ছাতকে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই

0
951

হাবিবুর রহমান নাসির ছাতক,সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। প্রতি বছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবসে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনোটিতে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরী করে দিবস পালন করা হয়। রাষ্ট্রভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠার প্রায় ৬৬বছর পরও এখানের শিক্ষা প্রতিষ্টানে শহীদ মিনার নির্মান না হওয়ায় অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। আবার অনেক প্রতিষ্ঠানে যথাযথ ভাবে দিবসটি পালনই করা হচ্ছে না। উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ১৬৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৬টি মাদ্রাসাসহ ১০-১৫টি বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন রয়েছে। ১৬৭ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে হাতে গুণা ক’টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার থাকলেও দেড় শতাধিক বিদ্যালয়ে এখনো নির্মাণ হয়নি শহীদ মিনার । এছাড়া ১৬টি মাদ্রাসার মধ্যে কোনটিতেই শহীদ মিনার নেই মুনিরজ্ঞাতি উচ্চ বিদ্যালয়, শাহজালাল উচ্চ বিদ্যালয়, জনতা উচ্চ বিদ্যালয়, একতা উচ্চ বিদ্যালয়, জালালাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়, ছাতক ইউনিয়ন এসইএসডিপি মডেল হাই স্কুল, হাফিজ আব্দুল গণি তালুকদার নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বড়কাপন আটগ্রাম নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হাজী রইছ আলী উচ্চ বিদ্যালয় ও সি বি পি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা জানান, তাদের বিদ্যালয়ে কোন শহীদ মিনার নেই। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসসহ বিভিন্ন দিবসে এসকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো কোনোটিতে অস্থায়ীভাবে বাশ, কাঠ ও কলাগাছ দিয়ে শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনার তৈরী করে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে আসছে। আবার কোনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় শুধু আলোচনা সভা বা মিলাদ মাহফিলের মধ্য দিয়েই এসব জাতীয় দিবস পালন করা হয়। একতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু হেনা জানান, ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি এলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রতি বছরের ২০ফেব্রুয়ারি বাঁশ দিয়ে বিদ্যালয়ের মাঠে শহীদ মিনার তৈরি করে। ২১ ফেব্রুয়ারি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মিলে বাঁশ দিয়ে তৈরি করা অস্থায়ী শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানান। হাফিজ আব্দুল গণি তালুকদার নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জগদীশ চন্দ্র দত্ত বলেন, তাদের প্রতিষ্টানে শহিদ মিনার না থাকায় মাতৃভাষা দিবস এলে তারা গোবিন্দগঞ্জ আব্দুল হক স্মৃতি ডিগ্রি কলেজে গিয়ে তারা জাতীয় দিবস উদযাপন করেন। জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর কাদির জানান, তাদের প্রতিষ্টানের শহীদ মিনার বর্তমানে ভাঙ্গা ও পরিত্যাক্ত অবস্থায় রয়েছে। জাতীয় দিবসে তারা অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার তৈরী করে দিবস পালন করেন। ছাতক জালালিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল আহাদ জানান, ভূমি স্বল্পতার জন্য তাদের প্রতিষ্টানে শহীদ মিনার তৈরি এখনো সম্ভব হয়নি। কিছু দিনের মধ্যেই শহীদ মিনার নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে বলে তিনি জানান। এব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মানিক চন্দ্র দাস জানান, এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন তিনি। কর্তৃপক্ষ আশ^স্থ করেছেন দ্রুতই প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণে উদ্যোগ নেয়া হবে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পুলিন চন্দ্র রায় ভারতে সফররত থাকায় অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেহের উল্লাহ জানান, সারা দেশে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্টানে শহীদ মিনার নেই। সরকারিভাবে কোন অনুদান না থাকায় শিক্ষা প্রতিষ্টান গুলোতে শহীদ মিনার নির্মান করা সম্ভব হচ্ছেনা।
খবর ৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here