চিলমারীতে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে গ্রাম আদালত

0
386

আরিফুল ইসলাম সুজন (কুড়িগ্রাম )প্রতিনিধি :
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে গ্রাম আদালত কার্যক্রম। স্থানীয় পর্যায়ের ছোটোখাটো বিরোধ ও সমস্যা সমাধানে মানুষ এখন থানা-পুলিশ না গিয়ে গ্রাম আদালতেই সুবিচার পাচ্ছেন।
ইউনিয়ন কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত এ আদালতে ফৌজদারি, দেওয়ানি ও যেসব মামলার বিচারিক কাজ ৭৫ হাজার টাকার ঊর্ধ্বে হবে না এমন সব মামলা এখানে দ্রুত নিস্পত্তি করা হয়। সাধারণত সপ্তাহের প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার এখানে গ্রাম-আদালত বসে। সর্বোচ্চ ৩০ দিনের মধ্যে একটি অভিযোগ নিস্পত্তি করা হয়।
গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় ন্যায়বিচার পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে রমনা মডেল ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব উদ্যোগে পরিচালিত হচ্ছে এ আদালত। যা ব্যাপক প্রশংসিত হচ্ছে। ২০১৩ সাল থেকে চিলমারী উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব উদ্যোগে গ্রাম-আদালত কার্যক্রম শুরু করা হয়। গ্রাম-আদালতের প্রধান হচ্ছেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। এছাড়া বাদি-বিবাদীদের একজন করে মনোনীত দু’জন, একজন ইউপি সদস্য ও একজন গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ পাঁচজনকে নিয়ে শুরু হয় এ আদালতের বিচারিক কার্যক্রম। আর বর্তমানে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিশেষ করে সাধারন দরিদ্র মানুষ এ আদালতের উপর ক্রমশই নির্ভরশীল হচ্ছেন।
রমনা মডেল ইউনিয়নের বাসিন্দা রায়হানুল হক মোফা জানান, তার মেয়ের পারিবারিক বিচ্ছেদের একটা অভিযোগ ছিল তা এই আদালতের মাধ্যমে একদিনেই সমাধান পেয়েছেন।
রাশেদা বেগম জানান, অভিযোগ করার কয়েকদিনের মধ্যেই গ্রাম আদালতের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান পাচ্ছেন তারা। এতে করে তাদেরকে আর থানা পুলিশে যেতে হচ্ছে না। রমনা মডেল ইউনিয়নের সচিব মো. মিনারুল হক বলেন, গ্রাম আদালতের প্রতি মানুষের আস্থা যেভাবে বাড়ছে জনবল নিয়োগ দেয়াসহ আলাদা বাজেট বরাদ্দ করা প্রয়োজন। সরকার এই উদ্যোগ গ্রহণ করলে গ্রামের সহজ সরল মানুষরা এর সুফল পাবে। তিনি আরো জানান, ইউনিয়ন পরিষদের সচিবদের কাজের পরিধি বেড়ে যাওয়ায় সব কাজ করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এতে করে গ্রাম আদালতের বিচারিক কাজে ঠিক মতো সময় দিতে পারেন না তারা।
রমনা মডেল ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যমতে, গ্রাম আদালতের মাধ্যমে ২০১৭ সালের জানুয়ারী থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯২টি অভিযোগের মধ্যে ৬৬টি অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়েছে। বাকি অভিযোগ গুলো নিষ্পত্তি না হওয়ায় আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। রমনা মডেল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আজগর আলী জানান, গ্রামের মানুষেরা দিনদিন গ্রাম-আদালতের প্রতি আস্থা রাখতে শুরু করেছেন। ছোটখাটো বিরোধ নিয়ে আর মামলা মোকদ্দমায় যাচ্ছেন না তার ইউনিয়নের বাসিন্দারা।
এ ব্যাপারে চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মির্জা মুরাদ হাসান বেগ জানান, গ্রাম-আদালত চালু হওয়ার পর মানুষ ছোট-ছোট বিরোধ নিস্পত্তি করতে গ্রাম-আদালতের দিকে ঝুঁকছেন। যা গ্রাম-আদালত কার্যক্রমের একটি ইতিবাচক দিক বলে তিনি মনে করেন। তিনি আরো জানান, উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়ন পরিষদকেও রমনা মডেল ইউনিয়ন পরিষদের আদলে গ্রাম আদালত করতে বলা হয়েছে।

খবর ৭১/ ই:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here