চোখের নীরব ঘাতক গ্লুকোমা

0
262

খবর৭১ঃঅন্ধত্ব অভিশাপ। গ্লুকোমাজনিত অন্ধত্বের কোনো প্রতিকার নেই, প্রতিরোধই একমাত্র উপায়। সারা বিশ্বে প্রায় ৮০ মিলিয়ন লোক অন্ধ। গ্লুকোমাজনিত অন্ধ লোকের সংখ্যা প্রায় ৮ মিলিয়ন। এর এক বিরাট অংশ রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ায়।

গ্লুকোমা রোগ সম্পর্কে সচেতনতার অভাবে এক বিরাট জনগোষ্ঠী অপরিবর্তনযোগ্য অন্ধত্বের শিকার হন যা প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করতে পারলে প্রতিরোধ করা সম্ভব।

গ্লুকোমা কী

গ্লুকোমা চোখের একটি জটিল রোগ যাতে চোখের স্নায়ু ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ধীরে ধীরে চোখের দৃষ্টি কমে যায়। এমন কি এতে একসময় রোগী অন্ধত্ব বরণ করতে বাধ্য হয়। তবে সময়মতো ধৈর্য্য ধরে চিকিৎসা করলে এ অন্ধত্বের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে চোখের অভ্যন্তরীণ উচ্চচাপ এর জন্য দায়ী।

কেন এই রোগ হয়

সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া না গেলেও অদ্যবধি চোখের উচ্চচাপই প্রধান কারণ বলে ধরে নেয়া হয়। তবে স্বাভাবিক চাপেও এ রোগ হতে পারে।

সাধারণত চোখের উচ্চচাপই ধীরে ধীরে চোখের স্নায়ুকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং দৃষ্টিকে ব্যাহত করে। কিছু কিছু রোগের সঙ্গে এ রোগের গভীর সম্পর্ক লক্ষ্য করা যায় এবং অন্যান্য কারণেও এ রোগ হতে পারে যেমন-

* পরিবারের অন্য কোনো নিকট আত্মীয়ের (মা, বাবা, দাদা, দাদি, নানা, নানি, চাচা, মামা, খালা, ফুফু) এই রোগ থাকা

* ঊর্ধ্ব বয়স (চল্লিশ বা তদোর্ধ্ব)

* ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপ

* মাইগ্রেন

* রাত্রিকালীন উচ্চরক্ত চাপের ওষুধ সেবন

* স্টেরয়েড নামক ওষুধ দীর্ঘদিন সেবন করা

* চোখের ছানি অপারেশন না করলে বা দেরি করলে

* চোখের অন্যান্য রোগের কারণে

* জন্মগত চোখের ত্রুটি ইত্যাদি

এগুলোর মধ্যে কেবলমাত্র চোখের উচ্চচাপই ওষুধ দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

চিকিৎসা

গ্লুকোমা রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব কিন্তু নিরাময় সম্ভব নয়। ডায়াবেটিস বা উচ্চরক্ত চাপের মতো এ রোগের চিকিৎসা সারাজীবন করে যেতে হবে। দৃষ্টি যতটুকু হ্রাস পেয়েছে তা আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তবে দৃষ্টি যাতে আর কমে না যায় তার জন্য চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে।

প্রচলিত তিন ধরনের চিকিৎসা-

* ওষুধের দ্বারা

* লেজার

* শৈল্য চিকিৎসা বা সার্জারি

চোখের উচ্চচাপ এ রোগের প্রধান কারণ তাই ওষুধের দ্বারা চোখের চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়। একটি ওষুধ দ্বারা নিয়ন্ত্রণে রাখা না গেলে একাধিক ওষুধ ব্যবহার করতে হবে। তিন মাস অন্তর অন্তর চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে এ রোগের নিয়মিত কতগুলো পরীক্ষা করিয়ে দেখতে হবে রোগ নিয়ন্ত্রণে আছে কিনা। যেমন-

* দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা

* চোখের চাপ পরীক্ষা

* দৃষ্টি ব্যাপ্তি বা ভিজুয়্যাল ফিল্ড পরীক্ষা

* চোখের নার্ভ পরীক্ষা

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল নিয়মিত ওষুধ ব্যবহার করা এবং সময়মতো চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে নিয়মিত চক্ষু পরীক্ষা ও তার পরামর্শ মেনে চলা।

অধিকাংশ রোগীর চোখে কোনো ব্যথা হয় না, এমনকি তেমন কোনো লক্ষণ বা অনুভূত হয় না তাই রোগী নিজে এমনকি রোগীর আত্মীয়স্বজনরাও দীর্ঘমেয়াদি এ চিকিৎসা অব্যাহত রাখেন না ফলে অনেক রোগী অকালে অন্ধত্ব বরণ করে থাকেন।

ওষুধ ছাড়াও অন্য চিকিৎসা রয়েছে যার সিদ্ধান্ত প্রয়োজনে বা সময়মতো চিকিৎসক গ্রহণ করতে পারেন। যেমন- লেজার চিকিৎসা এবং শল্য চিকিৎসা যার দ্বারা এ রোগে চোখের চাপ নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব।
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here