চৌগাছা হাসপাতালের আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন আবারও বন্ধ দূর্ভোগে রোগীরা

0
253

স্টাফ রিপোর্টার চৌগাছা (যশোর; যশোরের চৌগাছার দেশসেরা মডেল হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা দিনি দিন তলানীতে পৌছাতে শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাব, অসংখ্য চিকিৎসকের পদ দীর্ঘদিন শুন্য, সেবার মান নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন। এরমধ্যে দীর্ঘদিন অচল থাকা আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন সম্প্রতি চালু হলেও সেটি পুনরায় বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চল থেকে সেবা নিতে আশা শতশত রোগীরা সীমাহীন দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। কর্তৃপক্ষ জানান, আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনটি এখন ব্যবহারযোগ্য, তবে কিছু সামস্যার কারেন সেটি চালু রাখা সম্ভব হচ্ছেনা।
সংশ্লিষ্ঠ সূত্র থেকে জানা গেছে, স্বাস্থ্য সেবায় অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করায় সীমান্তবর্তী উপজেলা চৌগাছার ৫০ শয্যা হাসপাতাল ১০ বারের মত দেশ সেরা হওয়ার গৌরব অর্জন করে। কিন্তু নানা কারনে আজ হাসপাতাল তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। বিশেষ করে একাধিক চিকিৎসকের পদ খালি থাকায় চিকিৎসাসেবা চরম ব্যহত হচ্ছে। ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাড়িয়ে থেকেও অনেকে ডাক্তারের সাথে কথা পর্যন্ত বলতে পারছেনা। যারা ডাক্তারের পরামর্শ পাচ্ছেন তারা হাসপাতাল থেকে পাচ্ছে না পরীক্ষা নিরিক্ষা করতে। ফলে রোগীদের দূর্ভোগ চরমে উঠেছে। সূত্র জানায়, সেবার মান উন্নয়নে ২০১০ সালের শুরুতে হাসপাতালে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় থেকে একটি অত্যাধুনিক আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন দেয়া হয়। কিন্তু সে সময় রহস্যজনক কারনে এই মেশিনটি স্বাস্থ্য সেবায় ব্যবহার করা হয়নি। হাসপাতালের সাবেক আবাসিক মেডিকেল অফিসার নানা ত্রæটি দেখিয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনটি বন্ধ রাখেন বলে অভিযোগ ছিল। ডাক্তারদের নিজস্ব ডাইগোনষ্টিক প্রতিষ্ঠান থাকায় হাসপাতালের মেশিনটি কৌশলে বন্ধ রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ। যার ফলশ্রæতিতে স্থানীয় জনগন সাবেক সংসদ সদস্যকে বিষয়টি অবহিত করেন। এ অবস্থায় সাবেক আবাসিক মেডিকেল অফিসার তড়িঘড়ি করে যশোর সদর হাসপাতাল থেকে পুরানো মডেলের একটি মেশিন এনে চালু করেন। কিন্তু মেশিনটি চালু করার কিছুদিনের মধ্যেই পুনরায় বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে বছরের পর বছর আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন ছাড়াই চলে সেবা কার্যক্রম। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক অত্যাধুনিক মেশিনটি অবহেলার কারনে ৮ বছর ধরে অচল হয়ে পড়ে থাকায় স্বাস্থ্যসেবা ব্যহত হচ্ছে। প্রথম দিকে বলা হতো, অত্যাধুনিক আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনটি চালানোর জন্য অভিজ্ঞসম্পন্ন কোন লোকজন নেই। ফলে এটি চালু করা সম্ভব হচ্ছেনা। খোড়া অজুহাতে বছরের বছর পাড়ি দেয় এই মেশিনটি। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যমন্ত্রনালয়কে বিষয়টি লিখিতভাবে জানানোর পর অবশেষে কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। সূত্র জানায়, মন্ত্রনালয় থেকে এক্সপার্ট এসে দু,দফায় মেশিনটি মেরামত করে তা চালু করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেয়া। কিন্তু মাত্র ২০ দিনের মধ্যে তা পুনরায় বন্ধ হয়ে যায়। হাসপাতালের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মেশিন এখন ঠিক আছে তবে কিবোর্ডে বিদ্যুৎ আসছেনা। যার ফলে আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনটি বন্ধ রাখা হয়েছে। একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, হাসপাতালের বেশ কিছু চিকিৎসক বাইরে প্রাকটিস করেন। হাসপাতালের মেশিনটি চালু থাকলে তাদের ব্যবসার ক্ষতি হবে। যে কারনে ওই মেশিনটির উপর কারনে অকারনে অদৃশ্য ভূত ভর করে। মেশিনটি বন্ধ থাকার কারনে বহু রোগী তাদের কাংখিত সেবা পাচ্ছেন না। এ বিষয়ে হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সেলিনা বেগমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন অত্যাধুনিক মেশিনটি অচল ছিল। আমরা বারবার লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর সেটি ঠিক করা হয়েছে। বর্তমানে মেশিনটি ভালো আছে। শুধুমাত্র কিবোর্ডে কিছুটা সমস্যা আছে। তবে অচিরেই সেটি পুরোপুরি ভাবে চালু করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here