চৌগাছায় তুলা খামারে ফটক নির্মান নিয়ে চার গ্রামের মানুষের বিক্ষোভ

0
181

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু চৌগাছা (যশোর) : যশোরের চৌগাছার তুলাবীজ বর্ধন খামার এলাকার মানুষ ফুঁসে উঠেছে। কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিপনার কারনে স্থানীয় চারটি গ্রামের মানুষ সহ এলাকাবাসীর চলাচলে চরম সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শতশত শিক্ষার্থীরা পড়েছে মহাবিপাকে। সোমবার খামরের পূর্ব-উত্তর পাশে ফটক নির্মানের দাবীতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও চার গ্রামের মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। কয়েক ঘন্টা বিক্ষোভের পর খামার কর্তৃপক্ষ অবশেষে নির্মানাধীন প্রাচীরের কাজ স্থগিত করেছে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে।
সূত্র জানায়, আশির দশকে বাংলাদেশের সাবেক সফল রাষ্ট্রনায়ক বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান চৌগাছার জগদীশপুর গ্রামে তুলা গবেষনা ও বীজবর্ধন খামারটি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ঐতিহ্যবাহি এই খামারের ভিতরের সড়ক দিয়ে আড়কান্দি, কান্দি স্বর্পরাজপুর ও মির্জাপুর সহ আড়পাড়া, মাড়–য়া, দক্ষিনসাগর গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে আসছে। বিকল্প কোন রাস্তা না থাকায় এলাকাবাসি খামারের সড়ক দিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হয়। সেই থেকে খামারের তিনটি অংশের গেইট দিয়ে এই চলাচলা অব্যহত থাকে। সে সময় তারকাটা দিয়ে খামারটি সংরক্ষন করা হয়েছিল। কিন্তু খামার কর্তৃপক্ষের অবহেলা, উদাসিনতা ও রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে অনেক স্থানে তারকাটা নষ্ট হয়ে যায়। বিষয়টি উর্ধতন কতৃপক্ষ জেনে খামারের চারিপাশ প্রাচীর দেবার সিদ্ধান্ত নেয়। এই প্রাচীর দেবার লক্ষে কয়েক কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। প্রাচীর নির্মান বাস্তবায়নের জন্য ইতোমধ্যে প্রাচীরের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু মির্জাপুর পূর্ব-উত্তর অংশে একটি গেইট নির্মান নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হয়। সূত্র জানিয়েছে, আড়কান্দি, কান্দি স্বর্পরাজপুর ও মির্জাপুর গ্রামের মানুষ ও শিক্ষার্থীরা খামার কর্তৃপক্ষের নিকট একটি গেইট রাখার জন্য দাবী করে আসছে। যাতে এলাকার ছেলেমেয়েরা জগদীশপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে পারে। একই সাথে এলাকার মানুষ চলাচল করতে পারে। কিন্তু এলাকাবাসির এই দাবীকে উপেক্ষা ও কর্ণপাত না করে ওই অংশে প্রাচীর নির্মান কাজ অব্যহত রাখে। এই অবস্থায় সোমবার সকালে এলাকার কয়েক হাজার শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসি খামার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করে। বিক্ষোভকারীরা এ সময় খামারের ম্যানেজারসহ সকল কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। কয়েকঘন্টা বিক্ষোভ চলার পর স্থানীয় গন্যমান্য ও অভিভাবকদের সাথে সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিদ্ধান্ত মোতাবেক মির্জাপুর অংশে গেইট বরাবর প্রাচীর নির্মান স্থগিত করা হয়। এ ব্যাপারে কান্দি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম জানান, এলাকাবাসির দাবী যৌক্তিক। শতশত ছেলেমেয়ে ওপার অংশের জগদীশপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। বিদ্যালয়ে যাবার জন্য বিকল্প তেমন সড়ক নেই। তাই মির্জাপুর অংশে একই গেইট খুবই দরকার। তিনি বলেন এলাকার শতশত মানুষ খামারের জমি দিয়েছেন। তৎকালীন সময়ে তা অধিগ্রহণ করা হয়। কিন্তু জনগনের সমস্যা সৃষ্টি করে খামখেয়ালিপনায় খামার কতৃপক্ষ চলবে তা হতে পারেনা। তিনি বলেন আপাতত কাজ স্থগিত রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে খামারের ম্যানেজার শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইতোপূর্বে গেইট ছিল ঠিকই কিন্তু প্রাচীর নির্মানে ওই অংশে গেইট রাখতে হবে এমন কোন নির্দেশনা নেই। তাই কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়া আমরা গেইট নির্মান করতে পারিনা। এলাকাবাসির কথা বিবেচনা করে আপতত প্রাচীর নির্মান কাজ স্থগিত করা হয়েছে। তবে আমরা তাদেরকে বলেছি সেখানে গেইট নির্মানের জন্য দ্রুত নির্দশনা নিয়ে আসতে।

খবর ৭১/ এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here