চৌগাছার সন্তান জহুরুল ইসলামকেই ধানের শীষের প্রার্থী দেখতে চাই এ জনপদের মানুষ

0
314

চৌগাছ (যশোর) প্রতিনিধি ॥ সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচন মুলত আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে মহাজোট ও বিএনপির নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে লড়াই হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এবারের নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে চৌগাছার সন্তান উপজেলা বিএনপির সভাপতি জহুরুল ইসলামকে প্রার্থী হিসাবে দেখতে চাই এ জনপদের বিএনপির নেতাকর্মীসহ সাধারণ জনতা। দেশ স্বাধীনের পর হতে এ যাবত সকল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছে পাশ্ববর্তী ঝিকরগাছা উপজেলা থেকে। তাই আসন্ন সংসদ নির্বাচনে চৌগাছা থেকেই ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী করার জন্য সংশ্লিষ্ঠদের আশু দৃষ্টি কামনা করেছেন উপজেলাবাসি।
সূত্র জানায়, ১৯৭৭ সালে সাবেক রাষ্ট্রপ্রতি শহীদ জিয়াউর রহমান যশোরের সদর, ঝিকরগাছা, ঝিনাইদহের মহেশপুর, কোটচাঁদপুর ও কালিগঞ্জ উপজেলা থেকে ১১ টি ইউনিয়নের সমন্বয়ে চৌগাছাকে থানায় রুপান্তরীত করেন। বর্তমানে এই চৌগাছায় একটি পৌরসভা ও এগারোটি ইউনিয়নে অন্তত সাড়ে ৩ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। চৌগাছা আর পাশ্ববর্তী ঝিকরগাছা উপজেলা নিয়ে জাতীয় সংসদ-৮৬ যশোর-২ সংসদীয় এলাকা গঠিত। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের পর বাঙালী স¦াধীন পতাকা আর শত্রুমুক্ত ভুখন্ড পেয়েছে সত্য। কিন্তু চৌগাছা উপজেলাবাসী একটি বারের জন্যও নিজ উপজেলা থেকে সংসদে নেতৃত্ব দেয়ার মত একজন মানুষকেও পায়নি। এই যন্ত্রনা তাইতো বারবার চৌগাছাবসীকে কুরে কুরে খাচ্ছে। সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত ১০টি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিটি নির্বাচনে চৌগাছার বাইরে থেকেই প্রার্থী করা হয়েছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ১৯৭০ সালের প্রথম সংসদ নির্বাচনে সংসদ নির্বচিত হন তবিবর রহমান সরদার। তিনি আওয়ামীলীগের টিকিট নিয়ে শার্শা থেকে এ আসনে এমপি হন। ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে তিনিই পুনারায় সংসদ নির্বাচিত হন। ১৯৮০ সালের নির্বাচনে যশোর সদর থেকে বদরুল আলা বিএনপির টিকিটে এখানে নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালে জামায়াত এর টিকিটি ঝিকরগাছার মকবুল হোসেন এই আসনে এমপি হন। এমনি ভাবে ১৯৮৮ সালে ঝিকরগাছার মীর শাহাদাতুর রহমান জাতীয় পাটি থেকে এমপি হন। ১৯৯১ সালে ওই ঝিকরগাছা থেকে আওয়ামীলেিগর টিকিটে অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রয়ারীর নির্বাচনে ঝিকরগাছা থেকে বিএনপির এ্যাড. মনিরুল হুদা সংসদ নির্বচিত হন। ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনে অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম আবারও এমপি নির্বাচিত হন। পাশাপাশি তিন বিদ্যুৎ ও জ্বালানী মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০০১ সালের নির্বাচনে ঝিকরগাছার মাও: আবু সাইদ মো: শাহাদৎ হুসাইন জামায়াতের টিকিটে সংসদ নির্বাচিত হন, ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেই ঝিকরগাছার মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ আওয়ামীলীগের টিকিটে এই আসনে সংসদ নির্বাচিত হয়। তিনি আইসিটি মন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ ১০ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝিকরগাছা থেকে আওয়ামীলীগের টিকিটে বর্তমান সংসদ সদস্য এ্যাড. মনিরুল ইসলাম মনির সংসদ সদস্য নির্বাটিত হন। প্রতিটি নির্বাচনে চৌগাছার মানুষ তাদের মুল্যবান ভোট দিয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য চৌগাছার বাইরে থেকে তাদের সাংসদ নির্বাচিত করেন। তাই আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ জনপদের মানুষ তথা বিএনপর ঘরোনার সকলেই এবার চৌগাছার সন্তান উপেেজলা বিএনপির সভাপতি জহুরুল ইসলামকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনী লড়াইয়ে মাঠে দেখতে চাই। সূত্র জানায়, দেশ স্বাধীনের পর হতে চৌগাছা উপজেলাবাসী ঝিকরগাছা উপজেলা থেকে বরাবরই অবহেলীত। রাজনৈতীক বিশ্লেষকরা মনে করেন চৌগাছার বাইরে থেকে এমপি হওয়ার কারনে চৌগাছা উন্নয়নসহ সকল কর্মকান্ড থেকে পিছিয়ে আছে। তাই আসন্ন নির্বাচনে উপজেলা শহর থেকে শুরু করে প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষের কন্ঠে একটিই সুর এবার যেন ভোটটি চৌগাছার সন্তানকেই আমরা দিতে পারি। সূত্র জানায়, ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসাবে ইতোমধ্যে বেশ কয়েক জনের নাম জোরে শোরে শোনা যাচ্ছে। যাদের নাম শোনা যাচ্ছে একমাত্র জহুরুল ইসলাম ছাড়া অন্য সকলেই বাইরের উপজেলার। তাই এই নির্বাচনে বিএনপি তথা উপজেলার সাধারণ জনতা উপজেলা বিএনপির সভাপতি জহুরুল ইসলামকেই ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী হিসাবে দেখতে চাই। এ বিষয়ে জহুরুল ইসলামের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি দীর্ঘ দিন বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। দীর্ঘ ২৫ বছর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। এখন আমি সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। নানা প্রতিকুলতার মধ্যেও দলকে সঠিক পথেই রেখে কাজ করে যাচ্ছি। সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি দলের মনোনয়ন ক্রয় করেছি, এ জনপদের মানুষের চাওয়াকে প্রাধান্য দিয়ে চেষ্টা করছি প্রার্থী হওয়ার জন্য। দল তথা জোট যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় তাহলে আমি আশাবাদি অবশ্যই আমরা বিজয়ী হবো। তবে দল যাকে মনোনয়ন দিবে দলের স্বার্থে এলাকার স্বার্থে আমরা তার পিছনে কাজ করবো বলে তিনি জানান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here