গ্রেপ্তারকৃতদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

0
440

খবর ৭১ঃ রাজধানীর বাড্ডায় তুরাগ পরিবহনের বাসে বেসরকারি উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় গ্রেপ্তার বাসের চালক, হেলপার ও কন্ডাক্টরের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে বেসরকারি উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধন থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষ থেকে সরকার ও বিচার বিভাগের প্রতি ৯ দাবি উত্থাপন করেন শিক্ষার্থীরা।শিক্ষার্থীরা বলেন, ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় জড়িত বাসচালক, হেলপার ও কন্ডাক্টরকে শুধু গ্রেপ্তার করলেই হবে না। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে যাতে করে আর কোনো ছাত্রীর সঙ্গে নিপীড়নমূলক আচরণ করার সাহস কেউ না পায়।

মানববন্ধন থেকে উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের পক্ষে পারভেজ হোসেন বলেন, গত ২১শে এপ্রিল উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়েরর সিএসই বিভাগের ছাত্রীকে বাসে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করেছি। আমাদের আন্দোলনে পুলিশ ও উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। পুলিশ ভাল সহযোগিতা করেছে।

পারভেজ বলেন, আমাদের দাবি ছিল বাসে যৌন হয়রানির সঙ্গে জড়িত তুরাগ পরিবহনের বাসচালক, হেলপার ও কন্ডাক্টরকে দ্রুত খুঁজে বের করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা এবং শাস্তি নিশ্চিত করা। অপরাধীরা গ্রেফতার হওয়ায় আমরা সন্তুষ্ট। তবে শাস্তি নিশ্চিত হওয়া এখন জরুরি।

শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত ৯ দফা দাবিসমূহ হচ্ছে:
১. চলন্তবাসে ছাত্রী নির্যাতন ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় গ্রেপ্তার তিন অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা ২. দ্রুত বিচারের স্বার্থে দায়ের করা মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে প্রেরণ ৩. এ ধরনের ঘটনায় কোনো আইনজীবী যেন অপরাধীদের না লড়েন সেজন্য আইনি সহায়তা বন্ধ করা ৪. শুধু আইন করলেই হবে না, নিপীড়ন বন্ধে আইন অনুযায়ী সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নজরদারি বাড়ানো ৫. পরিবহনে চালক, হেলপার ও কন্ডাক্টর নিয়োগের পর তাদের পরিচয়পত্র ও অঙ্গিকারনামা মালিক সমিতি ও মালিকদের কাছে থাকতে হবে ৬. পরবর্তিতে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে তার দায় বাস মালিক সমিতিকে নিতে হবে ৭. মাদকের সাথে জড়িত কোনো মালিক, চালক, হেলপার, কর্মকর্তা কর্মকারী যেন পরিবহন সমিতির কোনো কাজে যুক্ত না থাকে সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সজাগ থাকতে হবে ৮. আদালতের প্রতি অনুরোধ অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। অপরাধীদের শাস্তি না হলে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। এবং ৯. শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সাংবাদিক সমাজকে নিপীড়ন বিরোধী ভুমিকায় লেখনির অনুরোধ।

উল্লেখ্য, ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী গত ২১শে দুপুরে উত্তরা ৬নং সেক্টরে উত্তরা ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে আসার জন্য বাড্ডা লিংক রোড এলাকা থেকে তুরাগ পরিবহনের একটি বাসে উঠেন। বাসে যাত্রী ছিল মাত্র ৭-৮ জন। এ সময় নাটকীয়ভাবে পরবর্তী স্টপেজগুলোতে বাস সামনে যাবে না বলে যাত্রীদেরকে নামাতে থাকে এবং নতুন কোনো যাত্রী উঠানো বন্ধ রাখে।
ওই ছাত্রী আশঙ্কা ও সন্দেহবশত বাস থেকে নামার চেষ্টা করলে বাসের হেলপার দরজা বন্ধ করে দেয়। কন্ডাক্টর তার হাত ধরে টানাটানি শুরু করে। বাসের কন্ডাক্টর ও হেলপারের সঙ্গে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে চলন্ত গাড়ি থেকে লাফিয়ে বেরিয়ে আসেন। এরপর অন্য বাসে চড়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফিরে কর্তৃপক্ষ ও সহপাঠীদের বিষয়টি জানান। পরবর্তীতে সহপাঠীরা ওই বাসটি আটক ও হেলপার কন্ডাক্টরকে আটকের দাবিতে রাস্তায় মানববন্ধন করে। এ সময় বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা তুরাগ পরিবহনের অর্ধশত বাস আটকে চাবি নিয়ে নেয়। পরে ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ভুক্তভোগী ছাত্রীর স্বামী বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ১০/৩০ ধারায় ওই মামলা করেন। মামলায় তুরাগ পরিবহনের ওই বাসের অজ্ঞাত চালক, হেলপারসহ তিনজনকে আসামি করা হয়। ওই মামলার পরদিনই সায়েদাবাদ থেকে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে গুলশান থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর তাদের আদালত রিমান্ডে পাঠিয়েছেন।
খবর ৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here