চৌগাছার গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়কের বেহাল দশা, দ্রুত মেরামতের দাবি এলাকাবাসির

0
405

চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি : যশোরের চৌগাছা উপজেলার একটি ব্যস্ততম সড়কের চরম বেহালদশার কারনে মানুষের দূর্ভোগ চরমে উঠেছে। বছরের পর বছর মেরামত বা পুনঃনির্মানের উদ্যোগ গ্রহন না করায় সড়কটি চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কের উপর থেকে পিচ ইট খোয়া উঠে সৃষ্টি হয়েছে বড়বড় গর্তের। একটু বৃষ্টিতেই সেখানে জমে যাচ্ছে হাটু পানি । প্রতিদিন শতশত মানুষ এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করছেন। সড়কের বেহালদশার কারনে রোজাদারদেরও কষ্টের যেন শেষ নেই। তারপরও জীবন জীবিকার সন্ধানে মানুষ কষ্টকে উপেক্ষা করে চলাচল অব্যহত রেখেছেন। এলাকাবাসি জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দ্রুত পুনঃনির্মানের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সূত্র জানায়, চৌগাছার সার্বিক উন্নয়নে যোগাযোগ ব্যবস্থা অসামান্য অবদান রেখে চলেছে। বিশেষ করে চৌগাছা-যশোর, চৌগাছা-কোটচাঁদপুর, চৌগাছা- মহেশপুর ও চৌগাছা-ঝিকরগাছা সড়কটির অবদান সকলের উর্দ্ধে। কৃষিবান্ধব উপজেলা হওয়ার সুবাধে সপ্তাহের প্রায় প্রতি দিনই কৃষকের উৎপাদিত পন্য সামগ্রী এই সব সড়ক দিয়ে উপজেলা সদরে প্রবেশ করে। এমনই একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হচ্ছে চৌগাছা-পাশাপোল ভায়া মোহাম্মদপুর ঝিকরগাছা সড়ক। দুই উপজেলার মধ্যে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে এই সড়কটি। প্রায় ২৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এই সড়কের অধিকাংশ স্থান ভেঙ্গে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে চৌগাছা উপজেলা সদরের পুরাতন কৃষি ব্যাংকের সামনে থেকে শুরু করে, ছুটিপুর বাসষ্টান্ড, মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুঠিপাড়া মোড়, চাঁদপুর মোড়, মুলিখালী, গরীবপুরসহ অসংখ্য স্থানের সড়কের যে বেহালদশা তাতে যান চলাচল দুরের কথা সাধারণ মানুষের পায়ে হেটে চলা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। একটু বৃষ্টি হলেই সড়কের ভাঙ্গা স্থানে পানি জমে দূর্ভোগ আরও চরমে উঠছে। বাস যাত্রীদের দূর্ভোগ কিছুটা কম হলেও ছোট খাটো যানবাহনের যাত্রীদের কষ্টের কোন শেষ নেই। প্রতি নিয়ত এই সব ভাঙ্গাচোরা স্থানে এসে ভ্যান রিকসা, মটরসাইকেল বিকল হয়ে পড়া এখন অনেকটাই নিয়মে পরিনত হয়েছে। যে রাস্তা পাড়ি দিতে মানুষের ১০ মিনিট সময় লাগত, এখন সেই রাস্তা পাড়ি দিতে প্রায় ঘন্টা পার হয়ে যাচ্ছে। পাশ্ববর্তী ঝিকরগাছা উপজেলা ছাড়াও, শার্শা, বেনাপোল, সাতক্ষীরা অঞ্চলের মানুষজন এই সড়কটি ব্যবহার করেন। কিন্তু বছরের পর বছর কোন সংস্কার ছাড়াই পড়ে থাকায় এখন চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। চৌগাছা উপজেলার পাশাপাশি পাশ্ববর্তী উপজেলাতে উৎপাদিত পন্য সামগ্রী কৃষকরা ন্যায্য মুল্যের আশায় এখানে নিয়ে আসেন। এ সকল কৃষকের চাঁদপুর মোড় থেকে উপজেলা সদরে পৌছানো পর্যন্ত যেন নিঃশ্বাস বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। সড়কটির বেহালদশার কারনে কৃষকের পাশাপাশি সড়কে চলাচলরত সকল শ্রেনী পেশার মানুষ বিশেষ করে স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রীদের দূর্ভোগ সবার চেয়ে বেশি। কেননা তারা অধিকাংশ সময়ই পায়ে হেটে উপজেলার কোন না কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত যাতায়াত করছেন। সড়কটির বেহাল দশার কারনে অনেক সময় পার্শ্ব সড়ক দিয়ে তাদের গন্তব্যে পৌছাতে হচ্ছে। বছরের পর বছর একই অবস্থায় পড়ে থাকলেও এ পর্যন্ত কেউ সড়কটি মেরামতের উদ্যোগ নেইনি বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। স্থানীয়রা জানান, এখন পবিত্র মাহে রমজান মাস চলছে। রোজা রেখে অনেক নারী পুরুষ প্রয়োজনীয় কাজে ভ্যান কিংবা আলমসাধু নছিমন করে ছুটে আসছেন বাজারে। কিন্তু এই সড়কে আসার পর তারা যে কষ্ট পাচ্ছে তা ভাষায় প্রকাশ করা কষ্টসাধ্য। রাস্তাটির যে বেহালদশা তাতে করে মনে হচ্ছে সড়কটি অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। রোজা রেখে বাজারে আসা পাশাপোলের শিমুল হোসেন বলেন, পাশাপোল থেকে শুরু করে চৌগাছা পর্যন্ত সড়টির বেশ কিছু জায়গা ভাল আছে, তবে অধিকাংশ স্থান খুবই খারাপ। বিশেষ করে চৌগাছা চাঁনপুর থেকে মেইন বাজার পর্যন্ত সড়কের যে অবস্থা তাতে অতি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ এই সড়কে আসছে না বলে আমার মনে হচ্ছে। জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি দ্রুত পুনঃনির্মান অথবা মেরামতের জোর দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসি।
খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here