গ্রিসে ভয়াবহ দাবানলে নিহত ৫০

0
353

খবর ৭১ঃ গ্রিসের রাজধানী এথেন্সের বন ও গ্রামাঞ্চলে ভয়াবহ দাবানলের সৃষ্টি হয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরো ১৭০ জন। পুড়ে গেছে বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল ও বসত-বাড়ি। দাবানল নিয়ন্ত্রণে না আসার কারণে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেখানে দাবানল ক্রমেই ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে।
মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ এটি রাজধানীর চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে কর্তৃপক্ষ স্থানীয় অধিবাসী ও পর্যটকদের অবিলম্বে নিরাপদ জায়গায় সরে পড়ার নির্দেশ দিয়েছে । মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়ে আন্তর্জাতিক সাহায্য চেয়েছে দেশটির সরকার। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
খবরে বলা হয়, সোমবার এথেন্সের পশ্চিম উপকূলের কিনেতা অঞ্চলে প্রথমে আগুনের সূত্রপাত হয়। এটি এথেন্স শহর থেকে ৫৫ কিলোমিটার দূরে। পরে আগুন ক্রমেই বিধ্বংসী রূপ নিতে থাকে। মঙ্গলবার নাগাদ আগুন লোকালয়ে ছড়িয়ে পড়ে। সাহায্য সংস্থা রেড ক্রসের কর্মকর্তা ও সেখানকার ভাইস-মেয়র গির্জস কোকোলিস বলেন, মঙ্গলবার তারা উপকূলীয় রাফিনা অঞ্চল থেকে ২৬ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শী একজন সাংবাদিক জানান, মৃতদেহের অবস্থান দেখে ধারণা করা হচ্ছে, তারা আগুন থেকে বাচার জন্য সাগরে পৌঁছার চেষ্টা করছিলেন। এর আগে সোমবার দাবানলে ২৪ জনের নিহত হওয়ার খবর দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। গ্রিসের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, তারা ৫০ জনের নিহত হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত না। কেননা সব মৃতদেহ এখনো হাসপাতালে পৌঁছায় নি। তবে ফায়ার সার্ভিসের একজন কর্মকর্তা নিহতের সংখ্যা ৪৯ জন বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ১৫০ জনেরও বেশি মানুষ দাবানলের আগুনে দগ্ধ হয়েছে। এতে বিপুল সংখ্যক ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আতঙ্কিত হয়ে অনেক মানুষ ঘর বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন।
মঙ্গলবার সকাল নাগাদ এথেন্সের চারপাশের বনাঞ্চল ও লোকালয়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। সরকারের মুখপাত্র দিমিত্রিস তানাকোপুলাস বলেন, তারা স্থানীয় অধিবাসী ও পর্যটকদেরকে নিরাপদে সরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন। এছাড়া হতাহতদের উদ্ধারেও তৎপরতা চালানো হচ্ছে। এথেন্সের আকাশ কালো ধোয়ায় ঢেকে গেছে। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের সঙ্গে সব ধরণের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
অকস্মাৎ সৃষ্ট এই সঙ্কটে প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাস তার বিদেশ সফর বাতিল করেছেন। তিনি জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সব জরুরি বাহিনীকে কাজে লাগানো হয়েছে। এথেন্সে জারি করা হয়েছে জরুরি অবস্থা। সঙ্কট উত্তরণে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সাইপ্রাস ও স্পেন। এছাড়া প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন বিমান ব্যবহারের কথাও বলা হচ্ছে। মানববিহীন এসব বিমান দিয়ে দুর্যোগ পরিস্থিতির ওপর নজরদারি করা সহজ হবে। গ্রিসের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্যানোস স্কোরলেটিস বলেন, এখনো বিপুল সংখ্যক মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। তাদের উদ্ধারে তৎপরতা চালানো হচ্ছে। সেখানকার বেসামরিক নিরাপত্তা কর্মকর্তা লোয়ানা সুপ্রা দাবানলকে জাতীয় দুর্যোগ আখ্যা দিয়েছেন। তিনি এথেন্সের সকল অধিবাসীকে আগুন নির্বাপণে সহায়তা করার আহবান জানান।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, দাবানলের আগুন থেকে বাচতে স্থানীয় অধিবাসীরা দিগি¦দিক ছোটাছুটি করছেন। অ্যাটিকা অঞ্চলের কয়েকটি ভবন ও বসত-বাড়িত ভস্মীভূত হতে দেখা গেছে।
খবর ৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here