জাহালমকে অব্যাহতি দিয়ে আজই মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ

0
229

খবর ৭১ঃ সোনালী ব্যাংকের অর্থ জালিয়াতির অভিযোগে দুদকের করা সব মামলা থেকে নিরাপরাধ জাহালমকে অব্যাহতি দিয়ে আজই মুক্তি দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রোববার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত ভুল তদন্তের সঙ্গে কারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যথায় আদালত এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবেন বলেও জানান।
জানা যায়, সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগে আবু সালেকের বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা হয়। এর মধ্যে ২৬টিতে জাহালমকে আসামি আবু সালেক হিসিবে চিহ্নিত করে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেয় দুদক।

চিঠি পাওয়ার পর দুদক কার্যালয়ে হাজির হয়ে পাঁচ বছর আগে জাহালম বলেছিলেন, তিনি সালেক নন। কিন্তু পাটকল শ্রমিক জাহালমের কথা সেদিন দুদকের কেউ বিশ্বাস করেনি। ২০১৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি দুদকের এসব মামলায় জাহালম গ্রেপ্তার হন। তিনি একদিকে জেল খাটছেন, অন্যদিকে আদালতে হাজিরা দিয়ে চলেছেন।

বিষয়টি আদালতে উত্থাপিত হলে শুনানির শুরুতে দুদক পক্ষে আদালতে বক্তব্য দেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। তিনি আদালতকে জানান, জাহালমের বিরুদ্ধে ২৬টি মামলায় অভিযোগপত্র দেয়া হয়। পরে এসব মামলায় বিচারিক আদালতে বিচার শুরু হয়। তবে গত বছর দুদকের নজরে আসে জাহালম প্রকৃত আসামি আবু সালেক নন। মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকেও বিষয়টি জানানো হয়।

তখন দুদকের অধিকতর তদন্ত ওঠে আসে জাহালম নির্দোষ। আসল আবু সালেকের ঠিকানা খুঁজে বের করা হয়। তখন দুদকের পক্ষ থেকে জাহালমের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহারের (নন প্রসিকিউশন) জন্য বিচারিক আদালতে আবেদন করা হয়।

এ সময় দুদকের আইনজীবীর উদ্দেশে আদালত বলেন, দুদকের ফলস ইনভেস্টিগেশনের সুযোগ কোথায়, দুদক যদি প্রোপারলি কাজ করে, তাহলে এ দেশে যে উন্নয়ন হচ্ছে, তা স্থায়ী রূপ নেবে।

আদালত আরো বলেন, এখানে একটি সিন্ডিকেট আছে। এখানে কোনো জজ মিয়া নাটক সাজানো হয়েছে কি না, এই জাহালমকে মিথ্যাভাবে মামলায় অভিযুক্ত করার পেছনে দায়ী কে? আপনার অফিসের কেউ আছে কি না, আমরা দেখতে চাই দুদক একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান।

আদালত এই আইনজীবীর উদ্দেশে আরো বলেন, একটা নির্দোষ লোক যখন আপনার বুঝতে পারলেন, তখন আপনারা কী করেছেন? এক দিনের জন্যও আপনারা তাকে রাখতে পারেন না। কেন আপনারা তার মুক্তির ব্যবস্থা করলেন না?

তখন দুদকের পক্ষ থেকে বলা হয়, দুদকের অধিকতর তদন্তে জাহালমের নির্দোষ বিষয়টি জানার পরই দুদকের পিপিরা জাহালমের জামিনে কোনো আপত্তি করেননি।

আদালত বলেছেন, দুদক একটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান। সুস্থ তদন্ত হলে জাহালমের বিষয়টি এ পর্যায়ে আসত না। দুদকের ফলস ইনভেস্টিগেশনের কোনো সুযোগ নেই। দুদককে অবশ্যই স্বচ্ছ হতে হবে। যারাই এর সঙ্গে জড়িত তাদের অভ্যন্তরীণভাবে চিহ্নিত করেন। তাহলে আমাদের ইন্টারফেয়ার করার সুযোগ থাকবে না। যদি না হয়, তাহলে কিন্তু আমরা করব।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here