চৌগাছায় লক্ষমাত্রার চেয়ে ২শ হেক্টর কম জমিতে ইরি ধানের চাষ হয়েছে

0
417

চৌগাছা (যশোর)ঃ যশোরের চৌগাছায় চলতি মৌসুমে লক্ষমাত্রার চেয়ে কম জমিতে ইরি ধানের চাষ হয়েছে বলে জানা গেছে। অন্যান্য ফসলের চাষ তুলনা মুলক বেড়ে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে ইরি ধান চাষের উপর মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে কৃষকরা মনে করছেন ধানের কাংখিত মুল্য না পাওয়ায় কৃষক ধান চাষে দিনদিন আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। যার ফলশ্রুততে এ বছর ধান চাষ কমে গেছে। তবে ধান চাষ কমে অন্য ফসলের চাষ বৃদ্ধি একটি ভাল দিক বলে মনে করছেন অনেকে।
সূত্র জানায়, চৌগাছার সব শ্রেনীর কৃষক প্রতি বছর শীত মৌসুম এলেই ইরি ধান রোপনে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। চলতি মৌসুমেও তার বিন্দু মাত্র কমতি ছিলনা, তবে রোপনকার্য শেষে দেখা গেছে এবছর লক্ষমাত্রার চেয়ে অন্তত ২শ হেক্টর কম জমিতে ইরি ধানের চাষ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৮ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে ইরি ধান রোপনের লক্ষ মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সেখানে ২শ হেক্টর কমে যেয়ে ১৮ হাজার ৩শ হেক্টর জমিতে ইরি ধানের চাষ হয়েছে। অন্য ফসল যেমন আলু, মসুর, গম, ভুট্টা চাষ বেড়ে যাওয়ায় ইরি ধানের চাষ কম বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ঠরা। তবে এ বছর যে সকল জমিতে ধান চাষ করা হয়েছে তা খুব অল্প দিনেই দেখতে খুবই ভাল হয়েছে বলে জানান কৃষকরা। রোপনকার্য শেষের ১ থেকে দেড় মাসেই প্রতিটি এলাকার মাঠের পর মাঠ এখন সবুজে সবুজে ভরে উঠেছে। বিশেষ করে সম্প্রতি বৃষ্টিপাতের ফলে রোপনকৃত ধান বেশি ভাল হয়েছে বলে মনে করছেন চাষিরা। গতকাল উপজেলার বাঘারদাড়ি, তানরনিবাস, বেলেমাঠ, জিওয়লগাড়িসহ বেশ কিছু এলাকার মাঠে যেয়ে দেখা যায় সেখানকার চাষিরা ইরি ধানের ক্ষেত পরিচর্জায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ সময় কথা হয় বেলেমাঠ গ্রামের কৃষক আজগার আলীর সাথে। তিনি বলেন, এ জনপদের মানুষ বরাবরই অন্য যে কোন ফসলের তুলনায় ধান চাষে বেশ মনোযোগী। কৃষকরা তিন মৌসুমে তিন ধরনের ধান চাষ করেন। তা হলো শীতে ইরি ধান, বর্ষা মৌসুমে আমন ধান আর আউশ ধান। এরমধ্যে ইরি ধান চাষে মানুষ বেশি আগ্রহী। কারন হিসাবে তিনি বলেন, ইরি ধানে পরিশ্রম ও খরচ বেশি হলেও ফলনও বেশি হয়। যদি বাজারে ধানের দাম ভাল থাকে তাহলে কৃষক স্বস্তি পাই। তবে এ বছর ধান চাষ কিছুটা কমে গেছে বলে তিনি জানান। ধান চাষের জমিতে এ বছর গম আর মসুর চাষ বেশি হয়েছে। আর এক কৃষক শাহাবুদ্দিন বলেন, এ বছর অল্প দিনেই প্রতিটি জমির ধান সবুজ হয়ে ক্ষেত ভরে গেছে। কোন ধরনের প্রাকৃতিক দূর্যোগ না এলে এ বছর ধানের বাম্পার ফলন হবে মনে করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ইরি ধান উঠার সময় অর্থাৎ চৈত্র বৈশাখ মাসে আবহাওয়া কৃষকের অনুকুলে থাকে না। সে দিকটা বিবেচনা করে আমাদের অঞ্চলের চাষিরা কিছুটা আগেই ইরি ধান রোপনের করেছেন তাইতো প্রতিটি জমিতে ধান দেখতে বেশ ভাল লাগছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচ উদ্দিন বলেন, এ বছর লক্ষমাত্রার চেয়ে ২শ হেক্টর জমিতে ধান চাষ কম হয়েছে। কিন্তু এটি কম বলা যাবেনা। কারন গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে ধান চাষ বেশি হয়েছে। লক্ষমাত্রা কমে যাওয়ার কারন হিসাবে তিনি বলেন, কৃষকরা ধান চাষের পরিবর্তে আলু, ভুট্টা, মসুর চাষ বেশি করেছেন। অন্য ফসলের চাষ বেড়ে যাওয়াটাও একটি ভাল দিক বলে তিনি মনে করেন।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here