চুনারুঘাটে র‌্যাব-ডাকাত গোলাগুলি, গুলিবিদ্ধ ৩ জনসহ ৯ ডাকাত আটক- অস্ত্র উদ্ধার

0
419

মঈনুল হাসান রতন, হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ চুনারুঘাট পৌর শহরে  ডাকাতির সময় র‌্যাবের হাতে অস্ত্রসহ সন্দেহভাজন ৯ ডাকাতকে আটক করা হয়েছে। এ সময় র‌্যাবের ও ডাকাতদলের গোলাগুলিতে র‌্যাবের এএসআই মনিরুল ইসলাম ও কনস্টেবল রিয়াদ আহমেদসহ ৩ ডাকাত সদস্য আহত হয়েছেন বলে দাবি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর। গত সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় পৌর শহরের বাগবাড়ি গ্রামের সংলগ্ন পীরেরবাজার এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। এসময় ডাকাতদের কাছ থেকে ১টি পিস্তল, ৩ রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগজিন, ১টি কাটার, ২টি রামদা ও ১টি দা উদ্ধার করা হয়। র্যাবের উপস্থিতি টের পেরে এক ডাকাত পালিয়ে যায়। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, রাত ৩টার দিকে পৌর শহরের পীরের বাজার এলাকার বাসিন্দা ও শাকির মোহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আব্দুল কদ্দুছ মাস্টারের বাসায় ডাকাতদল হানা দেয়। এক পর্যায়ে ডাকাতরা ঘরের গেইটের তালা কেটে বেডরুমে প্রবেশ করার প্রস্তুতি নেয়। গৃহকর্তা কুদ্দছ মাস্টার বিষয়টি টের পেয়ে শোর চিৎকার করেন। ঘটনার সময় মৌলভীবাজার থেকে ঢাকা যাচ্ছিলেন ঢাকার যাত্রাবাড়ির র‌্যার -১০ এর সদস্যরা। গাড়ি নিয়ে ওই বাসার সামন দিয়ে যাবার পথে গৃহকর্তার চিৎকার শুনতে পান র‌্যাব সদস্যরা। তারা এগিয়ে গিয়ে বাসার ভেতরে ডাকাতদলের ডাকাতির ঘটনা দেখতে পান। ডাকাতদল গাড়ি দেখামাত্র র‌্যার সদস্যদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে। এতে র‌্যার -১০ এর এএসআই মনিরুল ইসলাম ও কনস্টেবল রিয়াদ আহমেদ আহত হয়। এসময় র্যাব সদস্যরা পাল্টা ৭ রাউন্ড গুলি করলে ডাকাতদলের ৩ সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়। এদিকে গোলাগুলির শব্দ পেয়ে এলাকাবাসী ও চুনারুঘাট থানার মোবাইল টিম সদস্যরা ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় র‌্যাব সদস্যরা ৯ ডাকাতকে আটক করে। আহত ৩ জনকে প্রথমে চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এদিকে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের নেতা চুনারুঘাট উপজেলার উবাহাটা গ্রামের আঃ শহিদের ছেলে আবু তালেব প্রকাশ লেংরা তালেব পালিয়ে যায়। অন্যান্য ৬ জনকে চুনারুঘাট থানায় এনে কয়েকদফা জিজ্ঞাসাবাদ করে। আটককৃতরা হলো উপজেলার শ্রীকুটা গ্রামের মোতালিব মিয়ার ছেলে মমিন মিয়া (১৯), মমিনপুর গ্রামের সানু মিয়ার ছেলে মোঃ সোহেল মিয়া (২০), রানীগাও গ্রামের গারবু মিয়ার ছেলে সাজন মিয়া (২০), মধ্য নরপতি গ্রামের আঃ শহিদ মিয়ার ছেলে হাবিবুর রহমান হৃদয় (১৯), মমিনপুর গ্রামের আইয়ূব আলীর ছেলে ফজল মিয়া (২০), নরপতি গ্রামের নোমান মিয়ার ছেলে আরমান মিয়া (১৮), কাচুয়া গ্রামের ইদ্রিছ আলী ছেলে ফজর আলী বটল (২৪), মমিনপুর গ্রামের মৃত সৈয়দ নবাব উল্লার ছেলে সৈয়দ শিপন (২২) ও রানীগাও গ্রামের আঃ আউয়ালের ছেলে এনামুল হক (২৫)। তাদের মধ্যে আরমান মিয়া, সৈয়দ সিপন ও এনামুল হককে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এদিকে বিকাল ৪টায় র্যাব-১০ এর ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে চুনারুঘাট থানায় অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করে তাদেরকে চুনারুঘাট থানায় সোপর্দ করেন। অপরদিকে গৃৃহকর্তা আব্দুল কদ্দুছ মাস্টার বাদী হয়ে ডাকাতির চেষ্টার অভিযোগে আলাদা মামলা দায়ের করেন। এ বিষয়ে গৃৃহকর্তা আব্দুল কদ্দুছ মাস্টার জানান, তিনি রাত ৩টার দিকে গেইটের শব্দ পেয়ে বাসা থেকে বের হয়ে আসার সাথে সাথে ডাকাতরা গেইট ভেঙ্গে তার বসতঘরে প্রবেশের চেষ্টা করে। এসময় তিনি চিৎকার শুরু করলে র্যাব সদস্যরা এসে তাদেরকে ঘিরে ফেলে। এক পর্যায়ে এলাকাবাসী এসে জড়ো হয়। এ বিষয়ে চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ কে এম আজমিরুজ্জামান জানান, আটক ৩ ডাকাতকে চিকিৎসার জন্য সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকীদের হবিগঞ্জ জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here