মুকুরুল ইসলাম মিন্টু চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধিঃ যশোরের চৌগাছায় এক রাতেই তিন বাড়িতে দুঃসাহসিক ডাকাতি হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সংঘবদ্ধ ডাকাতদল রাত সাড়ে ১২ টা থেকে তাদের কার্যক্রম শুরু করে সাড়ে ৩টায় শেষ করেছে। এ সময় বাড়ি গুলো থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোনসেটসহ মূল্যবান মালামাল নিয়ে গেছে। কিছু দিন আগে সড়ক গুলোতে ডাকাতির উৎপাত থাকলেও হঠাৎ করে আবাসিক এলাকায় ডাকাতির ঘটনায় আতংক ছড়িয়ে পড়েছে মানুষ মাঝে। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে মানুষ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সূত্র জানায়, রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে চৌগাছা-যশোর সড়কের আহম্মদ নগর বাজারের উত্তর পাশে সিঙ্গাপুর প্রবাসী বিল্লাল হোসেনের বাড়িতে ৮/১০ জনের একদল ডাকাত হানা দেয়। তারা ঘরের দরজার হ্যাসবোল্ড ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে সকলকে জিম্মি করে ফেলে। এ সময় ওই বাড়িতে ছিলেন প্রবাসী বিল্লাল হোসেনর মা ফিরোজা বেগম, স্ত্রী রেহেনা বেগম ও স্কুল পড়–য়া মেয়ে রুবিনা খাতুন। তাদের সকলকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডাকাতদল টাকা চাইতে থাকে। বাড়িতে কোন নগদ টাকা না থাকায় ডাকাতরা ওই বাড়ি থেকে স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন নিয়ে চলে যায়। ডাকাত আতংকে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন প্রবাসীর স্ত্রী রেহেনা বেগম। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তিনি অসুস্থ্য বলে স্বজনরা জানিয়েছেন। বিল্লাল হোসেনের মেয়ে রুবিনা খাতুন বলেন, ডাকাতদের মধ্যে একজনের মুখ লাল গামছা দিয়ে বাধা ছিল। তিনিই ঘরের ভিতরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে আমাদের সকলকে জিম্মি করে ফেলে। রাত ১ টার দিকে ডাকাতরা পৌর এলাকার কলেজপাড়া মহল্লার বাসিন্দা চৌগাছা বাজারের বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী সন্ধানী ইলকট্রনিক্্র এর মালিক আবুল হোসেনের বাড়িতে হানা দেয়। ঘরে প্রবেশ মুখের দরজা ভাঙ্গার চেষ্টাকালে বাড়ি মালিক টের পেয়ে যায়। এ সময় তিনি চিৎকার চেচামেচি করলে মহল্লাবাসি ও ডিভাইন গ্রুপের নাইট গার্ডেরা ছুটে এলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়। বাড়ি মালিক আবুল হোসেন বলেন, ডাকাতরা চলে যাওয়ার সময় দরজার সামনে থেকে একটি সেলাইরেন্স ও ভাঙ্গা তালা উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি টের পাওয়াতে এই যাত্রা রক্ষা পেয়েছেন বলে মন্তব্য করেন। এদিকে রাত আনুমানিক ২ টার দিকে ডাকাতদল হানা দেয় পৌর এলাকার গা ঘেষা গ্রাম উত্তর কয়ারপাড়ার মৃত কওছার আলী বিশ্বাসের ছেলে রওশন আলী বিশ্বাসের বাড়িতে। বাড়ি মালিক রওশন আলী বিশ্বাস জানান, তিনি ঘরের বারান্দায় ঘুমিয়ে ছিলেন। ঘরে প্রবেশের গ্রীল গেটের তালা ভেঙ্গে ডাকাতরা তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলেন। এরপর প্রতিটি ঘরের দরজা খুলে বাড়ির সকলকে তারা বেধে ফেলে। ৮/১০ জনের এই ডাকাত দলের সকলেই ছিল মুখোশধারী ও পরনে ছিল হাফপ্যান্ট। তারা বাড়ির সকলে জিম্মি করে নগদ ৪০ হাজার টাকা, ৮ ভরি স্বর্ণালংকার ও ২ টি মোবাইল ফোনসহ মুল্যবান মালামাল নিয়ে যায়। তাদের চিৎকারে প্রতিবেশিরা ছুটে এসে বন্ধিদশা থেকে বাড়ির সকলকে উদ্ধার করেন। এক রাতেই পরপর তিনটি বাড়িতে ডাকাতের ঘটনায় আতংকিত হয়ে পড়েছেন মানুষ। এলাকাবাসি ভীতিকার এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তির জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এ বিষয়ে থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আকিকুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের কোন অভিযোগ এখনও পাওয়া যায়নি। বিষয়টির খোজ খবর নেয়া হচ্ছে, অভিযোগ পেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
খবর৭১/ইঃ