চৌগাছায় তাসলিমার লাশ উদ্ধারের ঘটনায় থানায় মামলা, চাঞ্চল্যকার তথ্য

0
248

খবর৭১:স্টাফ রিপোর্টার চৌগাছা (যশোর) ॥ যশোরের চৌগাছায় শার্শা উপজেলার টেংরালি গ্রামের তাসলিমা খাতুনের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। সোমবার নিহতের পিতা আব্দুর রাজ বাদি হয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় একজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আসামী করে এই মামলাটি করেন। মামলা নং ২০, তারিখ ১৯-১১-২০১৮। মামলার আসামীকে আটকে পুলিশ ব্যাপক তোড়জোড় শুরু করেছেন। তবে মামলার তদন্তের স্বার্থে আসামীর নাম প্রকাশে অপরাগতা প্রকাশ করেছে থানা পুলিশ। এ দিকে হত্যাকান্ডটি নিয়ে বেশ চাঞ্চল্যকার সব তথ্য বের হতে শুরু করেছে।
থানা সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ নভেম্বর রবিবার চৌগাছা-মহেশপুর সড়কের জিসিবি আদর্শ কলেজের পাশে পুকুরমাঠ নামক ফাঁকা মাঠ থেকে প্রথমে অজ্ঞাত হিসাবে তাসলিমা খাতুনের লাশ উদ্ধার করেন থানা পুলিশ। সোমবার দুপুরে উদ্ধারকৃত লাশের পরিচয় পাওয়া যায়। সে যশোরের শার্শা উপজেলার ডিহি ইউনিয়নের টেংরালি গ্রামের আব্দুর রাজের মেয়ে তাসলিমা খাতুন (৩৮)। নিহতের পিতা আব্দুর রাজ চৌগাছা থানায় এসে লাশ সনাক্ত করেন এবং ওই দিনই নিহতের পিতা বাদি হয়ে সংশ্লিষ্ঠ থানায় একজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। স্পর্শকাতর এই হত্যা মামলার তদন্ত ও আসামী গ্রেফতারের স্বার্থে আসামীর নাম প্রকাশে পুলিশ অপরাগতা প্রকাশ করেন। তবে মামলার আসামীকে আটকে জোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছেন। একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, নির্মম হত্যার শিকার তাসলিমা খাতুন ছিলেন একজন বিবাহিত মহিলা ও তিন সন্তানের জননী। শার্শা উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের বিল্লাল হোসেন তার স্বামী। বিল্লাল হোসেন দীর্ঘ দিন ধরে মালায়েশিয়াতে থাকেন। স্বামী মালায়েশিয়ায় থাকলেও স্ত্রীর সাথে তার কোন যোগাযোগ ছিল না। অভাবের সংসারে নিহত তাসলিমা খাতুন পাশ্ববর্তী ঝিকরগাছায় একটি ডাল মিলে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এরই মধ্যে পরিচয় হয় চৌগাছার বদেখাঁনপুর গ্রামের জৈনক এক বখাটে ছেলের সাথে। বখাটে ছেলে হিসাবেই এলাকায় তার রয়েছে পরিচিতি। সরকারী দলের ছত্রছায়ায় থেকে একাধিক অপরাধমূলক কাজ করেছেন বলেও জানান স্থানীয়রা। এ ঘটনার পর হতে মূলহোতা ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে গেছে।
পরিচয় সূত্রে একপর্যায় তাসলিমা এবং ওই বখাটে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের পর বেশ কয়েকবার সে চৌগাছার বদেখাঁনপুর গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে আসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। গত ১৭ নভেম্বর শনিবার তাসলিমা তাদের বিয়ের সমুদয় কাগজপত্র সঙ্গে নিয়ে চৌগাছার শ্বশুর বাড়িতে আসার জন্য ঝিকরগাছা থেকে বিকালে রওনা হয়। ধারনা করা হচ্ছে সে রওনা হওয়ার পূর্বে চৌগাছার ওই বখাটে স্বামীর সাথে কথা বলেই রওনা দেন। সন্ধার পর চৌগাছা বাজার হতে তাসলিমাকে সাথে করে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে ঘটনাস্থলে নিয়ে তাকে শ্বাসরোধ ও মাথায় আঘাত করে হত্যা করে ওই মাঠের মধ্যে লাশ ফেলে রেখে ঘাতকরা চলে যায়। এই হত্যাকান্ডে একের অধিক ব্যক্তি অংশ নেয় বলে ধারনা করা হচ্ছে। তাসলিমাকে হত্যার পর তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের সিমকার্ড ঘাতকরা নিয়ে যায় এবং মোবাইল ফোন তার ভ্যানেটি ব্যাগে রেখে যায়। হত্যাকান্ডের পর হতে মামলার এজাহারভুক্ত আসামী ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা এলাকা থেকে আত্মগোপনে চলে গেছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসি। পুলিশ আসামী আটকে রয়েছেন বেশ তৎপর। এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চৌগাছা থানার তদন্ত ওসি উত্তম কুমার বিশ্বাস বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে। মামলার এজাহারভুক্তি আসামীকে আটকের চেষ্টা চলছে। তাকে আটকের পর এই হত্যার সাথে আর কারা জড়িত তা জানা যাবে।

খবর৭১/জি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here