খবর ৭১ঃরাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় জাবালে নূর বাসের চালক মো. মাসুম বিল্লাহর (৩০) সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার আসামিকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক কাজী শরীফুল ইসলাম।
শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম এএইচএম তোয়াহা রিমান্ডের ওই আদেশ দেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ঘাতক বাসের (ঢাকা মেট্রো ব-১১-৯২৯৭) চালক আসামি মো. মাসুম বিল্লাহ অন্য বাস দুটির চালক ও হেলপারদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ও উপস্থিতিতে ছাত্রছাত্রীদের ওপর উঠিয়ে দিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে যায়। তদন্তে মাসুমের নাম জানার পর র্যাবের সহযোগিতায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
রিমান্ড আবেদনে আরও বলা হয়, ঘাতক বাসটির চালক মাসুমের ড্রাইভিং লাইসেন্স পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তিনি হালকা গাড়ি চালানোর জন্য উপযুক্ত, তবে ভারি গাড়ি চালানোর জন্য উপযুক্ত নন। মামলাটির সুষ্ঠু ও সঠিক তদন্তের স্বার্থে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসামির সাত দিনের রিমান্ড প্রয়োজন।
এদিকে মঙ্গলবার আরও দুই চালকসহ চার আসামিকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হলে আদালত আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন এবং রিমান্ড শুনানির জন্য আগামী ৬ আগস্ট দিন ধার্য করেন।
কারাগারে যাওয়া আসামিরা হলেন, মো. এনায়েত হোসেন (চালকের সহকারী), মো. সোহাগ আলী (বাসচালক), মো. রিপন হোসেন (চালকের সহকারী) ও মো. জোবায়ের (বাসচালক)।
রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আবদুল্লাহপুর-মোহাম্মদপুর রুটে চলাচলকারী জাবালে নূর পরিবহনের তিনটি বাসের রেষারেষিতে এ দূর্ঘটনা ঘটে। এতে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল করিম রাজিব ও একই কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম নিহত হন।
এ ছাড়া আরও অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। ওই ঘটনায় রোববার রাতেই রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় নিহত দিয়া খানম মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আদালত সূত্র জানায়, শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজের ২০-২৫ জন শিক্ষার্থী হোটেল র্যাডিসন ব্লুর বিপরীত পাশে ফ্লাইওভার থেকে নামার মুখে যে বাসস্ট্যান্ড সেখানে দাঁড়িয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস সেখানে আসে।
কিছুক্ষণ পর একই পরিবহনের আরেকটি বাস দ্রুতগতিতে এসে দাঁড়িয়ে থাকা বাসটিকে ওভারটেক করতে গিয়ে টার্ন নেয় এবং নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। নিমিষে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের ওপর উঠে যায় বাসটি। কেউ চাকার নিচে পিষ্ট হয়, কেউ ধাক্কা খেয়ে ছিটকে পড়ে।
আহত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে করিম ও মিমকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
খবর ৭১/ইঃ