জয়পুরহাটে কালাইয়ে বিএডিসি’র কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ে সার্বক্ষণিক তালা

0
294

মোঃ অালী হাসান: জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ কৃষি মন্ত্রণালয়ের ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়ন, উন্নত বীজ, চাষাবাদের নিত্য নতুন প্রযুক্তির
যন্ত্র পাতিসহ সেচ সম্প্রসারণ এবং কৃষকদের প্রশিক্ষণ, কৃষি উন্নয়নে সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব প্রাপ্ত ‘বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন’ (বিএডিসি) জনবল অভাবে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলা ইউনিট অফিস সার্বক্ষণিক তালা বন্ধ অবস্থায় থাকতে দেখা যায়। কালাই উপজেলা ইউনিটে বিএডিসি’র একজন মেকানিক দায়িত্বে থাকলেও তার কোনদিন দেখা পাওয়া যায়নি। তবে ৫শ’ টাকা মাসিক
বেতন এর চুক্তিতে থাকা এক মহিলা মাঝে মধ্যে কার্যালয় খোলেন এবং ঝাড় মোছ করতে দেখা যায়। ইতি পূর্বে কৃষি-কৃষক সহায়ক বন্ধু প্রতিষ্ঠান বিএডিসি কৃষি
উন্নয়নে সার্বিক কার্যক্রম পরিচালিত হত। কৃষকদের সহায়ক বন্ধু হিসেবে ভরসাও ছিল অনেক বেশী তাদের। বিগত ১৯৮৫-৮৭ সালে পূর্ণ উদ্যোমে জনবল নিয়ে পরিচালিত হতো বিএডিসি সেচ সম্প্রসারণ কার্যক্রম সারা দেশের ন্যায় জয়পুরহাটের কালাইলেও। আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে সংস্থাটির বর্তমানে
শুধুমাত্র একজন সহকারী মেকানিক দিয়ে চলছে উপজেলা ইউনিটের সকল কার্যক্রম। জয়পুরহাট আঞ্চলিক রিজিয়ন
অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলীর পদ দীর্ঘদিন যাবৎ শুন্য থাকায় বগুড়া আঞ্চলিক রিজিয়ন আফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম এ জেলার
ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করলেও বেশিরভাগ সময়ে জয়পুরহাট আঞ্চলিক অফিসে তাকে
দেখা যায়নি। জয়পুরহাট আঞ্চলিক অফিসে বিভিন্ন পদে বিএডিসি’র ৩২জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে বর্তমান
দু’জন কর্মকর্তা দ্বারা খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলচ্ছে সংস্থার কার্যক্রম। এ জেলায় বিএডিসি’র একজন সহকারী
প্রকৌশলী, একজন উপ-সহকারী প্রকৌশলী, ৪জন মেকানিক দিয়ে দায়সারা ভাবে সংস্থাটিকে সচল রাখা হয়েছে।
জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক মোকাম্মেল হক ইতোমধ্যেই কৃষকদের হিতৈসি হিসেবে সকল মহলে পরিচিতি লাভ করেছেন। জেলা প্রশাসক সাহেব এলাকার কৃষকদের কৃষি সংক্রান্ত সেচ বা গভীর নলকূপের সমস্যা দেখা দেয়া মাত্র তিনি স্ব-স্ব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অথবা
তনি নিজেই সমস্যার সমাধান করে থাকেন। বিএডিসি সর্ম্পকৃত যে কোন গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে জয়পুরহাটের সহকারী প্রকৌশলী ও কৃষকদের দৌড়াতে হয় রিজিয়ন অফিস বগুড়াতে। ফলে বিঘিœত হয় কার্যক্রম, কালাই জোন-ইউনিটে বিগত সময়ে ছিল
প্রয়োজনীয় জনবল, ইউনিয়ন পর্যায়ে ছিল মাঠ পরিদর্শক এবং ইউনিয়ন ভিত্তিক ছিল সেচ সংক্রান্ত চাষী-কৃষক সংগঠন। চাষী সংগঠনের মাধ্যমে মাঠ পরিদর্শন একং
মাঝে মধ্যে কৃষকদের উন্নত কৃষি প্রযুক্তি সম্পর্কে দেয়া হত প্রশিক্ষণ। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের উদ্ভুত করণের মাধ্যমে রাসায়নিক সার প্রয়োগ
পদ্বতি, সেচ নালা প্রস্তুত, সেচ ব্যবস্থাপনা, বীজ বপন, ফসল কর্তন ও বীজ সংরক্ষন ছিল উল্লেখযোগ্য। সেই সব কার্যক্রম এখন কালের স্মৃতি ছাড়া কিছুই নেই। বাংলাদেশে কৃষিতে দিন দিন উন্নয়ন হওয়ায় উন্নত
দেশগুলির হয়ে উঠে চক্ষুসুল, আন্তঃজাতীক ও আমলাতান্ত্রিক চক্রান্তে ২০০২-০৩ সাল পর্যন্ত চলে বিএডিসি’র কর্মচারী ছাটাই প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়ায়
পড়ে অনেক দক্ষ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা চাকুরিচ্যুত হয়ে বিএডিসি হয়েপড়ে দক্ষ জনবলহীন নাম সর্বস্ব দপ্তরে। উত্তরাঞ্চের মধ্যে কালাই উপজেলা কৃষিপূর্ণ হলেও কৃষি ক্ষেত্রে কৃষি বান্ধব প্রতিষ্ঠান বিএডিসি এখন একজন সহকারী ম্যাকানিক দিয়ে নামকাস্থে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে এ দপ্তরটি। কৃষকের সহায়ক বন্ধ প্রতিষ্ঠান
বিএডিসি এখন কৃষকদের ভোগান্তির কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে। চাষী বা সেচ সংক্রান্ত কৃষক পর্যায়ে যে কোন সমস্যা নিয়ে দৌড়াতে হচ্ছে বগুড়া রিজিয়নের
নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে। কৃষদের সোনার ফসল ফলার কথা কিন্তু বিএডিসি’র জনবল হ্রাস ও দাপ্তরিক
কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ হওয়ার কারণে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছতে পারছেনা সাধরণ কৃষক। বিএডিসি’র কালাই সেচ সম্প্রসারণ দপ্তরে জনবল বৃদ্ধিসহ জেলার নির্বাহী
প্রকৌশলীর পদ পুরণ এবং পুনঃরায় বিএডিসি’র অফিসটি চালু হলে এ অঞ্চলের কৃষকরা আগের মত পরামর্শ ও
সহযোগীতায় উৎপাদিত হবে তাদে কাঙ্খিত ফসল। এ অঞ্চলের কৃষকরা বিশেষ ভুমিকা রাখতে পারবে দেশের খাদ্য ঘাটতি পুরণে।
এব্যাপারে জেলা সেচ যন্ত্রের (গভীর নলকূপ) মালিক সমিতির সভাপতি এ্যাড. নৃপেন্দ্র নাথ মন্ডল পিপি জানান কালাই বিএডিসির প্রয়োজনীয় জনবল/কর্মকর্তা
কর্মচারী না থাকায় প্রতিনিয়ত সেচ সমস্যার সৃষ্টি হয়।
খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here