ছাত্রলীগ নেতা রনির হাতে অধ্যক্ষ লাঞ্ছিত, ফেসবুকে ভিডিও ভাইরাল

0
274

খবর ৭১:চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ জাহেদ খানকে লাঞ্ছনাকারী ছাত্রলীগ নেতা নুরুল আজিম রনির সমালোচনার ঝড় বইছে। বাড়তি ফি আদায় বন্ধের নামে রোববার কলেজে প্রবেশ করে অধ্যক্ষ জাহেদকে চড়-থাপ্পড় ও ঘুষি মারেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রনি। অধ্যক্ষকে এভাবে মারধর করার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও সাধারণ ছাত্ররা বলছেন, রনির এমন আচরণে ছাত্রলীগ কলঙ্কিত হচ্ছে। একের পর এক অপকর্ম করার পরও রনি ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। তাদের প্রশ্ন- রনির খুঁটির জোর কোথায়?

সূত্র জানায়, পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে উন্নয়ন ফি’র নামে অতিরিক্ত ৫ হাজার টাকা আদায় করছে চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজ। এ টাকা না দিলে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র দেয়া হচ্ছে না- এমন অজুহাতে রনি যথারীতি দলবল নিয়ে রোববার দুপুরে চকবাজারে বিজ্ঞান কলেজ ক্যাম্পাসে যান। সেখানে ছিলেন চকবাজার থানার একদল পুলিশও। কলেজ অধ্যক্ষ জাহেদ খানের শার্টের কলার চেপে ধরে তার (জাহেদ) কক্ষে নিয়ে যান রনি। এরপর গালে সজোরে থাপ্পড় মেরে তাকে চেয়ারে বসিয়ে দেন। একপর্যায়ে তার ঘাড় চেপে ধরেন তিনি এবং ফিরে আসার সময় মারেন ঘুষি।

জাহেদকে মারধরের এই ভিডিও ফুটেজ কলেজ ক্যাম্পাসে থাকা সিসিটিভিতে পাওয়া যায়। এই ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহে আছে। মঙ্গলবার কয়েকটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে অধ্যক্ষকে মারধরের এ সংবাদ সচিত্র দেখানো হয়।

অধ্যক্ষ জাহেদ খান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রনি তার পেছনে লেগেছে। অতিরিক্ত ফি আদায় বন্ধের নামে রনি তার প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতে চায়।

অধ্যক্ষ বলেন, অন্যায় কিছু করলে আইন-আদালত আছে। প্রশাসন আছে তারাই ব্যবস্থা নেবে। তিনি আরও বলেন, ‘রোববার তাকে মারধর করার পর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানেও লোক পাঠায় রনি। আমাকে হাসপাতাল থেকে বিনা চিকিৎসায় ফিরে আসতে বাধ্য করেছে। আমাকে মারধর করে উল্টো আমার বিরুদ্ধেই থানায় প্রতারণার মামলা করেছে রনি। দেখে মনে হচ্ছে আমরা মগের মুল্লুকে আছি।’

অধ্যক্ষকে মারধর প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সহসম্পাদক ইয়াসিন আরাফাত বাপ্পী বলেন, ছাত্রদের যৌক্তিক দাবি আদায়ে ছাত্রলীগ আন্দোলন করলে সেটা ঠিক আছে। কিন্তু সংগঠনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে একজন অধ্যক্ষের গায়ে হাত তোলাটা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। কারণ এর মাধ্যমে তার সঙ্গে যেসব ছাত্রলীগ কর্মী উপস্থিত ছিলেন তাদের কাছে কী মেসেজ গেল। শিক্ষকের গায়ে হাত তোলা যাবে। শিক্ষক খারাপ না ভালো, অতিরিক্ত ফি আদায় করছে কিনা তা দেখার জন্য শিক্ষা বোর্ড আছে, জেলা প্রশাসন আছে। দেশের প্রচলিত আইন আছে। মহানগর ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক তো আইন হাতে তুলে নিতে পারেন না। এ ঘটনায় ছাত্রলীগ কলঙ্কিত হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

এসব বিষয়ে জানতে রনির মোবাইল ফোনে মঙ্গলবার একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

অধ্যক্ষকে মারধরের ছবি ও সংবাদ সোমবার প্রকাশ হওয়ার পর রনি ব্যুরো প্রধানকে ফোন করে চ্যালেঞ্জ করেন, ‘আমি অধ্যক্ষকে ঘুষি মেরেছি বা মারধর করেছি সেটি আপনি প্রমাণ করতে পারবেন। যে ছবিটি প্রকাশ করা হয়েছে সেটি কী প্রমাণ করে আমি তাকে মেরেছি।’ এ বিষয়ে তার লিখিত বক্তব্য পাঠাতে বললে তিনি কোনো প্রতিবাদ পাঠাবেন না বলে জানান। তবে অধ্যক্ষকে মারধরের ভিডিও ফুটেজ হাতে আসার পর রনির দেয়া চ্যালেঞ্জের বিষয়ে জানার জন্য একাধিকবার ফোন করলেও তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি।

খবর ৭১/ এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here