চোরাচালান বন্ধে স্বর্ণ নীতিমালা অনুমোদন

0
321

খবর৭১ঃচোরাচালান বন্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদিত ডিলারদের মাধ্যমে স্বর্ণ আমদানির বিধান রেখে স্বর্ণ নীতিমালা অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। পাশাপাশি জাতীয় পরিবেশ নীতি-২০১৮ ও কাস্টমস আইন, ২০১৮ এর খসড়াও অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বুধবার তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এসব অনুমোদন দেয়া হয়।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।

বেসরকারি গবেষণা অনুযায়ী বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে বার্ষিক ১৮-৩৬ টন স্বর্ণের চাহিদা থাকলেও আমদানির সুযোগ না থাকায় চোরাচালানের মাধ্যমেই চাহিদার অনেকটা পূরণ হচ্ছিল। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সোনা চোরাচালান বেড়ে যায়। গত চার বছরে দেড় হাজার কেজির বেশি চোরাই স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়।

বৈধপথে আমদানি না হওয়ায় স্বর্ণখাতে সরকার যেমন বছরে হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছিল, তেমনি ব্যবসায়ীরাও স্বর্ণ আমদানির সুযোগ চাইছিলেন। এই প্রেক্ষাপটে স্বর্ণ নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয় সরকার। অর্থনৈতিক বিষয় সম্পর্কিত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের পর নীতিমালাটি মন্ত্রিসভায় আসে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী দি ফরেন এক্সচেঞ্জ রেগুলেশন অ্যাক্ট-১৯৪৭ এর অধীনে বাংলাদেশ ব্যাংক স্বর্ণ আমদানির ডিলার অনুমোদন দেবে। ‘মনোনীত অথরাইজড ডিলার, ব্যাংক অথবা বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত একক মালিকানাধীন কোনো অংশীদারি প্রতিষ্ঠান বা লিমিটেড কোম্পানি অনুমোদিত ডিলার হিসেবে গণ্য হবে।’

শফিউল আলম বলেন, বর্তমান নীতির অতিরিক্ত হিসেবে দেশের অভ্যন্তরীণ স্বর্ণ অলংকারের চাহিদা পূরণে অনুমোদিত ডিলারের মাধ্যমে স্বর্ণের বার আমদারি নতুন পদ্ধতি প্রবর্তন করা হবে। অনুমোদিত ডিলার নির্বাচন করবে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ, এ জন্য তারা নীতিমালাও প্রণয়ন করবে। অনুমোদিত ডিলার সরাসরি প্রস্তুতকারী বা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে স্বর্ণের বার আমদানি করবে।

অনুমোদিত ডিলার স্বর্ণ অলংকার প্রস্তুতকারকের কাছে বিক্রি করতে পারবে। অলংকার প্রস্তুত হলে তা রফতানির সুযোগও রাখা হয়েছে নীতিমালায়। যাতে আমাদের রফতানি সেক্টর যাতে চাঙা হয় বলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

শফিউল আলম আরও বলেন, ‘স্বর্ণের মান যাচাইয়ে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে হলমার্ক ব্যবস্থার প্রবর্তন করতে হবে। স্বর্ণ, স্বর্ণালংকার ক্রয়-বিক্রয়ে হলমার্ক বাধ্যতামূলক করতে হবে, খাদের পরিমাণ সুনির্দিষ্ট করতে হবে। ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য বিক্রয় ক্যাশ মেমোর সঙ্গে স্বর্ণ অলংকারের হলমার্ক স্টিকার বাধ্যতামূলকভাবে প্রদান করতে হবে।’

নীতিমালায় অলংকারের সংজ্ঞায় বলা আছে, ‘স্বর্ণ দ্বারা প্রস্তুতকৃত অলংকার এবং স্বর্ণের পরিমাণ-নির্বিশেষে স্বর্ণের সঙ্গে হীরক, রৌপ্য ও অন্যান্য মূল্যবান ধাতু ও পাথর মিশ্রণে প্রস্তুতকৃত অথবা সাধারণ পাথর দ্বারা খচিত অলংকার।’

লাগেজে করে ১০০ গ্রাম পর্যন্ত স্বর্ণ বিনা শুল্কে আনা যাবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘২৩৪ গ্রাম পর্যন্ত স্বর্ণ শুল্ক দিয়ে আনা যাবে। তবে নীতিমালা চূড়ান্ত হলে এটা আরও বাড়তে পারে।’

সরকারের এই নীতিমালা প্রণয়নের কারণ ব্যাখ্যা করে শফিউল আলম বলেন, স্বর্ণ আমদানি সহজ করা, এই শিল্পে জবাবদিহি আনা, স্বর্ণালংকার রফতানিতে উৎসাহ জোগানো এবং স্বর্ণখাতে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে কার্যকর নিয়ন্ত্রণ, সমন্বয়, পরিবীক্ষণ ও তদারকি ব্যবস্থা গড়ে তোলাই এর লক্ষ্য।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here