ঘাটাইলে জমে উঠেছে ঈদ বাজার

0
318

শফিকুল ইসলাম জয়, ঘাটাইল প্রতিনিধি :
আর মাত্র ক’দিন পরেই উৎযাপিত হবে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। দীর্ঘ ত্রিশদিন সিয়াম সাধনার উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। এই ঈদকে সামনে রেখে নি¤œ বিত্ত, মধ্যবিত্ত এবং উচ্চ বিত্ত সব শ্রেণির ক্রেতাই সাধ ও সাধ্যের মিল রেখে শেষ মুহুর্তে কেনা কাটা নিয়ে ব্যস্ত। ঘাটাইল উপজেলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন হাট বাজারের দোকান গুলোতে দেখা যায় উপচেপড়া ভিড়। কেনাকাটায় হুমরি খেয়ে পড়ছেন ক্রেতারা। পোশাক, জুতা ও বিভিন্ন প্রসাধনী সামগ্রীর দোকানে এমন চিত্র লক্ষ করা যায়। এজন্য উপজেলার বড় বড় শপিং মল থেকে শুরু করে ফুটপাতের দোকান গুলোতেও পড়ছে কেনা কাটার ধুম। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে জমজমাট কেনাকাটা। ক্রেতাদের সরব উপস্থিতি দেখে অধিকাংশ স্থানেই মধ্যরাত পর্যন্ত কেনা-বেঁচা চলছে। উপজেলা সদরের কয়েকটি শপিং হাইজে ঢুকে গিয়ে গতকাল মঙ্গলবার ঘাঁ ঘেষাঘেষী করে সামগ্রী কিনতে হচ্ছে এমটা দেখা যায়। বিশেষ করে (১১জুন) সোমবার রাত ১২টা-১টায়ও সরগরম দেখা যায় শপিং মলগুলো। যারা ভিড় পছন্দ করেন না তেমন ক্রেতারা এই সময় পোশাক ক্রয় করছেন। শপিং মলের প্রতিটি লেভেলেই ক্রেতার ভিড়ে ছিলো পরিপূর্ণ । দিন ভর ক্রেতা সামলাতে গিয়ে বিক্রেতাদের কিছুটা ক্লান্ত দেখাগেলেও পন্য বেচাবিক্রি ভাল হওয়ায় তারা ছিলো খুশি। মধ্য রাতে আসা ক্রেতারা যার যার কর্মস্থলে কাজশেষে ইফতারের পর শপিং করতে এসেছেন। এমন এক ক্রেতা ঘাটাইল পৌর শহরের বাসিন্দা কলেজ ছাত্রী সোমাইয়া মিরা বলেন, “দিনের বেলায় এমন অস্বস্তির পরিবেশ আমার পছন্দ না’তাই কাজিন ইতিকে নিয়ে মায়ের সাথে শপিংয়ে রাতেই এসেছি’ তবুও এমন ভিড়ে অসহ্য লাগছে”। এদিকে গতকাল উপজেলার বিভিন্ন হাট-বজার পরিদর্শণ করতে গিয়ে দেখা যায় সব মহলেই দীর্ঘ যানজট । পূর্ব ঘাটাইলের সবথেকে বড় বাজার হিসেবে পরিচিত ঐতিহাসিক সাগরদিঘী বাজার। এ বাজারেও উত্তাপ রোদেও ছিলোনা ক্রেতা-বিক্রেতাদের দম ফেলানোর ফুসরত। ঘাটাইল-সখিপুর-ভালুকা- মধুপুর এর চার উপজেলার মধ্য বর্তি বাজার হওয়ায় সবস্থানের ক্রেতাদের সরগরম উপস্থিতি রয়েছে। বড় শপিং মলের তুলনায় এখানে কয়েকটি মার্কেট বেশ জমজমাট হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে ছয়তাঁরা সুপার মার্কেট,সিকদার সুপার মার্কেট, ভূঁইয়া সুপার মার্কেট, ফ্যাশন ওয়ার্ল্ড ও ক্রাউন ফ্যাশন অন্যতম। উপজেলার গারোবাজার, ধলাপাড়া, জোড়দিঘী থেকে আগত কয়েকজন ক্রেতা জানান, ‘অন্যান্য বড় শহরের শপিংমলের তুলনায় এ বাজারে রুচিশীল পণ্য ও দাম হিসেবেও কমে কেনা যাচ্ছে’। বাজারের মার্কেট থেকে শুরু করে ফুটপাতের