ঝলকাঠিতে নারকেল গাছ থেকে পড়ে মারা গেল যুবক

0
662
ঝলকাঠিতে নারকেল গাছ থেকে পড়ে মারা গেল যুবক।

রতন আচার্য্য, ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ বাবা স্ব-মিলের শ্রমিক মা গৃহিনী। অর্থাভাবে এসএসসির পর আর লেখা পড়া হয়নি। ঢাকায় পিকআপ ভ্যান চালানোর পেশা বেছে নেয় সাইফুল ইসলাম (২৫)। ছয় মাস আগে সে বিয়েও করে। করোনাভাইরাসের কারনে দেশে অঘোষিত লকডাউন শুরু হলে সে ঝালকাঠি শহরে এসে ডাব বিক্রির ব্যবসা শুরু করে। আজ বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে পূর্বচাদকাঠি এবাদুল্লাহ জামে মসজিদের পিছনে শাহজাহান স্বর্ণকারের বাড়িতে একটি নারকেল গাছ থেকে ডাব পাড়তে গিয়ে, গাছ থেকে পড়ে তার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। শহরের গুরুধাম এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকেন নিহত সাইফুলের বাবা আব্দুল খালেক। তিনি পার্শ্ববর্তি সিকদার স্ব-মিলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। গ্রামের বাড়ি পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলায়। ২০/২২ বছর যাবৎ ঝালকাঠি শহরের গুরুধাম এলাকায় বসবাস করেন । আব্দুল খালেকের তিন ছেলের মধ্যে সাইফুল সবার বড়। আর্থিক কারনে এসএসসি পাস করার পর সাইফুল আর পড়াশোনা করতে পারেনি। এটাসেটা করে বছর দুয়েক আগে ঢাকায় পিকআপ ভ্যান চালানো শুরু করে। স্বপ্ন দেখে পিকআপ চালিয়ে একদিন সংসারে স্বচ্ছলতা আনবে। ছয় মাস আগে বিয়ে করে রিয়া নামে এক কলেজ ছাত্রীকে। মেঝ ভাই সাঈদুল ইসলাম ঢাকার একটি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।

সাইফুলের মা সাহিদা বেগম কিছুটা মানসিক প্রতিবন্ধী। ছোট ভাই আরিফুল এ বছর উদ্বোধন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেছে। নিহত সাইফুলের বাবা আঃ খালেক বলেন, আজ দুপুরে ও (সাইফুল) পূর্বচাদকাঠি বসুন্ধরা সড়কে শাহজাহান স্বর্ণকারের বাড়ির তিনটি নারকেল গাছের ডাব ক্রয় করে ৫০০ টাকায়। ওই ডাব গাছ থেকে পাড়ার জন্য বিকাল তিনটার দিকে সে গাছে ওঠে। ডাব পারার সময় সে একটি গাছ থেকে পড়ে সাথে সাথে মারা যায়।

আশপাসের লোকজন সাইফুলকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. মো. জিয়াউল হাসান সাইফুলকে মৃত ঘোষণা করে। ডা. জিয়াউল হাসান, বলেন গাছ থেকে পড়ায় নিহতর মস্তিস্কে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় এবং দুটি হাত ভেঙ্গে যায়। সাইফুলের বাবা আব্দুল খালেক বলেন, আমার ছেলে নারকেল গাছ থেকে পড়ে মারা গেছে। কারো বিরুদ্ধে আমার কোন অভিযোগ নাই। শাহজাহান স্বর্ণকারের ছেলে হাসান ঈমাম বলেন, সে আমার মায়ের কাছ থেকে তিনটি গাছের ডাব কেনে। তিনটার দিকে আমি ঘুমে ছিলাম তখন ডাব পারার জন্য গাছে ওঠা শুরু করলে আমার মা তাকে প্রচন্ড রৌদ্রে গাছে না ওঠার জন্য অনুরোধ করেছিল। তিনি আরও বলেন যেহেতেু সাইফুল অত্যান্ত দরিদ্র পরিবারের সন্তান আমাদের পক্ষ থেকে তার পরিবারকে সার্বিক সহায়তা করা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here