চৌগাছায় প্রতি দিনই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী; এক দিনে সাত রোগী ভর্তি

0
533
চৌগাছায় প্রতি দিনই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী

খবর৭১ঃ

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু, চৌগাছা (যশোর)ঃ যশোরের চৌগাছায় প্রতি দিনই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী। পৌর সদরসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে নুতন নতুন রোগী হাসপাতালে আসছে। গত বুধবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সাত রোগী ভর্তি হয়েছে চৌগাছা হাসপাতালে। বুহস্পতিবার অনেকে জ্বর নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন তাদের বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে বলে জানা গেছে। এদিকে পবিত্র ঈদুল আযহার পর থেকে এ পর্যন্ত শুধু পৌর এলাকার নিরিবিলি মহল্লয় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দাড়িয়েছে অর্ধশতে। একের পর এক ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়াতে মানুষের মাঝে এক ধরনের ভীতিকর অবস্থা বিরাজ করছে। তবে কোন ভয় না করে আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত  চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার কথা বলছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ডেঙ্গুজ্বর বর্তমানে উপজেলা সদরসহ প্রত্যান্ত গ্রামঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতি দিনই নতুন নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছে হাসপাতালে।

গত বুধবার সতজন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তরা হলেন পৌর এলাকার ইছাপুর গ্রামের মৃত দাউদ হোসেনের ছেলে আদম আলী (৬০), বেলেমাঠ গ্রামের আফসার আলীর ছেলে বিল্লাল হোসেন (৩৫), চৌগাছা সদরের সন্তোষ কুমারের ছেলে অভিজিত কুমার (৩৫), বড়খাঁনপুর গ্রামের সামাউল ইসলামের ছেলে আব্দুল মান্নান (১৮), ইন্দ্রোপুর গ্রামের মৃত জোনাব আলীর ছেলে নুরুল ইসলাম (৬৭), ইছাপুর গ্রামের মঞ্জুরা বেগম (৫০) ও মির্জাপুর গ্রামের ইয়াছিন আলীর স্ত্রী রুমা খাতুন (৩০)। আক্রান্ত সকলেই চৌগাছা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টা পর্যন্ত অনেকেই জ্বর নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন। তাদের বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা দেয়া হয়েছে। রিপোর্ট আসার পর জানা যাবে এদের মধ্যে কতজন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। একদিকে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী অন্যদিকে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগীর চাপে চিকিৎসক ও নার্সরা বলাচলে হিমশীম খাচ্ছেন। তারা দিন রাত নিরালস ভাবে চিকিৎসা সেবা অব্যহত রেখেছেন।

এদিকে পবিত্র ঈদুল আযহার বেশ কিছু দিন আগ থেকে এ পর্যন্ত চৌগাছা ইসলামী হাসপাতাল সংলগ্ন মার্কেট ও পৌর এলাকার নিরিবিলি মহল্লায় ডেঙ্গুতে নারী শিশুসহ অর্ধশত জন আক্রান্ত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। আক্রান্ত অনেকেই সুস্থ্য হয়ে বাড়িতে ফিরেছেন আবার এখনও বেশ কয়েকজন রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গত দুইদিনে নুতন করে আক্রন্ত হয়েছেন অবসার প্রাপ্ত সেনা সদস্য হায়দার আলী, তার শ্বাশুড়ি সেলিনা বেগম ও আওয়াল হোসেন। আওয়াল হোসেনকে যশোরে ভর্তি করা হয়েছে এবং অবসার প্রাপ্ত সেনা সদস্য ও তার শ্বাশুড়ি বর্তমানে চৌগাছা হাসপাতালের ৩ নং কেবিনে চিকিৎসাধীন। এ পর্যন্ত ওই মার্কেটের ব্যবসায়ী ও নিরিবিলিপাড়ায় যারা আক্রান্ত হয়েছেন তারা হলো আতিকুর রহমান লেন্টু, আশাদুল ইসলাম এবং তার স্ত্রী মোমেনা বেগম ও মেয়ে জুই আক্তার, তরিকুল ইসলাম, মাসুম বিল্লাহ, হুরাক আলী, হাবিবুর রহমান হাবিব, শরিফুল ইসলাম শরিফ, শ্রী রতন কুমার, ইউনুচ আলী, হেলাল উদ্দিন, সেলিম রেজা, ডাক্তার বিজয় কুমার, ডাক্তার মোঃ তনু, আশরাফুল ইসলাম ও তার ছেলে আরিফ হোসেন, মারফুজ আলম বাবু, শরিফুল ইসলাম, হাজী গোলাম মোস্তফা, রেশমা খাতুন, মিম আক্তার, সুমা বিশ্বাস ও রাহুল বিশ্বাস। আক্রান্তদের মধ্যে আটজন এখনও বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

বাকিরা বর্তমানে সুস্থ্য হয়ে বাড়িতে ফিরেছেন। পৌর এলাকার একটি মহল্লায় ডেঙ্গুর প্রকোপে বলাচলে সকলেই দিশেহারা। পৌরকর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে ওই মহল্লায় চিরুনী অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি নিয়মিত মশক নিধোনের ওষুধ স্প্রে অব্যহত রেখেছেন। তারপরও প্রতি দিনই সেখানে মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রন্ত হওয়ায় সকলকে ভাবিয়ে তুলেছে। এ বিষয়ে পৌর মেয়র নূর উদ্দিন আল মামুন হিমেল বলেন, গোটা পৌর এলাকাতে মশক নিধোনের কর্মসূচি অব্যহত আছে। ওষুধ ছিটানোর পাশাপাশি জনসেচতনা বৃদ্ধিতে নানা কর্মসূচি গ্রহন করা হয়েছে। তবে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার আহবান জানান তিনি।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার নাহিদ সিরাজ বলেন, বর্তমানে ডেঙ্গুজ্বর শহর থেকে গ্রাম এলাকায় বেশি বিস্তার লাভ করেছে। প্রতি দিনই কোন না কোন গ্রাম থেকে রোগী আসছে। তবে ডেঙ্গুতে আতংকিত না হয়ে দ্রুত চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here