জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

0
269

খবর৭১ঃ
জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে শুক্রবার বিকাল ৪টায় সংবাদ সম্মেলন তিনি এ কথা বলেন।

ব্রুনাই দারুসসালামে তিন দিনের সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই শ্রীলংকায় হামলায় নিহতদের কথা এবং জায়ানের কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ব্রনাই সফরে থাকা অবস্থায় তিনি প্রথমে হামলার খবর পান। পরে জায়ানের মৃত্যুর খবর পান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমি এই নৃশংস হামলার নিন্দা জানিয়ে শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রীকে শোকবার্তা পাঠাই। এই কাপুরুষোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানাই।

তিনি বলেন, এই জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে জনমত সৃষ্টি ও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিসভার সদস্যদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারাও সেখানে উপস্থিত আছেন।

সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন ব্রুনাইয়ের সুলতান। রোহিঙ্গা সমস্যার ন্যায়সঙ্গত সমাধানে গুরুত্বারোপ করেন তিনি। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আশিয়ান, আঞ্চলিক ও বিশ্ব নেতাদের সহযোগিতা কামনা করি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের একটা চুক্তিও হয়েছে। যে মুহূর্তে রোহিঙ্গা যাওয়ার কথা সেই মুহূর্তে তারা প্রতিবাদ শুরু করল যে, তারা যাবে না। রোহিঙ্গারা ফেরত গেলে চীন, ভারত ও জাপান তাদের জন্য ঘরবাড়ি করে দিতেও তারা রাজি। প্রত্যেক দেশেই কিন্তু তাদের কিছু কিছু রিফিউজি আছে। এদের সঙ্গে আমি আলোচনা করেছি।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক তিনটি সংস্থাকে বলেছি আপনারা রোহিঙ্গাদের জন্য কিছু করতে চাইলে মিয়ানমারের মাটিতে করেন। এখানে মিয়ানমারের সরকারেরও একটা প্রচণ্ড অনীহা দেখা দিচ্ছে। এ ধরনের সমস্যা কিন্তু কিছু লোক রিফিউজিদের লালনপালন করার জন্য যতটা আগ্রহ দেখায় ফেরত পাঠানোর জন্য কিন্তু ততটা আগ্রহ দেখায় না।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি স্পষ্ট ওই তিন সংস্থার প্রতিনিধিদের বলে দিয়েছি, সামনে আমাদের বর্ষাকাল যদি দুর্ঘটনা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে এদের ক্ষতি হয় তাহলে দায় কে নেবে? ওই সংস্থাগুলোরও তো নেয়ার দরকার? আমি এ কথাটা জাতিসংঘকেও জানিয়েছি।

সংবাদ সম্মেলনে ব্রুনাই সফরের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্রুনাইয়ের পক্ষে সুলতান আমার প্রস্তাবের পক্ষে সম্মতি জানান এবং একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। সেই সঙ্গে দু’দেশের মধ্যে ব্যবসা বাড়াতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর বিষয়ে সম্মত হন।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, দু’দেশের মধ্যে আর্থিক খাতে উন্নয়ন ও সামরিক খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য আমরা একমত হই। দু’দেশের জনগণের মধ্যে নিবিড় যোগাযোগের বিষয়ে আমরা একমত হই। বিগত এক দশক ব্রুনাইয়ের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্রুনাইয়ের সুলতান বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

প্রসঙ্গত ব্রুনাইয়ের সুলতান হাসানাল বলকিয়ার আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২১ থেকে ২৩ এপ্রিল ব্রুনাই সফর করেন। সফরে দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার ছয়টি সমঝোতা স্মারক সই এবং কূটনীতিক ও সরকারি কর্মকর্তাদের ভিসা ছাড়া ভ্রমণের সুযোগ দিতে কূটনৈতিক নোট বিনিময় হয়েছে।

সই হওয়া সমঝোতাগুলো হচ্ছে- কৃষি, মৎস্যসম্পদ, প্রাণিসম্পদ, শিল্প ও সংস্কৃতি, যুব ও ক্রীড়া খাতের সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং এলএনজি ও এলপিজি সরবরাহের লক্ষ্য।

প্রধানমন্ত্রী সফরে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের ফোরামে বক্তব্য দেন। দেশে ফেরার দিন সকালে শেখ হাসিনা ব্রুনাইয়ের রাজধানীর কূটনৈতিক এলাকায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের নতুন চ্যান্সেরি ভবনের ভিত্তিস্থাপন এবং রয়েল রেজালিয়া জাদুঘর পরিদর্শন করেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here