জাবালে নূরের ২ বাসের ছিল না রূট পারমিট

0
487

খবর৭১:রবিবার বেপরোয়া বাস চালিয়ে শিক্ষার্থীদের হত্যার সঙ্গে জাবালে নূরের তিনটি বাসের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা মেট্রো-ব-১১-৭৬৫৭ নম্বর বাসটির নিবন্ধন নেওয়া হয়েছিল ২০১৫ সালের ১৯ মে।

এর ফিটনেস সনদের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৬ সালের ১৮ মে। রুট পারমিটের মেয়াদও শেষ হয় গত ১৯ মে। এরপর নবায়ন করা হয়নি। এ ছাড়া ঢাকা মেট্রো-ব-১১-৯২৯৭ বাসটির রুট পারমিটের ফি জমা দেওয়া হয়নি। বিআরটিএ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। জাবালে নূর পরিবহনের মালিকপক্ষ।
র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, জাবালে নূরের একটি বাস ঢাকা মেট্রো ব-১১-৯২৯৭-এর চালক মাসুম বিল্লাহকে (৩০) বরগুনা থেকে আটক করা হয়েছে। হেলপার এনায়েতকেও (৩৮) আটক করা হয়েছে। অন্য বাস ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৫৮০-এর চালক সোহাগ (৩৫) ও হেলপার রিপনকে (৩২) ঢাকা থেকে আটক করা হয়।

এ ছাড়া জাবালে নূরের ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৬৫৭-এর চালক জুবায়েরকেও (৩৬) আটক করা হয়েছে। তাদের থানায় সোপর্দ করা হচ্ছে।
র‌্যাব-১-এর পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মেজর ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, মিরপুর ও বরগুনায় অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে আটক করা হয়। বরগুনা থেকে মাসুমকে আনা হলে তাদের সোপর্দ করা হবে। এর আগে গত রবিবার রাতে এ ঘটনায় শিক্ষার্থী মীমের বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা করেন। এতে জাবালে নূর পরিবহনের বাসচালক ও তার সহকারীদের আসামি করা হয়।

ক্যান্টেনমেন্ট থানায় দায়ের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রিয়াদ আহমেদ গতকাল সন্ধ্যায় বলেন, ‘এখনো তাদের আমরা পাইনি। পেলে তাদের ব্যাপারে তদন্ত করা হবে। ’

র‌্যাব ও পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, ঢাকা মেট্রো ব-১১-৯২৯৭ নম্বর বাসটি চাপা দিয়ে দুই শিক্ষার্থীকে হত্যা করে। ওই বাসের চালক মাসুম বিল্লাহই হচ্ছে মামলার প্রধান আসামি। তার বাড়ি পটুয়াখালীতে। তার সহকারী এনায়েতের বাড়ি বরিশালে। অন্য দুটি বাসও প্রতিযোগিতা করেছে। এ কারণে বাকিদের ঘটনার সহযোগী হিসেবে দেখা হচ্ছে। একজন র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, এরা অসচেতনভাবে গাড়ি চালাচ্ছিল। কার আগে কে যাত্রী তুলবে সে প্রতিযোগিতা ছিল। এ কারণে রাস্তায় শিক্ষার্থীদের ওরা দেখেনি। বাকিটা পুলিশ তদন্ত করে দেখবে।

চালক মাসুম বিল্লাহ ও সহকারীর নিয়োগপত্র বা ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে কি না, জানতে চাইলে জাবালে নূর পরিবহনের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, ‘লাইসেন্স অবশ্যই থাকার কথা। কারণ লাইসেন্স ছাড়া কোনো চালককে আমরা গাড়ি দিই না। চালক অপরাধ করেছে। সে জন্যই আমরা তাকে র‌্যাবের হাতে তুলে দিয়েছি। দোষ করে থাকলে তার অবশ্যই শাস্তি হওয়া উচিত। আমরা কখনো বেপরোয়া গাড়ি চালানোকে সমর্থন দিই না। ’ তিনি আরো বলেন, ‘আসলে তারা তো আমাদের স্থায়ী কোনো কর্মচারী না। এই আসে, এই যায়। এ জন্য তাদের বিস্তারিত কোনো কিছু রাখা হয় না। তবে চাকরি দেওয়ার আগে তাদের একটা সিভি (বায়োডাটা) রাখা হয়। রেজিস্টার খাতায় নাম উল্লেখ রাখা হয়। ’ তিনি জানান, চুক্তিভিত্তিক হওয়ায় চালকের বিস্তারিত কোনো তথ্য কম্পানির কাছে নেই। কেননা এ ধরনের চালকরা ট্রিপভিত্তিক মজুরি পেয়ে থাকে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘রুট পারমিট দেওয়ার সময় বাসের ভাড়া নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এতে চুক্তিভিত্তিক নয়, নিয়োগভিত্তিকের কথা উল্লেখ আছে। চালকদের বেতনসহ ভাড়া নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। কিন্তু মালিকরা তা মানছেন না। চুক্তিভিত্তিক হওয়ার কারণেই চালকরা সড়কে যাত্রী নিয়ে কাড়াকাড়ি করছে। সে কারণেই দুর্ঘটনা ঘটছে। ’

ক্যান্টনমেন্ট থানার ওসি কাজী শাহান হক বলেন, মামলায় প্রতিযোগিতা করে চাপা দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। তাদের হেফাজতে পেলে জিজ্ঞাসাবাদ করে দেখা হবে। তাদের লাইসেন্সও যাচাই করা হবে।

এদিকে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৫ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে। গতকাল সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এইচ এম তোয়াহা তারিখ ধার্য করেন। এর আগে নিহত কলেজছাত্রী দিয়া খানম মীমের বাবার ক্যান্টনমেন্ট থানায় দায়েরকৃত মামলার এজাহার আদালতে পাঠানো হয়।
খবর৭১/জি:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here