চৌগাছার কাঁঠাল যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দাম ভাল হওয়ায় খুশি সকলে

0
242

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু চৌগাছা যশোর; যশোরের চৌগাছায় চলতি মৌসুমে কাঁঠালের বাম্পার ফলন হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। মৌসুমের শুরু থেকে বাজারে কাঁঠালের ব্যাপক সমারোহ ঘটেছে যা এখনও বিদ্যমান আছে। অন্য যে কোন বছরের তুলনায় এ বছর কাঁঠালের বাজার দর ভাল থাকায় কৃষক বেশ খুশি। চৌগাছার উৎপাদিত কাঁঠাল ঢাকা, খুলনা, ভোলা, ঝালকাটি, পিরোজপুর, বরিশাল, বাগেরহাটসহ যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অ লে। জাতীয় ফল কাঁঠাল আরও বেশি বেশি উৎপাদনে উপজেলা কৃষি অফিস কর্তৃপক্ষ চাষিদের উদ্বুদ্ধ করতে নিরালস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
সূত্র জানায়, যশোরের চৌগাছা উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামই কাঁঠাল চাষের জন্য অত্যান্ত উপযোগী। এক সময় এ জনপদের মানুষ পতিত জমি কিংবা বাড়ির আশে পাশে শুধু নিজেদের প্রয়োজনে কাঁঠাল গাছ লাগাতো। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে বাজারে কাঁঠালের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় তা বানিজ্যিক ভাবে চাষ শুরু হয়েছে। চৌগাছার প্রত্যন্ত গ্রামা ালে কাঁঠাল ব্যাপক ভাবে উৎপাদিত হওয়ায় প্রত্যেক মৌসুমে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে ক্রেতা সাধারণ নিজ উদ্দ্যেগে চলে আসেন। এবারও তার ব্যাতিক্রম ঘটেনি। শুক্রবার সরেজমিন চৌগাছার মেইন কাঁঠাল হাটে যেয়ে দেখা যায় কাঁঠাল বেচা কেনায় ব্যস্ত এর সাথে সম্পৃক্ত সকলে। এ সময় কথা হয় কাঁঠাল বিক্রেতা উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের জয়নাল আবেদিনের সাথে। তিনি জানান, এ বছর আবহাওয়া ভাল থাকায় কাঁঠালের ফলন বেশ ভাল হয়েছে। মৌসুম শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত কাঁঠালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই বাজার দরও বেশ ভাল যাচ্ছে। তিনি জানান, বাজারে ছোট সাইজের ১শ কাঁঠল ২ থেকে ৩ হাজার আর বড় সাইজের ১শ কাঁঠাল ৭ থেকে ৮ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে মধ্যসত্তভোগীদের দৌরত্বে প্রকৃত কাঁঠাল ব্যবসায়ীরা কাংখিত দাম থেকে বরাবরই বি ত বলে অনেকে জানান। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার আড়পাড়া, মাড়–য়া, দক্ষিনসাগর, জগদীশপুর, মির্জাপুর, পাতিবিলা, মুক্তদাহ, নিয়ামতপুর, হয়াতপুর, হাজরাখানা, পেটভরা, নারায়নপুর, আন্দারকোটা, চাঁদপাড়া. বেলেমাঠ, কংশারীপুর, বড়খাঁনপুর, গুয়াতলী, কাবিলপুর, আন্দুলিয়া, মাধবপুর, বেড়গোবিন্দপুর, দেবীপুরসহ প্রত্যন্ত গ্রামা ালে ব্যাপক ভাবে কাঁঠালের চাষ হয়েছে। প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে যেমন ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালি, খেদাপাড়া, পাতারহাট, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, নোয়াখালী, পিরোজপুর, ভোলা, ঝালকাঠি জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা চৌগাছায় ছুটে আসেন। ভোলার দৌলতখাঁ থেকে আসা ব্যাপারী বজলুর রহমান জানান, অন্যান্য বাজারের তুলনায় চৌগাছায় ব্যবসা করে সকলেই বেশ লাভবান হয়। তাই মৌসুম শুরু হলে সকলেই এই হাটের দিকে ছুটে আসে। ভোলা জেলার সদর উপজেলা থেকে কাঁঠাল ক্রয় করতে আসা ব্যাপারী সাদেক হোসেন বলেন, চৌগাছার উৎপাদিত কাঁঠাল অন্য যে কোন এলাকার থেকে বেশ সুস্বাদু তাই এখানকার কাঠালের চাহিদা বাজারে বরাবরই একটু বেশি থাকে। একই কথা বলেন, খুলনার আব্দুল মালেক হাবিবুর রহমান, ঝালকাটির রহমান ব্যাপারী। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচউদ্দিন জানান, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় কাঁঠালের ফলন ভাল হওয়ার পাশাপাশি বাজারদর ভাল। কাঁঠাল চাষ আরও বৃদ্ধির লক্ষে উপজেলা কৃষি অফিস নিরালস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।
সূত্র জানায়, কাঁঠাল অত্যান্ত উপকারী একটি ফল। ছোট কাঁঠাল গ্রাম বাংলার সকলের কাছে পরিচিত ও সুস্বাধু তরকারী। বসন্তকাল থেকে গ্রীস্মকাল পর্যন্ত কাঁচা কাঁটাল ’ইচোড়’ সবজি হিসাবে খাওয়া যায়, পাকা ফল বেশ পুষ্টিকর, সুমিষ্টস্বাদ। কাঁঠালের আটি তরকারীর সাথে রান্না করে খাওয়া হয়, তবে পুড়িয়ে তা বাদামের মত খেতেও বেশ মজাদার। এর সুবিধা হলো অনেক দিন পর্যন্ত ঘরে রেখে বিভিন্ন তরকারীর সাথে মিশিয়ে রান্না করা যায়। পাকা কাঁঠালের কোষ সাধারনত খাওয়া হয়, তবে কোষ নিংড়ে তা শুকিয়ে আমসত্বের ন্যায় কাঁঠালসত্বও তৈরী করা যায়। এমনকি বর্তমান সময়ে কাঁঠল থেকে চিপস তৈরী করা হচ্ছে বলে সূত্র জানিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে কাঁঠালে আছে থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন, সোডিয়াম, জিংক এবং নায়াসিনসহ বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান। অন্যদিকে কাঁঠালে প্রচুর পরিমান অমিষ, শর্করা ও ভিটামিন থাকায় তা মানবদেহের জন্য বিশেষ উপকারী।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here