চৌগাছার গুরুত্বপূর্ণ দুটি সড়কে দীর্ঘদিন যাত্রীবাহি বাস চলাচল বন্ধ দূর্ভোগ চরমে

0
312

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু চৌগাছা (যশোর) :যশোরের চৌগাছার গুরুত্বপূর্ণ দুইটি সড়কে বাস চলাচল সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ থাকায় জন দূর্ভোগ চরমে উঠেছে। নানা কারনে বাস মালিক সমিতি সড়ক দু’টিতে সাময়ীক ভাবে তাদের বাস চলাচল বন্ধ রাখেন। সাময়ীক সেই বন্ধের সময়সীমা এখন বছরের পর বছর পার হতে বসেছে কিন্তু আজও স্বাভাবিক হয়নি বাস চলাচল। এলাকাবাসি পুনরায় সড়ক দুটিতে বাস চলাচাল স্বাভাবিক রাখার জন্য সংশ্লিষ্ঠ সকলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সূত্র জানায়, দেশ বিভাগের পরপরই সীমান্তবর্তী যশোরের চৌগাছা প্রথমে থানা পরে উপজেলাতে রুপ নেয়। স্বাধীনতার ৪৬ বছরে ভারত সীমান্তের গা ঘেষা এই উপজেলাতে অভুতপূর্ব উন্নতি হয়েছে। উপজেলা সদর হতে পাশ্ববর্তী উপজেলা ও জেলা সদরে যোগাযোগের জন্য ছয়টি সড়ক অসামন্য অবদান রেখে চলেছে। সড়কগুলো হচ্ছে চৌগাছা-যশোর, চৌগাছা-কোটচাঁদপুর, চৌগাছা-মহেশপুর, চৌগাছা-ঝিকরগাছা, চৌগাছা-পুড়াপাড় ও চৌগাছা-নাভারন সড়ক। সময়ের ব্যবধানে চৌগাছা উপজেলাতে বর্তমানে ৬৩ টি যাত্রীবাহি বাস আছে। এই সকল বাস প্রতিনিয়ত সড়ক গুলোতে তাদের সেবা প্রদান করে আসছে। কিন্তু ২০১৫ সালের দিকে এক প্রকার হঠাৎ করেই চৌগাছ-ঝিকরগাছা ও চৌগাছা-নাভারণ সড়কে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রথম দিকে সাময়ীক সমস্যার কারন দেখিয়ে চৌগাছা বাস মালিক সমিতি তাদের সেবা প্রদান বন্ধ করলেও সেই সময়সীমা প্রায় ২ বছর অতিক্রম হতে চলেছে। অথচও আজ পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক দুটিতে বাস চলাচল স্বাভবিক হয়নি। এরফলে জন দূর্ভোগ দিন দিন চরমে উঠেছে। চৌগাছা বাস মালিক সমিতির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়া সড়ক দুটি আমাদের জন্য অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই রুটে বাস চলাচল করলে যাত্রীরা যেমন উপকৃত হয়, তেমনি মালিকরাও লাভবান হত। কিন্তু নানা কারনে আমাদের সড়ক দুটিতে বাস চলাচল বন্ধ করতে হয়েছে। বিশেষ করে নছিমন, করিমন, আলমসাধু, থ্রিহুইলার সহ ছোট ছোট যানবাহনের কারনে আমাদের এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তিনি বলেন, চৌগাছা-ঝিকরগাছা রুটে মোহাম্ম্দপুর মোড় নামক স্থানে আমরা যাত্রাবিরতি করতান। সেখানে ১০ মিনিট বিরতী দিয়ে পুনরায় ঝিকরগাছার উদ্যোশ্যে বাস ছেড়ে যেত। কিন্তু সেখানে বিলম্ব করায় যাত্রীরা স্থানীয় ছোটখাটো বাহনে করে গন্তব্যে রওনা দেয়। এর ফলে মালিক সমিতি চরম ক্ষতির সম্মুখিন হতে থাকে। বাধ্য হয়ে ওই রুটে আমরা বাস চলাচল বন্ধ করতে বাধ্য হই। এখন চৌগাছা থেকে বাস ছেড়ে মোহাম্মদপুর থেকে আবার চৌগাছায় ফিরে আসে। অনুরুপ ভাবে চৌগাছা-নাভারন সড়কটিও বন্ধ হয়ে গেছে। এ ছাড়া সড়ক দুটিতে বাস চলাচলের অনুরুপ পরিবেশ নেই। চৌগাছা থেকে ২৫ কিলোমিটার দুরাত্ব এই সড়কের অধিকাংশ স্থান ভেঙ্গে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কের বর্তমান অবস্থার উন্নতি ও স্থানীয় সমস্যার সমাধান হলে পুনরায় বাস চলাচল স্বাভাবিক হবে বলে ওই নেতা জানান। সূত্র জানায়, চৌগাছা উপজেলা নানা দিক দিয়ে ব্যাপক গুরুত্ব বহন করে। এরমধ্যে ব্যবসা বানিজ্য, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান উল্লেখযোগ্য। এর কারনে দিন দিন চৌগাছায় জনবসতি বেড়েই চলেছে। এ ছাড়া চৌগাছার কাঁচা তরকারীর বাজার ও পশুহাট এ অঞ্চলের মধ্যে অন্যতম একটি হাট হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। নিজ উপজেলাসহ পাশ্ববর্তী উপজেলা থেকে প্রতিদিন মানুষ ছুটে আসেন উপজেলা সদরে। দিনের কাজ সেরে এই বিশাল মানুষের একটি অংশ ফিরে যান আপন ঠিকানায়। যোগাযোগ ব্যবস্থার চরম দুরবস্থার কারনে অভাবনীয় কষ্ট ভোগ করছেন তাদের। বিশেষ করে ঝিকরগাছা ও নাভারণ সড়কে চলাচলরত জনসাধারনের কষ্টের যেন শেষ নেই। এই সড়ক দুটিতে যাতায়াত করা মানুষ বছরের পর বছর জীবনের ঝুকি নিয়ে নছিমন করিমন আলমসাধুতে যাতায়াত করছেন। ভুক্তভোগী এলাকাবাসি অবিলম্বে সড়ক দুটিতে বাস চলাচল স্বাভাবিক করার জন্য সংশ্লিষ্ঠ সকলের সহযোগীতা কামনা করেছেন। এ বিষয়ে চৌগাছা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান বলেন, সড়ক দুটিতে আমরা আজ থেকেই বাস চলাতে প্রস্তুত কিন্তু সেটি তো সম্ভব হচ্ছেনা। ছোট ছেট বাহনের কারনে মালিক সমিতি চরম ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে। যখনই এই অবস্থার পরিবর্তন হবে ঠিক সেদিন থেকে আমরা সড়ক দুটিতে পুনরায় বাস চালাচল স্বাভাবিক করবো।

খবর ৭১/ ই:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here