চৌগাছায় বিস্তৃর্ণ মাঠে ইরি ধানের ব্যাপক চাষ কৃষি উপকরনের দাম নিয়ে অসন্তোষ

0
565

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু চৌগাছা (যশোর) : যশোরের চৌগাছার বিস্তৃর্ণ মাঠে চলতি মৌসুমে ইরি ধানের ব্যাপক চাষ হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। গত দুই বছরে ধানের দাম ভাল থাকায় এ বছর কৃষক ধান চাষের দিকে বেশি ঝুকে পড়েছেন। গত বছরের চেয়ে এ বছর প্রায় চার হাজার হেক্টর বেশি জমিতে ধান চাষ করা হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারনে রবি শষ্য নষ্ট, গম ও মশুর চাষ আশংকাজনক ভাবে কমে যাওয়ায় ধান চাষ বেশি বলে ধারনা করা হচ্ছে। তবে কৃষি উপকরনের দাম বেশি থাকায় ধান চাষে লাভ নিয়ে বেশ শংকায় আছেন কৃষকরা।
সূত্র জানায়, চলতি ইরি বোরো মৌসুমে উপজেলায় ব্যাপক ভাবে ইরি ধানের চাষ লক্ষ করা গেছে। উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় বিস্তৃর্ণ মাঠে চাষ হয়েছে ইরি ধানের। গত দুই বছরে ধানের বাজারদর ভাল থাকায় ধান চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া চলতি মৌসুমে রবি শষ্য বৈরী আবহাওয়ার করনে জমিতেই নষ্ট হয়ে গেছে, পাশাপাশি মশুর ও গমের চাষ আশংকাজনক ভাবে কমে যাওয়াতে ইরি ধানের চাষের দিকে কৃষকরা ঝুকে পড়েছেন। যে সব জমিতে এর পূর্বে গম চাষ হয়েছে সেখানে চাষ করা হয়েছে ধানের। আবার অনেক এলাকায় যেখানে মশুর চাষ করা হত সেখানে মশুরের পরিবর্তে চাষ করা হচ্ছে ইরি ধানের। তবে বরাবরাই কৃষি উপরকন সার, সেচ, কীটনাশকের দাম নিয়ে বেশ অভিযোগ রয়েছে কৃষকের। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে উপজেলায় মোট ১৮ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে ইরিধানের চাষ করা হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৪ হাজার হেক্টর বেশি। গত বছর চাষ হয়েছিল ১৪ হাজার ৭শ হেক্টর জমিতে। মাটির গুনাগুন ও এলাকা বিশেষ বিভিন্ন জাতের ধানের চাষ লক্ষ করা গেছে। তবে ব্রি ২৮, ব্রি ৫০, ব্রি-৫৮, ব্রি ৬৩, কাজল লতা, সুভল লতা, মিনিকেট, বাসমতি, সিনজেনটা ১২০৩ ও তেজগোল্ড জাতের ধানের চাষ তুলনা মুলক বেশি হয়েছে। উপজেলার জগদীশপুর, ফুলসারা, পাশাপোল, স্বরুপদাহ, সুখপুকুরিয়া, ধুলিয়ানী ইউনিয়নে ইরি ধানের চাষ বরাবরই বেশি হলেও চলতি বছরে প্রতিটি ইউনিয়নেই চাষ হয়েছে ধানের। প্রতিটি গ্রামের কৃষকের এখন চলছে ব্যাপক ব্যস্ত সময়। গতকাল পৌর এলাকার জিওলগাড়ি, বেলেমাঠ, ইছাপুর, বিশ্বাসপাড়া মাঠে গেলে দেখা যায় কৃষক যে যার মত ক্ষেত পরিচর্জায় ব্যাপক ব্যস্ত সময় পার করছেন। চলতি মৌসুমে ধান কিছুটা আগে রোপন করায় প্রতিটি ধান ক্ষেত সবুজে সবুজে ভরে উঠেছে, এমনকি কিছু কিছু জমিতে ধানের শীষ বের হতে শুরু করেছে। বসন্তের সকলে শিশির ভেজা ধান ক্ষেত এক অপুরুপ সৌন্দর্য বহন করছে। ক্ষেতে কর্মরত কৃষক আব্দুল গনি, আজগার আলী, সামছুল আলম জানান, ইরি ধান যেমন বেশি ফলন হয় তেমনি খরচও হয় বেশি । তারা বলেন, ১ বিঘা জমি কোন কৃষক যদি লিজ বা বর্গা নিয়ে চাষ করেন তাহলে ওই কৃষকের ১৫ থেকে ১৭ হাজার টাকা ব্যয় হয়। ধান রোপনের আগে জমি তৈরী থেকে শুরু হয় খরচ আর ধান গোলায় না তোলা পর্যন্ত এই খরচ চলতে থাকে। আবাহাওয়া অনুকুলে থাকলে ও বাজারদর যদি ভাল থাকে তাহলে কৃষকের এই কষ্ট তখনই সার্থক হবে বলে কৃষকরা জানান। তারা বলেন, বর্তমানে সার কীটনাশকের যে দাম তা তুলনা মুলক অনেক বেশি, কম নেই পানির দামও। কৃষি উপকরনের দাম কম থাকলে কৃষক লাভবান হতো বলে তারা মনে করেন। তবে সব থেকে বেশি প্রয়োজন আবহাওয়া অনুকুলে থাকা। কারন আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে লাভ লুকসান যাই হোক ধান ঘরে উঠবে এটিই হচ্ছে বড় শান্তনা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচউদ্দিন জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় লক্ষমাত্রার বেশি জমিতে ইরি ধানের চাষ হয়েছে। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ব্লক সুপারভাইজাররা নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন। কৃষকের চাষ কাজে কোন সমস্যা দেখা দিলে তারা তাতক্ষনিক সমাধান দিচ্ছেন। আবহাওয়া ভাল থাকলে ইরি চাষে কৃষক বেশ লাভবান হবেন বলে তিনি মনে করছেন।

খবর ৭১/ ই:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here