চুরিতন্ত্রই আওয়ামী লীগের মূলমন্ত্র

0
311

খবর৭১: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আগে আওয়ামী লীগের মূলমন্ত্র বলা হতো গণতন্ত্র। ওটা একটি ভুল মন্ত্র। ওটা হচ্ছে চুরিতন্ত্র। প্রতিটি ব্যাংকে চুরি করে এমন একটি অবস্থা তৈরি হয়েছে যে ব্যাংক আমানতকারীরা বলছেন ছেড়ে দে মা, কেঁদে বাঁচি।

বুধবার রাজধানীর গুলিস্তানের মহানগর নাট্যমঞ্চ মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার অন্তঃসারশূন্য। এতগুলো ব্যাংক দিয়েছে, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব সবাইকে ব্যাংক দিয়েছে। ফারমার্স ব্যাংকের মালিক মহীউদ্দীন খান আলমগীরকে পদত্যাগ করতে হয়েছে, তার ব্যবস্থাপনা পরিচালককেও বরখাস্ত করা হয়েছে। এত চুরি সেখানে হয়েছে।

তিনি অভিযোগ করেন, ইসলামী ব্যাংক গিলে ফেলেছে, বেসিক ব্যাংক গিলে ফেলেছে। এমনকি সরকার বাংলাদেশ ব্যাংক গিলে ফেলার চেষ্টা করেছিল। সরকার দেশের অর্থনীতি, বিশেষ করে ব্যাংকিং খাতকে ধ্বংস করে দিয়েছে। বৈদেশিক আয় কমতে শুরু করেছে। তৈরি পোশাক কারখানাগুলোও লোকসানের সম্মুখীন। শিক্ষা ব্যবস্থা, প্রতিদিন খবরের কাগজে প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবর।

তিনি বলেন, সংবাদপত্রে এসেছে- পদ্মাসেতুর তলানি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। মাত্র দুটো পিলার দাঁড় করে রেখেছে, এর ওপর স্লাভ দিয়ে রেখেছে। ওইটা নাকি স্বপ্ন? পত্রিকায় ইঞ্জিনিয়াররা বলেছে, আমরা তলানি খুঁজে পাচ্ছি না। ইতোমধ্যে এই সেতু নির্মাণে ১০ হাজার থেকে ৩০ হাজার কোটি চলে গেছে।

মগবাজার-মালিবাগ উড়াল সেতু ৩০০ কোটি টাকা থেকে ১৮০০ কোটি টাকা চলে গেছে। প্রত্যেকটা মেগা প্রজেক্টে তারা (সরকার) দেশের টাকার লুট করে নিচ্ছে। ছোটবেলায় বাচ্চারা না ঘুমালে মায়েরা গান শোনাত ছেলে ঘুমাল পাড়া জুড়াল, বর্গি এল দেশে। বর্গি দেশের মধ্যে এসে গেছে। দেশকে লুট করে নিয়ে চলে যাবে। এ অবস্থা তৈরি করেছে আওয়ামী লীগ। সেই আওয়ামী লীগ আবার সততার কথা বলে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিষয়ে ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নতুন একটি থিওরি দিয়েছেন। কোনো একটি দেশের, কোনো একটি পত্রিকায় তাকে নাকি তিন নম্বর সৎ নেতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাহলে এ দেশের মানুষ কোথায় যাবে?’

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সৌদি আরবে সম্পদের বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আবার কোথায় থেকে ভুয়া কাগজ, ভুয়া টেলিভিশন-অনলাইন দিয়ে আমাদের নেত্রীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের কথা বলে। আমরা বলেছি, প্রমাণ করেন। পারেননি বলে উকিল নোটিশ দেয়া হয়েছে। ৩০ দিনের মধ্যে প্রমাণ করতে না পারলে, আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। এত সোজা না। সবাইকে শুধু বোকা বানিয়ে যাবেন না। সবাই কিছু বোঝে না? বাংলাদেশের মানুষকে এত বোকা ভেবে লাভ নেই।

খালেদা জিয়াকে অন্তরীণ করে ক্ষমতাসীন দল ফের ক্ষমতায় আসতে পারবে না হুশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, যদি মনে করে থাকেন খালেদা জিয়াকে অন্তরীণ করে আপনারা এ দেশের মানুষকে বোকা বানাবেন, আবার ক্ষমতায় টিকে থাকবেন। সেটা এ দেশের মানুষ হতে দেবে না। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, হাসিনা আপনার সময় শেষ। যতই ভন ভন করে ঘুরতে থাকেন, আপনার কোনো লাভ হবে না।

মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে ও সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুল মঈন খান, মির্জা আববাস, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, মহানগর দক্ষিণের সিনিয়র সহসভাপতি শামসুল হুদা, উত্তরের সিনিয়র সহসভাপতি মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেইন বক্তব্য রাখেন।

প্রধান অতিথি স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সারা দেশে রব উঠেছে আগামী নির্বাচনে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে এবং সরকার গঠন করবে। সেজন্য তারা দিশেহারা হয়ে ২০১৪ সালের মতো আরেকটি নির্বাচন করার ষড়যন্ত্র করছে। সে জন্য দেশনেত্রীকে মিথ্যা মামলায় দ্রুত বিচার করে তাকে নির্বাচন থেকে বাইরে রাখার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমরা বলতে চাই, আগামী নির্বাচন হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হবে না, হতে দেয়া হবে না। খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচন হবে না, হতে দেয়া হবে না।

স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, খালেদা জিয়ার খুব দ্রুত বিচার কাজ চলছে, তাকে সাজা দেয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। আমাদের পরবর্তী করণীয় এখনই ঠিক করে নেমে পড়তে হবে। নিজেদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ না রেখে সুপরিকল্পিতভাবে আমাদের সংগঠন গুছিয়ে সংগ্রামের জন্য আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে।
খবর ৭১/ এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here