চৌগাছার ফাঁসতলা-কোটচাঁদপুর সড়কটির বেহালদশা, নির্মানের দাবি

0
246

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু ,চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধিঃযশোরের চৌগাছা উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়কের বেহালদশার কারনে জনদূর্ভোগ চরমে উঠেছে। প্রায় দুই দশক আগে সড়কটি নির্মান করা হয়। নির্মানের পর হতে আর কোন মেরামত না করায় সড়কের উপর পিচ খোয়া ইট উঠে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। বর্ষা মৌসুমে ওই সব গর্তে পানি জমে থাকার কারনে ছোট খাটো দূর্ঘটনা লেগেই আছে। সড়কের বর্তমান অবস্থা দেখে বুঝার উপায় নেই এই সড়কটি এক সময় পাকা ছিল। এলাকাবাসি সড়কটি দ্রুত মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সূত্র জানায়, উপজেলার আন্দুলিয়া পুড়াপাড়া ভায়া কোটচাঁদপুর সড়কটি এ অঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের অন্যতম একটি সড়ক। দেশ বিভাগের পর সড়কটির পুরো অংশই ছিল কাঁচা। পর্যায়ক্রমে সড়কটি সলিং এরপর পাকাকরণ করা হয়। বিগত চার দলীয় জোট সরকারের আমলে উপজেলার ফাঁসতলা হতে কোটচাঁদপুর পর্যন্ত গোটা সড়কটি পাকা করা হয়। সড়কটি পাকা করনের পর এ অঞ্চলের মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে। ব্যবসা বানিজ্যেও ঘটতে থাকে আমূল পরিবর্তন। যোগাযোগ ব্যাবস্থা ভাল হওয়ার ফলে অজ পাড়া গায়ের ছেলে মেয়েরা নিজ নিজ বাড়ি থেকে উপজেলা সদরে লেখাপড়া করতে পারত। কৃষক তার উৎপাদিত পন্য নিয়ে যথা সময়ে আসতে পারত চৌগাছার প্রথান বাজারে। কিন্তু সড়কটি বর্তমান যে বেহালদশা তাতে করে পায়ে হেঁটে চলাও যেন কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে উঠেছে। সড়কটির অধিকাংশ স্থানে পিচ ইট খোয়া উঠে সৃষ্টি হয়েছে বড়বড় গর্তের। বর্তমান বর্ষা মৌসুমে সব গর্তে পানি জমে বুঝার উপায় নেই কোথায় কেমন পরিমান ভাঙ্গা। ফলে প্রতিদিনই সড়কের কোন না কোন স্থানে দূর্ঘটনা লেগেই আছে। বিশেষ করে ছোট খাটো যানবাহন, ভ্যান রিকসা, ইজিবাইক, ভটভটি, নছিমন করিমন ও বাইসেকল চালকরা বেশি দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। ফাঁসতলা বাজার হতে বড়খাঁনপুর বাজার পর্যন্ত সড়কটি দেখে বুঝার উপায় নেই এই সড়কটি কোন এক সময় পাকা ছিল। স্থানীয়রা জানান, ভাঙ্গাচোরা এই সড়কটি এখন এলাকাবাসির গলার কাটায় পরিনত হয়েছে। প্রয়োজনের তাগিদে সড়কে উঠলেই কোন না কোন দূর্ঘটনার কবলে পড়তে হচ্ছে। স্কুল কলেজের ছেলে মেয়েরাসহ বয়োবৃদ্ধদের কষ্টের যেন শেষ নেই। চৌগাছা উপজেলা সদরের সাথে এমনকি পাশ্ববর্তী কোটচাঁদপুর উপজেলার সাথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই সড়ক। বর্তমান পরিস্থিতিতে অতি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ওই সড়ক ব্যবহার করছে না। স্থানীয় চাঁদপাড়া, গুয়াতলী, ফাঁসতলা, বাজেখাঁনপুর, বড়খাঁনপুর, হোগলডাঙ্গা, কেচমতখাঁনপুর গ্রামাঞ্চল কৃষি নির্ভর এলাকা হিসাবে পরিচিত। এ অঞ্চলের শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ সরাসির কৃষি কাজের সাথে জড়িত। কৃষকের উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করনে এক অভাবনীয় দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সময় মত তাদের উৎপাদিত ফসল বাজারে নিয়ে আসতে না পারায় ন্যায্য মুল্য থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছে। সড়কটির বেহালদশার কারনেই এই ক্ষতি বলে মনে করছেন কৃষকরা। শিক্ষার্থী মিমি খাতুন, মারুফ হোসেন, সাদ্দাম হোসেন জানান, সড়কটি ভেঙ্গে এখন চলাচলের উপায় নেই। অতি কষ্টে সড়ক পাড়ি দিয়ে আমাদের গন্তব্যে পৌছাতে হচ্ছে। তাই যত দ্রুত সম্ভব সড়কটি মেরামতের দাবি করেন তারা। কেসমতখাঁনপুর গ্রামের কৃষক মাসুম বিল্লাহ জানান, আমি মাঠে কাজ করার পাশাপাশি ছোটখাটো ব্যবসা করে সংসার চালাই। এলাকার চাঁদপড়া, খাঁপুরসহ বিভিন্ন বাজারে সবজি বিক্রি করি। বর্তমান এই সড়কের বেহালদশার কারনে বলাচলে ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। সাইকেলযোগে আমি বিভিন্ন বাজারে যেয়ে ব্যবসা করতাম। কিন্তু সড়কের এই পরিস্থিতিতে এখন আর সেভাবে চলাচল করতে পারিনা। ফাঁসতলা বাজারের ব্যবসায়ী বকুল হোসেন জানান, এই সড়ক দিয়ে আগে যাত্রীবাহি বাস সহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল করত। কিন্তু সড়কটি ভেঙ্গে যাওয়াতে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। সাধারণ মানুষের চলাচলও বহুলাংশে কমে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে ব্যবসা বানিজ্যসহ সব কিছুতেই। পথচারী হযরত আলী বলেন, সড়কটি দেখে কারও মনে হবে না এটি কোন এক সময় পাকা সড়ক ছিল। একদিনে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। বছরের পর বছর ধরে সড়কটির বেহাল অবস্থা তারপরও সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের নজর এদিকে নেই। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, আর কত খারাপ হলে সড়কটি মেরামত করা হবে ? এলাকাবসি জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দ্রুত পুনঃনির্মানের দাবি জানিয়েছেন।
খবর ৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here