ছাতকে আওয়ামীলীগ নেতা ফারুক মিয়া হত্যাকান্ড মামলা নিতে পুলিশের গড়িমশি

0
257

হাবিবুর রহমান নাসির, ছাতক প্রতিনিধিঃ
ছাতকে আওয়ামীলীগ নেতা ও ব্যবসায়ী ফারুক মিয়া হত্যাকান্ডের ঘটনায় থানা পুলিশ মামলা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার ৫দিন অতিবাহিত হলেও রহস্যজনক কারনে পুলিশ মামলা না নেয়ায় হত্যাকান্ডের আইনী বিচার পাওয়া নিয়ে শংখিত হয়ে পড়েছেন নিহতের পরিবার। মামলার বাদীনী নিহত ফারুক মিয়ার স্ত্রী রেহেনা বেগমের অভিযোগ, মামলার এজাহার থানার বড়কর্তার(অফিসার্স ইনচার্জ) মোটেই পছন্দ হয়নি। যে কারনে ওসি সাহেব অভিযোগের ভাষা পরিবর্তন ও একজন আসামীর নাম বাদ দিয়ে অভিযোগ দায়ের করতে পরামর্শ দিয়েছেন। ফারুক মিয়া খুনের মুল পরিকল্পনাকারীকে রক্ষা করতেই থানা পুলিশ নানান অজুহাত দেখিয়ে মামলা নিতে গড়িমশি করছে বলে নিহতের পরিবার দাবী করছেন। মামলার বাদীনীও এজাহার পরিবর্তন বা আসামীর নাম পরিবর্তন না করার শর্তে অটল রয়েছেন। ফলে ফারুক মিয়া হত্যাকান্ডের ঘটনায় এখন থানা পুলিশ ও নিহত ফারুক মিয়ার পরিবার আইনী লড়াইয়ে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। এদিকে উপজেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠন আওয়ামীলীগ নেতা ফারুক মিয়া হত্যাকান্ডের মুল পরিকল্পনাকারী এমপি মুহিবুর রহমান মানিকের চাচাতো ভাই ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবীতে মিছিল-সমাবেশ অব্যাহত রেখেছে। এরই অংশ হিসেবে আজ বুধবার বিকেলে শহরে বিশাল শোক র‌্যালী ও দলীয় কার্যালয়ে প্রতিবাদ সভা করবে উপজেলা আওয়ামীলীগ। শুক্রবার রাতে নিখোঁজ হওয়া আওয়ামীলীগ নেতা ও ব্যবসায়ী ফারুক মিয়া’র (৪৫) ভাসমান লাশ রোববার উত্তর খুরমা ইউনিয়নের পাতলাচুড়া বিল থেকে উদ্ধার উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার সকালে বিলের কচুরিপনার উপর পড়ে থাকা ফারুক মিয়ার ব্যবহৃত জুতা ও লুঙ্গি হত্যাকান্ডের আলামত হিসেবে জব্ধ করে পুলিশ। জবাই করে নির্মমভাবে হত্যা করা ফারুক মিয়ার লাশের সর্ব অঙ্গে ছিল ভয়াবহ আঘাতের চিহ্ন। খুনীরা ফারুক মিয়ার ক্ষত-বিক্ষত লাশ গুম করার লক্ষে হাত-পা বেঁধে পাতলাচুড়া বিলে লাশের সাথে ইট বেঁধে পানিতে তলিয়ে দিয়েছিল। একটি নির্মম হত্যাকান্ডের ঘটনায় মামলা নিয়ে পুলিশ গড়িমশি করায় নিহতের পরিবার মানষিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন। এদিকে খুনের ৫দিন গড়িয়ে গেলেও ফারুক মিয়া হত্যাকান্ডের জড়িত খুনীদের গ্রেফতার করতে পারছে না পুলিশ। আলোচিত এ হত্যাকান্ড নিয়ে পুলিশের ভুমিকা সাধারন মানুষকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক এক ব্যক্তি জানান, সোমবার রাতে আওয়ামীলীগ নেতা ফারুক মিয়া হত্যাকান্ডের ঘটনায় স্ত্রী রেহেনা বেগম বাদী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদসহ ১০জনের নাম উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ থানায় নিয়ে গেলে ছাতক থানার ওসি আতিকুর রহমান এজাহার গ্রহন করেননি। এজার থেকে ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদের নাম বাদ দিয়ে এবং এজাহারে ভাষাগত কিছু পরিবর্তন করে অভিযোগ দায়ের কথা বলেন ওসি। এসময় থানার ওসি(অপারেশন) ও একজন এসআই মোবাইল ফোনে লিখিত এজারের ছবি তুললে থানার অভ্যন্তরেই পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দর বাক-বিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে মোবাইল থেকে এজাহার কপির ছবি ডিলেট করতে বাধ্য হয় ওই দু’কর্মকর্তা। বাদী পক্ষের লোকজন সংঘত কারনেই প্রশ্ন তুলেছেন অভিযোগপত্র গ্রহন না করে অভযোগ পত্রের ছবি তুলে থানার ওই দু’ কর্মকর্তা কাকে দেখিয়ে খুশি করতে চাচ্ছেন। আওয়ামীলীগ নেতা নিহত ফারুক মিয়া হত্যাকান্ডের মামলা নিয়ে পুলিশের নাটকিয়তা নিয়ে উপজেলা জুড়েই বইছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। অপর দিকে আওয়ামীলীগ নেতা ফারুক মিয়া হত্যাকান্ডের ঘটনায় মামলা নিয়ে পুলিশের গড়িমশির বিরুদ্ধে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছেন।
উল্লেখ্য উপজেলা উত্তর খুরমা ইউনিয়নের পুরান মৈশাপুর গ্রামের মৃত মাষ্টার আব্দুস সাত্তারের পুত্র, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যবসায়ী ফারুক মিয়া নিজ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার পথেনিখোঁজ হন। শনিবার সকালে পাতলাচুড়া বিলের কচুরিপনায় পড়ে থাকা তার ব্যবহৃত জুতা ও লুঙ্গি পাওয়া যায়। রোববার পাতলাচুড়া বিল থেকে তার ভাসমান লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ব্যাপারে ছাতক থানার ওসি আতিকুর রহমান জানান, মামলাটি প্রকৃয়াধীন রয়েছে। যেকোন সময় অভিযোগটি মামলা আকারে গ্রহন করা হবে। এসএসপি সার্কেল দুলন মিয়া জানান, ফারুক মিয়া হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে চাই। অভিযোগটি প্রকৃয়াধীন আছে। শীঘ্রই এফআইআরভুক্ত করা হবে।##

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here