চৌগাছা (যশোর) সংবাদদাতা :যশোরের চৌগাছার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সাগরিকা খাতুন (২৫) মরণব্যাধী ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন। সাগরিকা খাতুন উপজেলার চাঁদপাড়া গ্রামের কৃষক নাজিম উদ্দিন ও মা রাশিদা বেগমের একমাত্র মেয়ে। অত্যান্ত মেধাবী সাগরিকা লেখাপড়া শেষ করে ২০১৭ সালের শেষের দিকে সরকারী প্রাইমারী স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা পদে চাকুরী পান। গরীব পিতার সংসারে ফিরে আসে সুখের সুবাতাস। কিন্তু হঠাৎ এক কালো মেঘে তাদের সেই সব সুখ ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে। চলতি বছরের প্রথম দিকে সগরিকার শরীরে ধরা পড়ে মরণব্যাধী ক্যান্সার। গোটা পরিবারে নেমে আসে এক ধরনের স্তব্ধতা। সন্তানকে সুস্থ্য করে তুলতে কৃষক পিতা সব ধরনের চেষ্টা করেছেন কিন্তু সাগরিকা এখনও সুস্থ্য হয়ে উঠেনি। সাগরিকার চাচা চৌগাছা রিপোর্টার্স ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক অমেদুল ইসলাম জানান, সাগরিকা অসুস্থ্য বোধ করলে তাকে প্রথমে যশোরে চিকিৎসা করা হয়, এরপর নেয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তার পাকস্থলী অপারেশন করেন চিকিৎসকরা। স্বাস্থ্যের কোন উন্নতি না হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে ভারতে নেয়ার পরামর্শ দেন। গত এপ্রিল মাসের ২১ তারিখে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাগরিকাকে নিয়ে যাওয়া হয় ভারতের ভ্যালোরে। সেখানে পরীক্ষা নিরিক্ষা করে চিকিৎসকরা তাকে দেশে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। কারণ তার ক্যান্সার মারাত্মক আকার ধারন করায় ভারতের চিকিৎসকরা এই পরামর্শ দেন বলে তিনি জানান। মেধাবী এই মুখ দিন দিন নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে। কৃষক নাজিম উদ্দিনের এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে টিপু সুলতান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র। আর মেয়ে সাগরিকা হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ে মাষ্টার্স শেষ করে মাত্র ৯ মাস আগে চাকুরীতে যোগদান করেছিলেন। বলাচলে দিনমজুরের কাজ করে ওই পিতা দুই সন্তানকেই মানুষের মত মানুষ করে গড়ে তোলার চেষ্টায় প্রায় সফল। কিন্তু যখন ওই পরিবারে সুখের সুবাতাস বইতে শুরু করে ঠিক সেই সময় নেমে আসে এক ধরনের অনিশ্চয়তা। সাগরিকার সুস্থ্য করে তুলতে তার সহপাঠি, আত্মীয় স্বজন ও সহকর্মীরা যে যেমন ভাবে পেরেছে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তার আশু সুস্থ্যতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করেছেন চৌগাছা রিপোর্টার্স ক্লাবের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ, পরিবার, সহপাঠী, সহকর্মী ও বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ।
খবর৭১/এস: