চৌগাছার কপোতাক্ষ নদের উপর পুরাতন বেইলি ব্রীজটি ঝুকিপূর্ণ ॥ মেরামতের দাবি

0
311

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু চৌগাছা (যশোর) ॥ যশোরের চৌগাছায় কপোতাক্ষ নদের উপর পুরতন বেইলি ব্রীজটি মরণফাঁদে পরিনত হয়েছে। ব্রীজের উপর বসানো লোহার পাত ভেঙ্গে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। জীবনের ঝুকি নিয়ে ভাঙ্গা অতিক্রম করে মানুষ প্রতিনিয়ত চলাচল করছে। পাশেই নতুন ব্রীজ নির্মান করা হলেও সেটি সাধারনের তেমন কোন উপকারে আসছে না বলে অভিযোগ। মেইন সড়ক থেকে নতুন ব্রীজের উচ্চতা অনেক বেশি হওয়ায় পথচারী ভ্যান-রিকসাসহ ছোটখাটো সকল যানবাহন এক প্রকার বাধ্য হয়ে পুরাতান বেইলি ব্রীজ দিয়ে যাতায়াত করছেন। বেইলি ব্রীজটি দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কারের দাবি করছেন এলাকাবাসি।
সূত্র জানায়, চৌগাছা উপজেলাকে দু’ভাগে বিভক্ত করে রেখেছে মহাকবি মাইকেল মধুসুধন দত্তের কপোতাক্ষ নদ। কপোতাক্ষ পারাপারের লক্ষে ১৯৮০ সালের দিকে তৎকালীন সরকার নদের উপর একটি বেইলী ব্রীজ নির্মান করেন। ব্রীজটি নির্মিত হওয়ার ফলে চৌগাছার সার্বিক উন্নয়নে তা অসামন্য অবদান রাখতে শুরু করে। সময়ের ব্যবধানে ওই বেইলি ব্রীজ দিয়ে ভারী যান চলাচলের ব্যাপক ঝুকি বেড়ে যাই। একপর্যায়ে এলাকাবাসি দাবির প্রেক্ষিতে নতুন ব্রীজ নির্মানের সিদ্ধান্ত হয়। সাবেক আইসিটি মন্ত্রী মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ নতুন ব্রীজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। নির্মিত হয় চৌগাছাবাসির কাংখিত সেই ব্রীজ এবং তা চলাচলের জন্য ছেড়ে দেয়া হয়। প্রায় এক বছর ধরে নতুন ব্রিজের উপর দিয়ে বাস, ট্রাকসহ ভারি সব ধরনের যানবাহন চলাচল করলেও ছোটোখাটো যানবাহন চলাচল এক প্রকার অঘোষিত ভাবে বন্ধ থাকে। নতুন ব্রীজটি নির্মান করা হয় অপরিকল্পিত ভাবে এমনটিই মনে করছেন এ জনপদের মানুষ। কেননা ব্রীজটি মুল সড়ক থেকে অন্তত ৮/১০ ফুট উচু করে নির্মান করা হয়েছে। যে পরিমান উচু করা হয়েছে সংযোগ সড়ক সে পরিমান ঢালু করা হয়নি। এর ফলে নতুন ব্রীজের উপর ইচ্ছা থাকা সত্বেও পথচারী, ভ্যান, রিকসা, আলমসাধু, নছিমন, করিমনসহ ছোট যানবাহন গুলো চলাচল করতে পারছে না। তারা বাধ্য হয়ে পাশেই পুরাতন বেইলি ব্রীজ দিয়ে যাতায়াত করছেন। নতুন ব্রীজ নির্মানের পর পুরাতন বেইলি ব্রীজের দিকে কর্তৃপক্ষের নজরদারি একেবারেই কমে গেছে। অভিভাবকহীন অবস্থায় বছরের পর বছর ব্রীজটি পড়ে আছে। ভেঙ্গে চলাচলের অনুপযোগী হলেও ব্রীজের উপর দিয়ে যাতায়াত কোন ক্রমেই থেমে নেই। একাধারে চলাচলের কারনে ব্রীজের উপর স্থাপিত লোহার পাত ভেঙ্গে সৃষ্টি হয়েছে বড়বড় গর্তের। জীবনের ঝুকি নিয়ে প্রতি দিনই মানুষ চলাচল করছে। এ কারনে ছোটখাটো দূর্ঘটনা লেগেই আছে। গতকাল সরেজমিন ব্রিজ সংলগ্নে যেয়ে এই দৃশ্য চোখে পড়ে। চৌগাছার পাঁচনামানা গ্রামের আলমসাধু চালক কামরুল ইসলাম বলেন, উপজেলার নারায়ানপুর গ্রাম থেকে গাছ নিয়ে চৌগাছার উদ্যেশ্যে রওনা হই। সড়কে কোন সমস্যা না হলেও এই ব্রীজের নিকটে এসে পড়েছি মহাবিপাকে। কারনে লোড নিয়ে বড় বীজে উঠা সম্ভব না, লোহার ব্রীজের উপর এসেও পার হতে পারছিনা। পথচারীরা আমাকে সহযোগীতা না করলে হয়ত পার হওয়া সম্ভব হতো না। কলেজ ছাত্রী শাপলা খাতুন জানান, নতুন ব্রিজটি এতটাই উচু করা হয়েছে যে হেটে উপরে উঠা বেশ কষ্টসাধ্য। তাই ঝুকি নিয়ে লোহার ব্রিজ দিয়ে পার হচ্ছি। পুড়াপাড়ার বয়োবৃদ্ধ হাশেম আলী (৭৫) জানান, নতুন ব্রিজটি এতো উচু করে নির্মান করার ফলেই আজ মানুষের সমস্যা বেড়ে গেছে। নতুন ব্রীজ ব্যবহার করতে না পারার কারনেই তো পুরাতন ব্রীজে সেই আগের মতই ভিড় লেগেই আছে। লোহার ব্রীজটি না ভেঙ্গে ভাল করে মেরামতের দাবি করেন তিনি। চৌগাছার ব্যবসা বানিজ্যসহ সব দিক বিবেচনা করে বেইলি ব্রীজটি দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামতের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here