চৌগাছার তিলেকপুর ভায়া আড়শিংড়ি পুকুরিয়া সড়কটির চরম বেহাল দশা, পাকাকরনের দাবি

0
369

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু, চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধিঃ যশোরের চৌগাছার অবহেলিত একটি গ্রামের নাম তিলেকপুর। গ্রামটির মাত্র দুই কিলোমিটার সড়কের বেহালদশার কারনে ওই এলাকার শতশত মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। সরকার গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়নে প্রতি বছরে লাখলাখ টাকা বরাদ্দ দিলেও তার ছিটেফোটাও এই গ্রামটিতে ব্যয় করা হয়নি বলে অভিযোগ। যার করনে বর্তমানে শুস্ক মৌসুমেও গ্রামটির ওই কাঁচা সড়কে পায়ে হেঁটে চলাও অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। অবর্ননীয় কষ্টকে উপেক্ষা করে এ জনপদের মানুষ প্রতিনিয়ত চলাচল করছেন। এলাকাবাসি গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দ্রুত পাকাকরনের জন্য সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
উপজেলার স্বরুপদাহ ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ একটি গ্রামের নাম তিলেকপুর। ভারত সীমান্তের গা ঘেষা এই গ্রামটির যোগাযোগ অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। উপজেলা সদর হতে ১২ কিলোমিটার দক্ষিন পশ্চিমে অবস্থিত তিলেকপুর গ্রাম। গ্রামটির পাশ দিয়ে ভারতের তার কাটার বেড়া। এই কাটা তারের বেড়ার পাশেই স্থাপন করা সার্স লাইট। রাতের আঁধারে সার্স লাইটের আলো তিলেকপুর গ্রামের মাঠকে আলোকিত করে রাখে। গ্রামের মাঝ দিয়ে একটি সড়ক আড়শিংড়ি পুকুরিয়া গ্রামের সাথে সংযুক্ত হয়েছে, যার দুরাত্ব মাত্র ২ কিলোমিটার। গ্রামবাসি সড়কটিকে তিলেকপুর ভায়া পুকুরিয়া সড়ক হিসাবে চেনে। দেশ স্বাধীনের পর স্বরুপদাহ ইউনিয়নের অসংখ্য সড়ক সলিংকরণ এমনকি পাকাকরণ করা হলেও আজ পর্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটিতে কোন কাজ করা হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। সরকার প্রতি বছর গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে লাখলাখ টাকা ব্যয় করলেও এলাকাবাসির জন্য জরুরী এই সড়কটির কোন উন্নয়ন করা হয়নি। এলাকাটি মুলত এঁটেলমাটিযুক্ত। যার কারনে অল্প বৃষ্টিতেই সড়কে চলাচল করা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠে। আর যদি বৃষ্টিপাত দীর্ঘ হয় সেক্ষেত্রে প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ওই সড়কে চলাচল করেননা। বর্ষা মৌসুম শেষ হওয়ায় পরও সড়কটি তার স্বাভাবিকতায় ফিরতে সময় লাগে অনেক। অভাবনীয় দুর্ভোগ সহ্য করে বছরের পর বছর মানুষ চলাচল করছেন এই সড়ক দিয়ে। সব থেকে বেশি কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে এলাকার কৃষক ও স্কুল কলেজের ছেলে মেয়েদের। তিলেকপুর গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন, আলাউদ্দিন জানান, ধান ও সবজি চাষে এলাকা বিখ্যাত। বর্তমানে সবজির পাশাপাশি নানা ধরনের ফল ফলালির চাষ করছেন এলাকার মানুষ। কিন্তু কৃষকের উৎপাদিত পন্য মাঠ থেকে বাড়ি এবং বাড়ি থেকে বাজারজাত করনে যে         ভোগান্তি        পোহাতে হয় ভাষায় প্রকাশ করার নয়। সময় মত উৎপাদিত সবজি বাজারজাত করনে ব্যর্থ হয়ে ন্যায্য মূল্য থেকে     বঞ্চিত           হচ্ছেন। তারা বলেন, তিলেকপুর ভায়া পুকুরিয়া সড়কটি এলাকাবাসির জন্য অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। কেননা এই সড়কটি দিয়ে পাশ্ববর্তী আন্দুলিয়া পুড়াপাড়া বাজারে যাওয়াতে ভূমিকা রাখে। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম এলেই তারা জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধর্না দেন। তারা আশ্বাস দেন এবারের কাজে সড়কটি সলিংকরণ করা হবে। কথায় শেষ কোন কাজ হয়না। এলাকার সফল ফল চাষি এনামুল কবির জানান, তিলেকপুর মাঠে তিনি ৯ বিঘা জমিতে ড্রাগন, ২০ বিঘা জমিতে পেয়ারা এবং ৩ বিঘা জমিতে শরিফা ফলের চাষ করেছেন। ইতোমধ্যে তিনি সব ধরনের ফল বাজারজাত করতে শুরু করেছেন। কিন্তু সড়কটির এই বেহাল দশার কারনে তার চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তিনি বলেন, সম্প্রতি কৃষি অফিসের কর্মকর্তাগন তার ক্ষেত পরিদর্শনে আসেন। তারা দুই কিলোমিটার দূরে গাড়ি রেখে তারপর ক্ষেতে পায়ে  হেঁটে     আসেন। সড়কটি দ্রুত পাকাকরনের দাবি জানান এই সফল চাষি। স্কুল ছাত্র পলাশ জানায়, তিলেকপুর গ্রামের এই সকটির কারনে তাদের অনেক কষ্ট হয়। বর্ষা মৌসুমে তারা সড়কটি দিয়ে চলাচল করতে পারেনা। সড়কটি দ্রুত সময়ের মধ্যে পাকা অথবা সলিং করার দাবি করে স্কুল ছাত্র পলাশ। এলাকাকাসি জানান, নির্বাচন এলে সবাই বলেন, ক্ষমতায় গেলে এই সড়কটি আগে পাকাকরণ করা হবে। কিন্ত নির্বাচন শেষ তো নেতাদের ওয়াদার সময়ও শেষ। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা শেখ মোঃ আনোয়ার হোসেনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি কথা দিয়েছিলাম, কথানুযায়ী কাজও করবো। ইতোমধ্যে সড়কটি পাকাকরনের জন্য মাপযোগ শেষ হয়েছে, আশা করছি নতুন ইট এলেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ওই সড়কটি নির্মান করা হবে।
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here