপূর্ণ ট্রেনের চলাচল সৈয়দপুরে রেলপথে স্থাপনা উচ্ছেদের পর আবার দখল

খবর৭১ঃ

মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুরঃ রেলপথ বিভাগ ও রেলওয়ে থানার যৌথ উদ্যোগে উচ্ছেদ কার্যক্রম শেষ করার আধ ঘন্টা পরেই পূর্বের অবস্থায় ফিরে এসেছে সৈয়দপুর শহরের রেললাইনের পুরোনো চিত্র। গত সপ্তাহে রেলপথে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পাঁচ মাথা মোড় রেলওয়ে ঘুমটি থেকে পোস্ট অফিস মোড় পর্যন্ত রেল লাইনের দু’ধারে গড়ে ওঠা প্রায় দু’শতাধিক অবৈধ স্থাপনা ও ফুটপাতের দোকান উচ্ছেদ করা হয়। কিন্তু এ অভিযানের মাত্র ৩০ মিনিট পরেই উচ্ছেদ করা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুরনো চিত্রে রুপ নেয়। অবস্থা দেখে মনে হয়েছে রেলের উচ্ছেদ অভিযান ডাল ভাত। রেলপথ বিভাগের ঢিলেঢালা মনোভাবের কারণে বরাবরই এমন অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে এবং ঝুঁকি নিয়ে চলছে বিভিন্ন ট্রেন।

সূত্র জানায়, স্থানীয় রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে পাঁচমাথা মোড় রেল ঘুমটি পর্যন্ত স্থানে গড়ে ওঠা রেললাইনের দু’পাশে ভ্রাম্যমাণ দোকান বসিয়ে এবং নির্ধারিত স্থান ছাড়াও বাড়তি জায়গা দখল করে ব্যবসা পরিচালনা হয়ে আসায় ট্রেন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। এছাড়া রেললাইনের স্লীপার ও পাথরেরও ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়ে আসছিল। এমন দৃশ্য ধরা পড়ে রেলওয়ের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের চোখে। ফলে তাদের নির্দেশনা পেয়ে রেলপথ বিভাগের সহযোগিতা সৈয়দপুর রেলওয়ে থানা পুলিশের একটি দল শনিবার সকালে রেললাইনের দু’ধারে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা বিভিন্ন স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু করে। রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মো. এমদাদুল হকের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালকারী দল টিনশেড ঘর, আধাপাকা দোকানসহ ভ্রাম্যমাণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ প্রায় দু’শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করে। উচ্ছেদের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ওইসব স্থাপনার মালিকরা তাদের মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নিলেও উচ্ছেদ শেষ হওয়ার পর পুরোনো চিত্রে ফিরে আসতে শুরু করে রেললাইনের দু’পাশের এলাকা। তারা সাথে সাথে নতুন করে স্থাপনা গড়ে তুলে। বর্তমানে পুরনো চিত্রে চলছে রেললাইনের দু’পাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মো. এমদাদুল হক অভিযান শেষে বলেন, রেলপথ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিকল্পে দ্রুতগতিতে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। ফলে রেললাইনে ঝুঁকি এড়াতে রেললাইনের নির্দিষ্ট সীমারেখা পর্যন্ত কেউ যাতে অবৈধ স্থাপনা ও ভ্রাম্যমাণ দোকান না বসাতে পারে তাই এ অভিযান শুরু হয়েছে। তবে ওই কর্মকর্তার বক্তব্যের সাথে বাস্তব চিত্রের কোন মিল পাওয়া যায়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রেললাইন এলাকায় দেখা যায় দু’পাশে অবৈধ স্থাপনা। রেললাইনের ওপর বসেছে শীতকালীন বস্ত্রের দোকান। সেখানে মানুষজনের ব্যাপক উপস্থিতিও লক্ষ্য করা গেছে। ওই রেললাইনের ওপর দিয়ে বেশ কয়েকটি ট্রেন চলাচল করে তা তাদের খেয়াল নেই।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সচেতন মহলের অভিযোগ, রেলের লোক দেখানো অভিযানে কোন লাভ হয় না। কারণ তাদের ঢিলেঢালাভাবে দেখে বোঝা যায় ওইসব ব্যবসায়ীদের সাথে রয়েছে গভীর সখ্যতা। অভিযোগ রয়েছে, শীতবস্ত্রের প্রায় শতাধিক ভ্রাম্যমাণ দোকান মালিকসহ অন্যান্যদের কাছ থেকে উপরি নিয়ে থাকে একটি মহল। ফলে যতই উচ্ছেদ হোক, পরবর্তীতে পুনরায় গড়ে তোলা হয় স্থাপনা। এ অবস্থা চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। সচেতন মহলের দাবি ট্রেন চলাচল নির্বিঘ্ন করতে রেললাইনের দু’ধারে গড়ে ওঠা অবেধ দোকানপাট অপসারণ প্রয়োজন।

এ ব্যাপারে কথা হয় স্থানীয় রেলপথ বিভাগের কর্মকর্তা সুলতান মৃধার সাথে। তিনি বলেন, রেলাইনের দু’ধারে বসা ব্যবসায়ীদের কাছে কারা সুবিধা নিচ্ছে তা তার জানা নেই। তবে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আবারও চলবে উচ্ছেদ অভিযান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here