দোকান গুলোতেও ভিড় দেখা যায়। কথা হয় ফুটপাতে বসে থাকা দোকানদার আঃ হামিদের সঙ্গে। তিনি দোকান নিয়ে এসেছেন জোড়দিঘী থেকে। তার দোকানে রয়েছে শ্যার্ট,প্যান্ট,গেঞ্জি, জার্সিসহ বিভিন্ন পন্য। তিনি বলেন, ‘ফুটপাতে দোকান থাকায় আমার দোকানের দিকে মানুষের নজর খুব কমই পরে। তবুও ঈদকে সামনে রেখে বেচা-বিক্রি বেশ ভাল’। ফুটপাতে নিয়ে বসে থাকা কস্মেটিক্স দোকানগুলোতেও বেশ ভিড় লক্ষ করা যায়। কেউ আলতা, কেউ, মেহেদী সামগ্রীও ক্রয় করছেন। এছাড়াও রাস্তার পাশে আতর-লুবান, মাথার টুপির ভ্রাম্যমান দোকান গুলোতে ছিলো উপচেপরা ভিড়। ঈদে সেমাই-চিনি কিনতেও হুমরি খেয়ে পড়ছেন অনেক ক্রেতা। এদিকে ছয়তাঁরা সুপার মার্কেটের বিক্রেতা মোঃ ইব্রাহিম খলিল, মোঃ রাকিব হাসান ও রাসেদ মিয়া জানান, “সকাল থেকে শুরুকরে মধ্যরাত অবধি টানা ভিড় লেগেই আছে। নারী- পুরুষ, তরুণ-তরুণী, শিশু-কিশোর সব বয়সের ক্রেতার সমাগম রয়েছে। তুলনা মূলক ভাবে পুরুষের তুলনায় নারী ও তরুনীদের ভিড় বেশী”। তারা আরো বলেন, ‘এ বাজারের রাস্তাঘাট গুলোর খুবই বেহাল দশা। রাস্তার অবস্থা ভালো হলে বেচা বিক্রি আরো দ্বিগুণ থাকতো’। ঈদ বাজারের এবার ছেলেদের অন্যতম পছন্দের তালিকায় রয়েছে জার্সি। বিশ্বকাপ ফুটবলের অন্যতম দুটি দল ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার জার্সি ঈদ বাজারে ক্রেতা চাহিদার শীর্ষে অবস্থান করছে। ব্র্যান্ডের দোকান গুলোতে সাড়ে পাঁচশ থেকে বারশ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তা ফুটপাতে বিক্রি হচ্ছে তিনশ থেকে চারশ টাকায়। শেষ মুহুর্তে জুতার দোকান গুলোতে উপচে পড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে। ছেলেদের পাঞ্জাবির সঙ্গে মিলিয়ে স্যান্ডেল সু আর মেয়েদের উচু হিল ও ফ্ল্যাট জুতার বিক্রি ভালো। জুতা বিক্রেতা জুয়েল মিয়া বলেন, ‘মেয়েদের ও শিশুদের জুতা তুলনা মুলক ভাবে বেশি বিক্রি করছি। প্রচন্ড গরমের উত্তাপে ক্রেতারা অস্বস্তি বোধ করছেন’। ফ্যাশন ওয়াল্ডের এক ক্রেতা স্বপ্না আক্তার বলেন, ‘লম্বা ঘেরের জামার সঙ্গে মিলিয়ে এবার বুটের আদলে পা ঢাকা উচু হিল জুতা কিনেছি’ এদিকে ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফিরছেন হাজারো চাকুরীজীবি ও শ্রমজীবি মানুষ। তারা কর্মস্থল থেকে ফিরে স্থানীয় বাজারে ঈদ শপিং করছেন। কথা হয় এমনি এক ক্রেতার সঙ্গে। হাসানুর রহমান মাসুম তিনি ঢাকায় একটি কোম্পানিতে চাকুরী করেন। তিনি আজকালের খবর কে বলেন, ‘ কোম্পানি অগ্রিম ছুটি দিলেও সেখানে মার্কেট করাটাও ছিলো বড় ঝামেলার। তাই বাড়ি ফিরে শপিং এ এসেছি। বাবা-মা ও বোনের জন্য শাড়ী,পাঞ্জাবী, জুতা কিনেছি। আরো অনেক বাজার করব। তবে ঢাকার তোলনায় এখানে একটু স্বস্তি পাচ্ছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here