ছাতক প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে ওষুধ ও জনবল সংকট, ব্যাহত হচ্ছে খামারিদের উত্পাদন লক্ষ্যমাত্রা

0
230

হাবিবুর রহমান নাসির, ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জের ছাতকে প্রাণিসম্পদ অফিসে প্রয়োজনীয় উপকরণ, ওষুধ, চিকিত্সকসহ জনবল সংকটের কারণে সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন উপজেলার প্রায় ৮৫ হাজার পরিবারের হাঁস-মোরগ, গরু মহিষ, ছাগল-ভেড়া, কবুতর-কোয়েল খামারসহ অন্যান্য গৃহপালিত প্রাণী। প্রাণিসম্পদ অফিসের দেওয়া তথ্য মতে, ১৩ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত ছাতক উপজেলায় তালিকাভুক্ত গরুর খামার ১৮টি। এছাড়া ব্যক্তিগত পর্যায়ে গড়ে উঠা ছোট-বড় মিলে আরো রয়েছে ৬০-৬৫টি খামার রয়েছে। ছাগলের খামার ৩টি, হাঁসের খামার ২শ’টি ও মোরগের খামার রয়েছে ৩ শতাধিক।

ছাতক উপজেলায় মোট গরু রয়েছে ৩ লাখের অধিক, মহিষ ৬ হাজার, ছাগল ৭ হাজার, ভেড়া ৪ হাজার, হাঁস ২ লাখ, মোরগ ৩ লাখ, কবুতর ৪ হাজারসহ অন্যান্য গৃহপালিত পশু-পাখি রয়েছে আরো লক্ষাধিক। সরকারি হিসাব মতে, গৃহপালিত প্রাণীর সংখ্যা মোট ৭ লাখ ১৮ হাজার হলেও এর চেয়ে অনেক বেশি প্রাণী রয়েছে এ উপজেলায়। সরকার প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কৃষকদের গবাদি পশু ও খামারিদের পরামর্শ প্রদান, ওষুধ বিতরণসহ সরকার সার্বিক সহযোগিতা করে আসছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় উপকরণ, জনবল, ওষুধ ও চিকিত্সক সংকটে পিছিয়ে পড়েছে এখানের ডেইরি ও পোল্ট্রি খামারিসহ উত্পাদনকারিরা।

উপজেলার দোলারবাজার, জাউয়া, দক্ষিণ খুরমা, ভাতগাঁও, সিংচাপইড় ও ছৈলা-আফজালাবাদ ইউনিয়নের একাধিক খামারি জানান, তারা কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে আমেরিকান ব্রাহমা জাতের গরু উত্পাদন করতে আগ্রহী। কিন্তু এখানে কোনো ভেটেরিনারি ডাক্তার না থাকায় সেবাপ্রাপ্তি থেকে তারা বি ত হচ্ছেন। ইসলামপুর ও নোয়ারাই ইউনিয়নের খামারিরা বলেন, সুরমা নদী ও দুর্গম যাতায়াত ব্যবস্থার ফলে পশু-পাখি নিয়ে অন্য হাসপাতালে আসা-যাওয়া কষ্টকর ও ব্যয়বহুল। সদরে এসে ডাক্তার নিয়ে যাওয়া সময় সাপেক্ষের ব্যাপার। অনেক সময় দেখা গেছে— ডাক্তার নিয়ে বাড়ি পৌঁছার আগেই পশু মারা গেছে। এজন্যে তারা প্রত্যেক ইউনিয়নে একজন করে পশু চিকিত্সক ও পরামর্শক নিয়োগের জন্যে সরকারের কাছে দাবিও জানান।

ছাতক প্রাণিসম্পদ অফিসে ১১টি পদের মধ্যে ৮টি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। তিন জন কর্মকর্তা-কর্মচারী দিয়েই অফিসের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ১ জন, ভেটেরিনারি কম্পাউন্ডার ১ জন, এফএএআই ১ জনসহ ৩ জন কর্মকর্তা দায়িত্বরত থাকলেও ভেটেরিনারি সার্জন ১ জন, ভিএফএ ৩ জন, ইউএলএ ১ জন, অফিস সহকারী ১ জন, ড্রেসার ১ জন, এমএলএসএস ১ জনসহ অফিসের প্রধান ৮টি পদ শূন্য রয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাসুদ করিম সিদ্দিকী জানান, এখানে অধিকাংশ পদ শূন্য থাকায় বিভিন্ন রকম সেবা প্রদানে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। পৌরসভার নিজস্ব প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা না থাকায় পৌরবাসীকেও তারা অতিরিক্ত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। প্রয়োজনের তুলনায় ওষুধ বরাদ্দ কম ও আধুনিক যন্ত্রপাতির সংকট রয়েছে এখানে। ফিল্ড অফিসার না থাকায় ১৩ ইউনিয়নের বিশাল এলাকায় গিয়ে তাদের পশুর চিকিত্সা সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

খবর ৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here