চকবাজার অগ্নিকাণ্ডে নিহতের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি

0
549

খবর ৭১ঃ রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহতের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত গণমাধ্যমে দেয়া নিহতের সংখ্যায় রয়েছে ভিন্নতা। এ সংখ্যা ৭৮ নাকি ৭০ কিংবা ৬৭!
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় ফায়ার সার্ভিস সদর দফতরের ডিউটি অফিসার মোহাম্মদ রাসেল বলেন, চকবাজার অগ্নিকাণ্ডে মোট নিহতের সংখ্যা ৬৭ জন নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এর আগে গতকাল ফায়ার সার্ভিস ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র নিহতের সংখ্যা জানিয়েছিলেন ৭০।

তবে ঢাকা জেলা প্রশাসন ৬৭টি মরদেহ পাওয়ার দাবি করেছে। অপরদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদ নিহতের সংখ্যা ৭৮ জন বলে তথ্য দেন।

এদিকে গতকাল দুপুরে উদ্ধার অভিযান সমাপ্তের পর গণমাধ্যমে দেয়া বক্তব্যে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, নিহতের সংখ্যা ৮১ জন হতে পারে।

নিহতের সংখ্যা নিয়ে এমন বিভ্রান্তি কেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলেন, ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজনের দেহের খণ্ডাংশ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রচণ্ড তাপে মরদেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল। মরদেহের এসব অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে আলাদা মরদেহ ভাবা হয়েছিল।

এছাড়াও দু’একটি মরদেহ একটির সঙ্গে একটি লেগে যাওয়ায় সেখানেও গণনায় ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আর সে কারণেই নিহতের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে।

তবে বৃহস্পতিবার রাতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আলী আহম্মদ খান নিহতের সংখ্যা নিয়ে ঢাকা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে একমত প্রকাশ করে বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা ৬৭টি মরদেহ উদ্ধার করেছি।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (মেজর এ কে এম শাকিল নেওয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনাস্থল থেকে টুকরো টুকরো মরদেহ উদ্ধার করে ব্যাগে ভরে ঢামেক মর্গে পাঠানো হয়েছিল, যার সংখ্যা ছিল ৭০। ঢামেকে পুনরায় লাশগুলো মিলিয়ে দেখার পর এর সংখ্যা ৬৭টিতে দাঁড়িয়েছে।

তাহলে ৭৮টি মরদেহ উদ্ধারের তথ্য দেয়া হলো কোন ভুলের কারণে প্রশ্নে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, এটা বড় একটা ভুল হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালের মর্গে ১১ জনের মরদেহ আনা হয়েছিল। এরপর দুপুরে ঢাকা মেডিকেলে যখন ব্যাগে করে মৃতদেহ আনা হয়, তখন সর্বশেষ ব্যাগটিতে লেখা ছিল ৬৭ সংখ্যাটি।

তখন ভুলে দুটি সংখ্যা পৃথক ভেবে সকালের ১১টি আর সর্বশেষ ব্যাগের নম্বর ৬৭ যোগ করে ৭৮ বলেছিলাম। আসলে নিহতের সংখ্যা মোট ৬৭।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মোট ৪৫ জনের মরদেহ শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢামেক ফরেনসিক বিভাগ। তাদের মধ্যে ৪২ জনের লাশ বৃহস্পতিবার রাত ৯টা পর্যন্ত স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

যাদের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে

কামাল হোসেন (৪৫), ওয়াসি উদ্দিন (২৩), মোশারফ হোসেন (৪৩), হাফেজ মো. কাওছার আহমেদ (২৬), আলী হোসেন (৬৫), মো. ইয়াসিন (৩৩), শাহাদাৎ হোসেন (৩০), আবু বকর সিদ্দিক (২৭), জুম্মন (৫২), মজিবুর হাওলাদার (৫০), হেলাল উদ্দিন (৩২), আশরাফুল হক (২৭), ইমতিয়াজ ইমরোজ রাজু (২২), সিদ্দিক উল্লাহ (৪৫), মাসুদ রানা (৩৫), আবু রায়হান (৩১), আরাফাত আলী (৩), মোহাম্মদ আলী (২২), মাহবুবুর রহমান রাজু (২৯)।

এনামুল হক কাজী (২৮), শিপন আরাফাত (১৯), ওমর ফারুক (৩০), সৈয়দ খবির উদ্দিন (৩৮), আয়েশা খাতুন (৪৫), নয়ন খান (২৫), আবদুর রহিম (৫১), জসিম উদ্দিন (২২), সাহির (৩), মিঠু (৩৮), সোনিয়া আক্তার (২৮), বিল্লাল হোসেন (৪৭), ইসহাক ব্যাপারি (৪২), ইব্রাহিম (৩০), সুজন হক (৫৩), শামসুল হক (৬২), পারভেজ (১), খোরশেদ আলম (৪৫), রাজু (৫৩), সজীব (২৩), জয়নাল আবেদীন (৪৩), আনোয়ার হোসেন (৩৭) ও নাসির উদ্দিন (৩৩)।
খবর ৭১/ই

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here