চৌগাছায় জেলা পরিষদের জমিতে মার্কেট নির্মানের সিদ্ধান্তে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন কিছু অসাধু ব্যক্তি

0
298

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু চৌগাছা (যশোর)ঃ যশোরের চৌগাছায় জেলা পরিষদের জমিতে সরকারী ভাবে মার্কেট নির্মানের ঘোষনায় একটি অসাধু মহল ব্যাপক দৌড়ঝাপ শুরু করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সরকারী ওই জমিতে যাতে কোন মার্কেট নির্মান না হয় তার জন্য এই দৌড়ঝাপ বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। সরকারী ওই সম্পত্তি একটি অসাধু মহল দখলে নিয়ে বছরের পর বছর ব্যবসা করে আসছেন। খালি জমিতে কাঠ ব্যবসায়ীদের কাঠের গুড়ি রাখার অনুমতি দিয়ে ওই মহলটি প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকা রোজগার করে এসেছেন। এখন মার্কেট নির্মানের খবরে তারা বেসামাল হয়ে পড়েছে। ওই মহলটি খোড়া অজুহাত দেখিয়ে মার্কেট নির্মান বন্ধের লক্ষে ইতোমধ্যে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। স্থানীয়রা সরকারী ওই সম্পত্তিতে মার্কেট নির্মান করে তা জনসাধারনের মাঝে বরাদ্দ দেয়ার দাবি জানান। পাশাপাশি ওই অসাধু মহলের অবৈধ আয় বন্ধেরও দাবি জানান।
স্থানীয় সূত্র জানায়, পৌর এলাকার পারবাজারে মৃধাপাড়া মহিলা কলেজ সংলগ্নে জেলা পরিষদের জমি বিদ্যমান। ওই জমি স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বছরের পর বছর নিজেদের দখলে রেখেছেন। শুধু দখল না তারা সমুদয় জমি কাঠ ব্যবসায়ীদের কাছে মাসিক হারে ভাড়া দিয়ে প্রতি মাসে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা চাঁদা তুলছেন। উত্তোলনকৃত টাকা জেলা পরিষদ কখনো পাইনা। কাঠ ব্যবসায়ীরা জমিতে বড়বড় কাঠের গুড়ি রেখে স্বাভাবিক চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি জেলা পরিষদ ওই জমিতে মার্কেট নির্মানের লক্ষ্যে সেখানে মাপযোগ সম্পন্ন করার পাশাপাশি নির্মান কাজ শুরু করেছেন। নির্মান কাজ শুরু করায় অসাধু ওই মহলটি বেসামাল হয়ে পড়েছে। তারা ইতোমধ্যে কলেজের নাম ভাঙিয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, চৌগাছা পৌরসভাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদনও করেছেন বলে তথ্যসূত্রে জানা গেছে। আবেদনে তারা উল্লেখ করেছেন, মহিলা কলেজের সামনে যদি মার্কেট নির্মান করা হয় তাহলে কলেজের ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ায় পাশাপাশি মেয়েদের কলেজে যাতায়াতে বিঘœ সৃষ্টি হবে। এমনকি ওই সম্পত্তি স্থানীয় মুধাপাড়া মহল্লার কয়েকজন ব্যক্তির বলেও দাবি করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এই আবেদনের সাথে বাস্তবতার কোন মিল নেই বলে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এলাকাবাসি জানান, জেলা পরিষদ দীর্ঘদিন পরে একটি ভাল সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছেন। কেননা সরকারী ওই সম্পত্তি একটি মহল তাদের দখলে রেখে সেখানে কাঠ ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করার সুযোগ তৈরী করে দিয়েছেন। ফলে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বহুদিন ধরে। ওই মহলটি কাঠ ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে প্রতি মাসে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা ভাড়ার চাঁদা আদায় করে থাকেন। যখনই জেলা পরিষদ সেখানে মার্কেট নির্মানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তখনই মহলটির মাথা ব্যাথা শুরু হয়ে গেছে। ফলে তারা কলেজের দোহাই দিয়ে ওই জমি কব্জাই রাখার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিদিন সকাল থেকেই কাঠ ব্যবসায়ীসহ নানা শ্রেনীর মানুষের আনা গোনা লক্ষনীয়। ফলে কলেজের পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। শনিবার কলেজগামী একাধিক ছাত্রীর সাথে কথা হলে তারা বলেন, এই ফাকা জমিতে যদি মার্কেট নির্মান হয় তাতে ক্ষতির কিছু দেখছিনা। বরং এই জায়গায় কাঠ ব্যবসায়ী ও তাদের লোকজন সারাক্ষন অবস্থান নেয়ায় আমাদের কলেজে যাতায়াতে বেশ সমস্যার সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থীরা জেলা পরিষদের জায়গা দখলদারদের নিকট থেকে মুক্ত করে মার্কেট নির্মানের পক্ষে সম্মতি জ্ঞাপন করেন।
মৃধাপাড়া মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ড. এম মোস্তানিছুর রহমানের সাথে মুঠোফনে কথা হলে তিনি বলেন, জমিটি যেহেতু জেলা পরিষদের তাই কর্তৃপক্ষ সেখানে মার্কেট নির্মান করতে পারে। সেখানে মার্কেট হলে কলেজে মেয়েদের আসা যাওয়ায় সমস্যা সৃষ্টি হবে তাই আমরা একটি আবেদন করেছি। কাঠ ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে প্রতিমাসে টাকা আদায়ের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব অভিযোগ সত্য নয়। এ ব্যাপারে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জেলা পরিষদের জায়গা কেউ দখলে রাখতে পারবেনা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সকল ক্ষেত্রে ঢেলে সাজানোর জন্য নিরলস কাজ করছেন। যশোর জেলা পরিষদও একাত্বতা ঘোষনা করে নানা পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। ইতোমধ্যে আমরা জায়গাটি পরিদর্শন করেছি। মাপযোগ শেষ করে মার্কেট নির্মানের কাজও শুরু হয়ে গেছে। জনগনের কল্যানে জেলা পরিষদ কাজ করে। তাই ওই জায়গা কারো দখল করে নিজেদের আয়ত্বে রাখার কোন সুযোগ নেই।

খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here